স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

দেশে কারো কোনো নিরাপত্তার শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ফয়সালকে যদি কেউ ধরিয়ে দিতে পারে, তার জন্য সরকার ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।”

উপদেষ্টা বলেন, “এতদিন শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরই হাতিয়ার দেওয়া হতো। এখন যারা নির্বাচনে অংশ নেবে, তারা যদি হাতিয়ার চায় তাদেরকেও আমরা হাতিয়ারের লাইসেন্স দেব। নির্বাচনে অংশ নেওয়া কারো হাতিয়ার বা ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র যদি আমাদের কাছে জমা থাকে সেগুলো আমরা তাদের কাছে ফেরত দেব।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,“জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ছোট একটা কমিটি করে দিয়েছি। ওই কমিটি এসেস (মূল্যায়ন) করে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে।”

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “তারেক রহমানের নিরাপত্তার ব্যাপারে কোনো শঙ্কা নেই। তার নিরাপত্তার ব্যাপারে যত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার আছে, আমরা নেব এবং তার নিরাপত্তা আমরা দেব।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে এবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা ও হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাত থেকে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ ও কর্মসূচি চলছে।

যবিপ্রবিতে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের আবাসিক হল ও প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে দোয়া ও সম্মিলিত মুনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘হাদির ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘ছাত্রলীগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’সহ নানা স্লোগান দেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী সামিউল আলিম সামি বলেন, “হাদির ওপর হামলা পরিকল্পিত এবং তার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার চেষ্টা।” দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মাহফুজ রাসেল বলেন, “এই হামলা শুধু হাদির ওপর নয়, বরং পুরো জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের ওপর আঘাত।”

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়েও একই দিন রাতে মূল ফটকে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে ইনকিলাব মঞ্চ কুবি শাখার আহ্বায়ক হান্নান রহিম বলেন, “জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের টার্গেট করেই এই হামলা চালানো হয়েছে।” আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বহিষ্কার দাবি করেন। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা রাতের বেলা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তারা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্বজিৎ চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘তুমি কে? আমি কে? ওসমান হাদি’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, “মতাদর্শ ভিন্ন হলেও এই হামলার বিরুদ্ধে সবাই এক।” প্রাণীবিদ্যা বিভাগের জান্নাতুল উর্মি তারিন বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠনের দাবি জানান। অন্য শিক্ষার্থীরা দেশের স্থিতিশীলতা ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

এছাড়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব এক বিবৃতিতে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, এই হামলা একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ, যার উদ্দেশ্য জুলাই আন্দোলনের চেতনা নস্যাৎ করা, নির্বাচনী পরিবেশ অস্থির করা এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ দ্রুত হামলাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয় নগর এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান বিন হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঢাকা/ইমদাদুল/এমদাদুল/লিমন/জান্নাত

সম্পর্কিত নিবন্ধ