উত্তরবঙ্গে তেল বিপণন অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা
Published: 5th, February 2025 GMT
অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গে আজ বুধবার থেকে সব পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিনা নোটিশে বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প উচ্ছেদ করায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উত্তরবঙ্গ ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়নের বাঘাবাড়ী অফিসে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প ও ডিলার মালিক সমিতি, সিরাজগঞ্জ জেলা পেট্রোল পাম্প ও ডিলার মালিক সমিতি, বাঘাবাড়ী ঘাট পাম্প মালিক সমিতি ও উত্তরবঙ্গ ট্যাঙ্কলরি সমবায় সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকটি পেট্রোল পাম্প পরিদর্শনের পর অবৈধ ঘোষণা করে মাইকিং করে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফয়সালা করলেও, নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কয়েকটি পাম্প ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অথচ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছ থেকে বৈধভাবে লিজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছে সবাই। বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু কর্মকর্তা লিজের পরিবর্তে ওই জায়গা কিনে নিতে বলছে। তেল ব্যবসায়ীরা জায়গা কিনে নিতে রাজি হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জায়গা লিখে দেবেন না বলে জানান। এ নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে তারা স্বেচ্ছাচারীভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান। এই স্বেচ্ছাচারের প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরাঞ্চলে সব ধরনের তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নালা নির্মাণকাজে নানা অনিয়ম
সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় নালা নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। দরপত্রে উল্লিখিত নিয়মে কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে হাসমত এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ শুরু করে। সেই কাজে অনিয়ম ধরা পড়ে। এতে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে নির্মাণকাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য ফুট ওভারব্রিজ থেকে শুরু করে শহীদ মজনু পার্ক পর্যন্ত নালা ও গুরুত্বপূর্ণ চারটি স্থানে আরসিসি ঢালাইয়ের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। পরে হাসমত এন্ড ব্রাদার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় কার্যাদেশ পায়। ২০ দিন আগে তারা নির্মাণকাজ শুরু করে। নির্মাণকাজের শুরু থেকে এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজে অনিয়ম করে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কার্যাদেশ মেনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ করছে না। নালার মাটি সরিয়ে তারা বিক্রি করে দিয়েছে। নালার দু’পাশের দেয়াল ঢালাইয়ের পর ফাঁকা অংশে নালা থেকে তোলা মাটি ব্যবহার করে ভরাট করার কথা থাকলেও তা না করে পাশের খাল থেকে পলিথিন মিশ্রিত কাদা মাটি এনে ভরাট করা হচ্ছে। নালা নির্মাণকাজে ৬ ইঞ্চি স্লাব ও ঢালাই দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৫ ইঞ্চি। ১২ মিলিমিটার রডের স্থলে ব্যবহার হচ্ছে ১০ মিলিমিটার রড। নালার সলিংয়ে তিন ইঞ্চি সিসি ঢালাই না দিয়ে দেওয়া হয়েছে মাত্র এক ইঞ্চি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ মেনে যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে কাজ করছে না। ৭-৮টি গ্রামে পানি নিষ্কাশনের জন্য এ নালা ব্যবহার করা হবে। নিম্নমানের কাজ করা হলে অল্প সময়ের মধ্যে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঠিক নজরদারি থাকলে অনিয়ম হতো না।
হাবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান রিটন বলেন, নালা ঢালাইয়ে কিউরিং না করেই আবর্জনা দিয়ে ঢালাইয়ের ফাঁকা স্থান ভরাট করা হচ্ছে। অনিয়ম বন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
বাড়ি মজলিস গ্রামের আশরাফুল আলম বলেন, নির্মাণকাজে অনিয়ম থাকলে নালাটি বেশিদিন স্থায়ী হবে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম রোধে প্রশাসনের নজরদারি দরকার বলে মন্তব্য তাঁর।
হাসমত এন্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী হাসমত আলী হাসু অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কার্যাদেশ মেনে নালার নির্মাণকাজ করছেন। নির্মাণকাজে অনিয়ম হচ্ছে না। কার্যাদেশে ঢালাইয়ের ফাঁকা অংশে বালুর ব্যবহারের উল্লেখ নেই।
সোনারগাঁর ইউএনও ফারজানা রহমানের মোবাইল ফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আল রাজী নিলয় বলেন, ঠিকাদারি কাজে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। কার্যাদেশ মেনেই কাজ করতে হবে। অনিয়মের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।