১৩ বছর বয়সী কিশোরীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে চৌহালী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফকির মো. জুয়েল রানাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ স্বাক্ষরিত চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করায় উপজেলা বিএনপির সুপারিশে জুয়েল রানাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু এতে অনুমোদন দিয়েছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকেও জানানো হয়েছে। গত রোববার একই কারণে তাঁকে শোকজ করা হয়।

 উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদ মোল্লা জানান, ফকির মোঃ জুয়েল রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা কমিটিকে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছিল।

চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান জানান, মামলা হওয়ার পর নির্যাতিত শিশুটিকে মঙ্গলবার শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে।  প্রতিবেদন পেতে সময় লাগবে।

 জানা যায়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে ১১ ডিসেম্বর রাতে উপজেলা সদরের চর সলিমাবাদ বাজার এলাকায় ডেকে নিয়ে বিএনপি নেতা জুয়েল রানা শিশুটিকে যৌন নিপীড়ন করেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স র জগঞ জ ব এনপ র স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আমার বাবাকে হত্যা করেছে আ.লীগ: ড. রেজা কিবরিয়া

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া দাবি করেছেন, তার বাবাকে আওয়ামী লীগ হত্যা করেছে।

সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া আলোচিত অর্থনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া বুধবার (৩ ডিসেম্বর) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার জালালসাপ গ্রামে নিজ বাড়িতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে দেওয়া বক্তব্যে এমন দাবি করেন। 

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনার দুই ব্যাংক লকার থেকে ৯ কেজি ৭০৭ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার

হাসিনাকে ফেরাতে আগের চিঠির উত্তর পাইনি, এবার পাব: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

শেখ হাসিনা তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করে রেজা কিবরিয়া একটা ঘটনার কথা তুলে ধরে বলেন, “একদিন শেখ হাসিনাকে একজন বলেছিল, রেজা কিবরিয়া তো এসব কথা বলেছেন। তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ওকে বলে দিও ওর বাপ যেভাবে মরেছে, ওকেও সেভাবে মরতে হবে।”

“আব্বার খুনিদের কাউকেউ এখনো ধরা হয়নি। আমার বিশ্বাস, তাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। তাদের অনেকে এখনো অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা জানে, আমি ক্ষমতায় গেলে বাবার হত্যার বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেব। এটা আমার দায়িত্ব। আর সেই কারণেই আমার জীবনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।”

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যায় না। সুষ্ঠু না হলে আমরা সেটি মেনে নেব না। ২০১৮ সালের মতো যদি কেউ কেন্দ্র দখল করে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা তার প্রতিবাদ করব।”

সম্প্রতি হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বিএনপিতে সদ্য যোগ দেওয়া ড. রেজা কিবরিয়া।

১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পর সেই আলোচনা আরো ঘনীভূত হয়। যোগদানের পর এই প্রথম তিনি নিজ এলাকায় গেলেন।

নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ আমলে তার ওপর হুমকি ছিল বলে দাবি করে রেজা কিবরিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে আমার ওপর থ্রেট ছিল। আপনারা আন্দাজ করতে পারেন কি না, আমি জানি না। আমার বাবাকে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ।”

শেখ হাসিনার দেওয়া হুমকি সম্পর্কে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার কেবিনেট মিটিংয়ে একজন বলল যে, আপা আপা রেজা এগুলো বলল আপনার সম্পর্কে। তখন শেষ হাসিনা বলেছে, ওকে বলো যে, ওর বাপ যেভাবে মরেছে, ও-ও সেভাবে মরবে। কথাটা আপনাকে বুঝতে হবে। এই যে থ্রেট, এটা কাল্পনিক না। আমার বাবা চারশটা স্প্নিটার নিয়ে রাস্তায় মারা গেছেন, এটা মনে রাখতে হবে আপনাদেরকে। যারা ভুলে যায়, তাদের আমি আজকে মনে করিয়ে দিলাম। এই থ্রেটটা আমার জন্য কাল্পনিক না, এটা একটা আসল থ্রেট।”

আওয়ামী লীগের আমলে নিপীড়নের বর্ণনা দিতে গিয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, “আমরা ছোট বাচ্চাটার বয়স ১ বছর। ওকে নিয়ে আমার ওয়াইফ এসেছে। আমি আননেসেসারি রিক্স (শুধু শুধু ঝুঁকি) নেওয়ার জন্য আসিনি। আগে যখন এসেছি, আমার সঙ্গে যারা দেখা করেছে, তাদেরই পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাই আমি চাইনি, আমি আসি, আর এভাবে পুলিশ লোকজনকে ধরে নিয়ে যাক।” 

বিএনপিতে যোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “যখন দেখলাম ১৫ বছর নির্যাতনের পরও দলটি টিকে আছে, তারা অন্য কোথাও যায়নি; তাদের সাহস কমেনি। এই দলে যাব না তো কোথায় যাব। তখন এই দলটির প্রতি আমার সম্মান বেড়ে গেছে।”
  
অর্থ-বিত্ত ও সম্মানে ভরা জীবন ছেড়ে দেশের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া প্রসঙ্গে রেজা কিবরিয়া জানান, ২০১৮-তে কম্বোডিয়াতে তিনি সেদেশের অর্থমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন। আফ্রিকাতেও এমন কাজ করেছেন। অক্সফোর্ড-কেমব্রিজে পড়িয়েছেন। অনেক টাকা বেতন পেতেন। সেসব ছেড়ে বাবার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য একটা সুযোগ খুঁছিলেন। সেই সুযোগটি তিনি পেয়েছেন, যে জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।

নির্বাচিত হলে অধিকাংশ সময় এলাকায় না কি ঢাকায় থাকবেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে রেজা কিবরিয়া বলেন, “ঢাকায় থাকলে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে এলাকায় বেশি কাজ করতে পারব। এলাকায় সবসময় অবস্থান করলে সেই সক্ষমতা কমে আসবে।”

মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মতিউর রহমান পেয়ারা, সহ-সভাপতি রায়েতউল্যাহ, সাধারণ সম্পাদক মজিদুর রহমান মজিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান অলি, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিদ দালুকদারসহ স্থানীয় নেতারা।

ঢাকা/মামুন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ