সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় আহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামানের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। ইতিমধ্যে তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁর আহত হওয়ার খবর জেনেছেন। তাঁর মা দিলারা জামান অসুস্থ। তিনি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ছেলের আহত হওয়ার খবর তিনি টিভিতে দেখেছেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, খালেকুজ্জামানের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত খোন্দকার আক্তারুজ্জামান। মা দিলারা জামান একমাত্র মেয়ে শামীমা আক্তারের সঙ্গে কুষ্টিয়া শহরের গোসালা সড়কে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। খালেকুজ্জামানের স্ত্রী ও দুই সন্তান থাকেন বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে সুদানে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগ দেন খালেকুজ্জামান। বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার (সিও) ছিলেন। ১৯৯৯ সালে কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। কুষ্টিয়া শহরের ঈদগাহপাড়ায় তাঁদের বাড়ি। সেখানেই তাঁর শৈশব কেটেছে।

খালেকুজ্জামানের বড় বোন শামীমা আক্তার পারিবারিক কাজে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ড্রোন হামলায় তাঁর ভাইয়ের বাঁ হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তবে অবস্থা গুরুতর নয়। ঘটনার পরপরই হেলিকপ্টারে করে তাঁকে আবেই হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। পরিবারের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।

আজ রোববার বেলা তিনটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের গোসালা সড়কে শামীমা আক্তারের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ভবনের তিনতলায় মেয়ের বাসায় থাকেন মা দিলারা জামান। ভবনমালিকের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দিলারা জামান প্রথম আলোকে বলেন, ছেলে মিশনে যাওয়ার ১৮ দিন পর একটু কথা হয়েছিল। আম্মা বলে একটু ডেকেছিল। এরপর আর কথা হয়নি। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা প্রতিদিন খবর নেন। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সেখানে (সুদানে) নেট থাকে না। কারেন্ট থাকে না। ঘটনা (হামলা) সম্পর্কে কেউ কিছু আমাকে জানায়নি। আমি প্রেসারের রোগী। টিভিতে একটু দেখছি। কথাও বলতে পারছি না, কষ্ট হচ্ছে। ছেলের জন্য দোয়া করছি, যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আমার কাছে আসে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের তামাশা

মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায় পর্যন্ত পাকিস্তানিরা আশা করেছিল, চীন হয়তো তাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের চীন সফরে মধ্যস্থতা করে তাদের সেই আশা আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য ও শেষ পর্যন্ত প্রবল আশা ছিল, যা তারা প্রকাশ্যে দেখাচ্ছিল, তা হলো চীন শেষ পর্যন্ত তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবে। কিন্তু এটি ছিল একটি তামাশা। কারণ, চীনারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা সামরিকভাবে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না। সব ধরনের কূটনৈতিক সহায়তা দেবে।

রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে ‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান এই মন্তব্য করেন।

ডেইলি স্টার ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় ও ব্যক্তির অবদান তুলে ধরতে ‘ইতিহাস আড্ডা’ শীর্ষক ধারাবাহিক আলোচনার আয়োজন করেছে। এটি ছিল সপ্তম আয়োজন। কবি ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচক ছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ। অসুস্থতার কারণে আরেক আলোচক গবেষক–সাংবাদিক মঈদুল হাসান আসতে পারেননি।

চীনের তামাশা, যুক্তরাষ্ট্রের নাটক

অধ্যাপক রেহমান সোবহান মুক্তিযুদ্ধকালে তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, চীন পাকিস্তানের সঙ্গে যে তামাশা করছিল, সেই নাটক সাজিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। চীনকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, যেন তারা যুদ্ধে যোগ দেয়। চীন যখন যুদ্ধে আসছিল না, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠানোর হুমকি দেয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌবহরকে মার্কিন সপ্তম নৌবহরের গতিবিধি লক্ষ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। সপ্তম নৌবহর আর আসেনি। এর পরিণতিতেই নিয়াজির চূড়ান্ত আত্মসমর্পণ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান।

‘মুক্তিযুদ্ধের বৈশ্বিক ইতিহাস’ শীর্ষক ইতিহাস আড্ডায় অধ্যাপক রেহমান সোবহান। রোববার দ্য ডেইলি স্টার মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ