মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই কম্বোডিয়ায় হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। শনিবার তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল ফেসবুকে এক পোস্টে বলেছেন, “আমাদের ভূমি এবং জনগণের জন্য আর কোনো ক্ষতি বন্ধ ও হুমকি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সামরিক পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।”

অক্টোবরে দীর্ঘস্থায়ী সীমান্ত বিরোধে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী ট্রাম্প শুক্রবার আনুতিন এবং কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেটের সাথে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সব পক্ষ ‘গুলি বন্ধ করতে’ সম্মত হয়েছে। 

ট্রাম্পের সাথে ফোনালাপের পর দুই প্রতিবেশী দেশের কোনো নেতাই বিবৃতিতে কোনো চুক্তির কথা উল্লেখ করেননি। থাই প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনো যুদ্ধবিরতি হয়নি।

আনুতিন বলেছেন, “আমি এটা স্পষ্ট করে বলতে চাই। আজ সকালে আমাদের পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই কথা বলেছে।”

থাইল্যান্ডের অব্যাহত লড়াইয়ের বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধের তাৎক্ষণিকভাবে হোয়াইট হাউস সাড়া দেয়নি।

শনিবার ফেসবুকে এক বিবৃতিতে হুন মানেট জানিয়েছেন, অক্টোবরের চুক্তি অনুসারে বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কম্বোডিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ব ড

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার সত্য উন্মোচনে ফরেনসিক বিজ্ঞানের প্রয়োগ নিয়ে গবেষণা করছেন নিগার

স্নাতকে আমার থিসিসের বিষয় ছিল ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা’। ২০২২ সালে এ কাজের জন্য যখন জেনোসাইড বা গণহত্যা নিয়ে পড়াশোনা করছিলাম, তখন বারবার মনে হচ্ছিল আমরা নিজেরাও তো ভুক্তভোগী জাতি। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে দেশে একাডেমিক কাজ এখনো অনেক সীমিত। আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা এই গণহত্যার স্বীকৃতি পাইনি। 

তখন জানার চেষ্টা করলাম দেশে কীভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন চর্চা হচ্ছে, কোন প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে গবেষণা করছে। সেই খোঁজ করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের রিসার্চ সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব জেনোসাইড অ্যান্ড জাস্টিসের সন্ধান পাই। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে স্নাতক করে তিন বছর আগে এই সেন্টারে যুক্ত হই। এরপর বিভিন্ন দেশের গণহত্যা নিয়ে গবেষণা করছি। 

শুরুতে বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার গণহত্যা নিয়ে কাজ করেছি। এখন গবেষণার পরিসর আরও বিস্তৃত হয়েছে। আমি রুয়ান্ডা ও বাংলাদেশের গণহত্যার একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের গণহত্যায় ফরেনসিক অ্যানথ্রোপলজি (নৃবিজ্ঞান) ও ফরেনসিক আর্কিওলজি (প্রত্নতত্ত্ব) কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা করছি। এগুলো ফরেনসিক বিজ্ঞানের বিষয়। ফরেনসিক বিজ্ঞান গণহত্যার সত্য উন্মোচনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে হত্যার স্থান শনাক্তকরণ, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া দেহাবশেষ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়। 

বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে ফরেনসিক বিজ্ঞানের কাজ খুবই সীমিত। স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পার করে এসে আমরা কি এখনো এ বিষয়ে কাজ করতে পারি? কীভাবে করতে পারি? এটাই আমার বর্তমান গবেষণার বিষয়। 

আমার গবেষণার কাজে বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছি। সম্প্রতি রুয়ান্ডা ঘুরে এসেছি। ১৯৯৪ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ১০০ দিনের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছিল রুয়ান্ডার প্রায় আট লাখ নাগরিক। এই গণহত্যা নিয়ে দেশটিতে অনেক কাজ হয়েছে। আমি গিয়েছিলাম গুয়াতেমালার গ্লোবাল ফরেনসিক একাডেমির কর্মশালায় নির্বাচিত হয়ে। এতে ১৫টি দেশ থেকে ২৯ জন গবেষক অংশ নেন। কর্মশালাটি ছিল সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক-ফরেনসিক আর্কিওলজি, ফরেনসিক অ্যানথ্রোপলজি, গণহত্যাস্থলে খনন, চিহ্নিতকরণ। এসব প্রক্রিয়া আমি সেখানে হাতে-কলমে শিখেছি। 

রুয়ান্ডা সফরে আমাকে সবচেয়ে যে বিষয়টি স্পর্শ করেছে, তা হচ্ছে গণহত্যার সুশৃঙ্খল ডকুমেন্টেশন। তাদের স্মৃতিস্তম্ভ, জাদুঘর, বধ্যভূমি অত্যন্ত যত্নে সংরক্ষিত। ছোটবেলা থেকেই রুয়ান্ডার মানুষেরা এসব জায়গা পরিদর্শন করে এবং নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পায়। 

তাবাসসুম নিগার পরিবার থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছেন সমাজ-মানবতার বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ