বাসায় ডেকে প্রেমিককে খুন, লাশ বস্তাবন্দী করে দুই দিন রাখেন খাটের নিচে
Published: 14th, December 2025 GMT
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার একটি পুকুরপাড় থেকে গত শুক্রবার বস্তাবন্দী এক অজ্ঞাতপরিচয় তরুণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তদন্তে জানা যায়, স্বামী-স্ত্রী মিলে ওই তরুণকে ফোন করে বাসায় ডেকে এনে হত্যা করেন। হত্যার পর তাঁর হাত-পা বেঁধে কাঁথায় মুড়িয়ে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে দুদিন খাটের নিচে রেখে দেন। এরপর একটি পুকুরপাড়ে লাশ ফেলে যান।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ফারজানা আক্তার মিথিলা (২৪) নরসিংদীর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।
নিহত তরুণের নাম নয়ন চন্দ্র মজুমদার (২৮)। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার উত্তর মগধরা গ্রামে। নয়ন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। পাশের ঘাগড়া গ্রামে নিজের সেলুনে কাজ করতেন তিনি।
গ্রেপ্তার ফারজানা আক্তার মিথিলা পলাশের ঘোড়াশাল পৌর এলাকার দক্ষিণ মিয়াপাড়া গ্রামের মৃত সোহেল মিয়ার মেয়ে। এ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তাঁর স্বামী ফয়সাল এখনো পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ফারজানা বলেন, নয়নের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে অন্যত্র বিয়ে হলেও নয়নের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ফারজানার প্রায়ই কলহ হতো। একপর্যায়ে স্বামী-স্ত্রী মিলে নয়নকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
নিহত নয়ন চন্দ্র মজুমদার.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তরুণ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মো. রাব্বি মিয়া (২০) নামের এক তরুণ আহত হওয়ার ঘটনায় ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে। গুলির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে আহত রাব্বির মা জোহরা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
গুলিবিদ্ধ রাব্বি উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের হেলাল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে রাব্বি পরিবারের সঙ্গে নবীনগর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিকাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। তিনি পেশায় একজন অ্যাম্বুলেন্সচালক।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নবীনগর উপজেলার টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. আতাউর রহমান (৪৮), জাহিদ মিয়া (১৯), জুবায়েদ মুন্সী (১৯), মো. আহসান উল্লাহ (৪৪) ও মো. জসিম উদ্দিন (৪৪)। তাঁরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খুরশিদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ নভেম্বর টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. সানি (২০) ও একই পাড়ার মো. জিসানের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও তর্ক হয়। একপর্যায়ে ঝগড়ার সময় সানি জিসানকে ছুরিকাঘাত করেন। এ ঘটনার জেরে উভয় পক্ষ সালিস ডাকে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে নবীনগর পৌর এলাকার কালীবাড়ি মোড়ের জমিদারবাড়ির মাঠে সানিসহ তাঁর লোকজন ও জিসানসহ তাঁর লোকজন সালিসে বসেন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত রাব্বি সানির পক্ষের সমর্থক। তবে সালিসের রায়ে সানি ও তাঁর লোকজন সম্মত হননি। সালিস ছেড়ে ওঠার সময় জিসানসহ তাঁর লোকজন সানির লোকজনের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে জিসান বন্দুক বের করে গুলি করেন। এতে রাব্বি গুলিবিদ্ধ হন এবং প্রতিপক্ষের হামলায় সানি আহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন রাব্বিকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, তরুণের বুকের বাঁ পাশের পাঁজরে গুলি লেগেছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গুলির ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।