নির্বাচনের আগে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছে না বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এটি বৃহৎ এক চক্রান্তের ক্ষুদ্র অংশ।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস। চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর এবং ঢাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল নির্বাচন কমিশন ঘোষণার পরদিন শনিবার ঢাকার সড়কে প্রকাশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে প্রচার চালাচ্ছিলেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর আগে গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে গণসংযোগের সময় গুলি করা হয় চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহকে।

প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর আগে চট্টগ্রামে এরশাদ উল্লাহর ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল। এবার হাদির ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এটা বৃহৎ চক্রান্তের ক্ষুদ্র একটি অংশ। সামনে আরও চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র প্রকাশ পাবে।

ওসমান হাদিকে গুলি করার মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানা হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে। এই অপশক্তির কালো হাত ভেঙে দিতে হবে। তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। যাঁরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন, তাঁরা সাবধান হয়ে যান।

সন্তানের বয়সী একজন ছেলেকে মির্জা আব্বাস আঘাত করবেন, এটা অকল্পনীয়। তিনি হঠাৎ করে রাজনীতিবিদ হননি। তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ৫০ বছরের। হাদির ওপর হামলা এটা সুপরিকল্পিত। এই ঘটনায় যাকে শনাক্ত করা হয়েছে, সে ছাত্রলীগের নেতা। একই সঙ্গে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমের সঙ্গে একই টেবিলে বসে চা খাচ্ছেরুহুল কবির রিজভী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব, বিএনপি

হাদির ওপর গুলির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, সোয়া দুইটায় হাদির ওপরে গুলি চালানো হয়। আড়াইটার সময় ফেসবুকে একটি পোস্ট আসে। সেখানে যে যেখানে আছে, ঐক্যবদ্ধ হতে বলা হয়। এটা ছিল পরিকল্পিত।

ওসমান হাদি যে আসনে প্রার্থী হতে চাইছেন, সেই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস। গতকাল গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন মির্জা আব্বাস। তাঁর উদ্দেশে আক্রমণাত্মক স্লোগান দেওয়া হয়েছিল।

সেই প্রসঙ্গ তুলে সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি ভাই ঢাকার ছেলে। আমি ঢাকার রাজপথে মিছিল করে বড় হয়েছি। আমি ঢাকার রাজপথে আন্দোলন করে বড় হয়েছি। আমার বয়সটা একটু বেশি হয়ে গেছে। শান্ত থেকেছি, নীরব থেকেছি। কিন্তু ওই মুহূর্তে যদি আমার নির্দেশনা পেত, তাহলে তোমাদের তুলাধোনা করতে আমাদের ছেলেরা দেরি করত না।’

যারা আক্রমণাত্মক স্লোগান দিয়েছিল, তাদের কেউ ওসমান হাদির সমর্থক নয় দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, এরা বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা ছিল। যারা সেখানে মব সৃষ্টি করেছিল, তারা চেয়েছিল হাদি ওখানেই মারা যাক।

ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ শনিবার ঢাকার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশ.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হ দ র ওপর ওসম ন হ দ র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

রেকর্ড রান তাড়া করে দুর্দান্ত জয়ে এশিয়া কাপের মিশন শুরু বাংলাদেশের

‘চ‌্যাম্পিয়নরা চ‌্যাম্পিয়নদের মতোই খেলল’ - বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়ের পর এমন কথা নিশ্চিতভাবেই বলাবলি হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টে রেকর্ড রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ। 

মহাদেশীয় কিংবা বৈশ্বিক কোনো প্রতিযোগিতায় ২৮৪ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ছিল না বাংলাদেশের। শনিবার দুবাইয়ে আফগানিস্তান যুবাদের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ‌্য বাংলাদেশ জিতে যায় ৩ উইকেটে, ৭ বল হাতে রেখে। 

টস জিতে আগে ব‌্যাটিং করতে নেমে আফগানিস্তান ৭ উইকেটে ২৮৩ রান করে। দলের টপ অর্ডার ব‌্যাটসম‌্যান ফয়সাল শিনোজাদার সেঞ্চুরিতে বিশাল পুঁজি পায় আফগান যুবারা। লক্ষ‌্য তাড়া করতে নেমে জাওয়াদ আবরার ও রিফাত বেগের ১৫১ রানের জুটি বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়। সেঞ্চুরির পথে ছিলেন জাওয়াদ। কিন্তু ৪ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় তাকে। ৯৬ রানে সীমানায় দারুণ এক ক‌্যাচে কাটা পড়ে তার উইকেট। 

এছাড়া রিফাত বেগ ৬২ রান করেন। দুজনের পর অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের ৪৭ রানের ইনিংসে বাংলাদেশকে লক্ষ‌্যের পথে এগিয়ে যায়। মনে হচ্ছিল সহজ জয় পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু জয়ের ঠিক আগ মুহূর্তে ২০ রানে ৩ উইকেট হারায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সেখান থেকে রিজানের অপরাজিত ১৭ ও পারভেজ হোসেনের ১৩ রানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। 

লক্ষ‌্য তাড়ায় বাংলাদেশ ৩০৭ রান করেও ম‌্যাচ জিতেছে। ইংল‌্যান্ডের বিপক্ষে, ২০২৩ সালে। সেটা ছিল দ্বিপাক্ষিক সিরিজে। এবার মহাদেশীয় আসরে রেকর্ড রান তাড়া করে জিতল যুবারা। ম‌্যাচ জয়ের নায়ক আবরার ৯ চার ও ৬ ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। 

এর আগে ব‌্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। ওপেনার খালিদ আহমেদজাই চতুর্থ ওভারে উইকেটের পেছনে ৩ রানে ক‌্যাচ দেন। সেখান থেকে দ্বিতীয় উইকেটে উসমান সাদাত ও ফয়সাল শিনোজাদা ৬৬ রানের জুটি গড়েন। ওপেনার উসমান ৩৪ রানে ফিরে আসলেও ফয়সালের ব‌্যাট চলতে থাকে। 

উইকেটের চারিপাশে শট খেলতে থাকেন অনায়েসে। তৃতীয় উইকেটে আবার বড় জুটি পায় আফগানিস্তান। ফয়সালের নতুন সঙ্গী এবার উজায়রুল্লাহ নিয়াজাই। দুজন দলকে টেনে নেন ১৭৫ রান পর্যন্ত। ফয়সাল তুলে নেন সেঞ্চুরি। ৫৯ বলে ফিফটি ছোঁয়া এই ব‌্যাটসম‌্যান শতরান পেয়েছেন ৯১ বলে। এরপর অবশ‌্য ইনিংসটি বড় করতে পারেননি তিনি। ৯৪ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ১০৩ রান করে ইকবাল হোসেন ইমনের বলে আউট হন। 

তার সঙ্গী উজায়রুল্লাহ ৬ রানের আক্ষেপে পুড়েন। ৪৪ রানে থামে তার ইনিংস। সেখান থেকে আফগানিস্তানের ইনিংস বড় করেন আজিজুল্লাহ মিখাইল ও আব্দুল আজিজ। আজিজুল্লাহ ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩৬ বলে ৩৮ এবং আব্দুল ১৬ বলে ৩ ছক্কায় ২৬ রান করেন। 

বাংলাদেশের বোলারদের মধ‌্যে ইকবাল হোসেন  ৬৩ রানে ও শাহরিয়ার আহমেদ ৪৩ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন সাদ ইসলাম, সাইমুন বশির ও রিজান হোসেন।

এশিয়া কাপের হ‌্যাটট্রিক মিশনে বাংলাদেশ। ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পরের ম‌্যাচ নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ