অস্ট্রিয়া সরকার ১৪ বছরের কম বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য হিজাব বা স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ সিদ্ধান্তের পর দেশটিতে ইসলামবিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে। নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা।

সরকারের দাবি, নতুন এ আইন নারী–পুরুষের সমতার প্রতি তাদের ‘স্পষ্ট অঙ্গীকার’। তবে এর আগে ২০২০ সালে একই ধরনের একটি আইন মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক বলে অস্ট্রিয়ার সাংবিধানিক আদালত বাতিল করে দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনমুসলিম নারীদের পোশাকেই কেন সরকারি নিয়ন্ত্রণ০৬ অক্টোবর ২০২৩

নতুন আইনটি সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আইন ভেঙে মাথা ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এ মুসলিম পোশাক পরলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে এবং প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ৮০০ ইউরো (প্রায় ৯৪০ ডলার) জরিমানা করা হতে পারে।

ক্ষমতাসীন জোটের শরিক উদারপন্থী নিওস দলের সংসদীয় নেতা ইয়ানিক শেটি দাবি করেন, এ আইন কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। তাঁর ভাষায়, ‘এটি এ দেশের মেয়েদের স্বাধীনতা রক্ষার একটি ব্যবস্থা।’

নতুন আইনটি সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আইন ভেঙে মাথা ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এ মুসলিম পোশাক পরলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে এবং প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ৮০০ ইউরো (প্রায় ৯৪০ ডলার) জরিমানা করা হতে পারে।

শেটি আরও বলেন, এ নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রায় ১২ হাজার শিশু প্রভাবিত হবে। তাঁর দাবি, হিজাব মেয়েদের “যৌনভাবে’ উপস্থাপন করে।

এর আগে ২০১৮ সালে অস্ট্রিয়া সরকার সরকারি স্কুলে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য হিজাব নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু ২০২০ সালে সেই আইন বাতিল করে দেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত।

এ আইন কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। এটি এ দেশের ‘মেয়েদের স্বাধীনতা রক্ষার’ একটি ব্যবস্থা।ইয়ানিক শেটি, অস্ট্রিয়ার ক্ষমতাসীন জোটের শরিক নিওস দলের সংসদীয় নেতা

নতুন এই নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনটি এ আইনকে ইসলামবিদ্বেষী ও মুসলিমবিরোধী বর্ণবাদের প্রকাশ বলে আখ্যা দিয়েছে।

নতুন এই নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনটি এ আইনকে ইসলামবিদ্বেষী ও মুসলিমবিরোধী বর্ণবাদের প্রকাশ বলে আখ্যা দিয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, নতুন আইনটি মুসলিম মেয়েদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বৈষম্য তৈরি করে এবং এটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান পূর্বধারণা ও নেতিবাচক ধারণা আরও উসকে দিতে পারে।

অস্ট্রিয়ায় মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ইসলামিক রিলিজিয়াস কমিউনিটি ইন অস্ট্রিয়া (আইজিজিওই)–ও নতুন এ আইনের নিন্দা জানিয়েছে।

নতুন আইনটি মুসলিম মেয়েদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বৈষম্য তৈরি করে এবং এটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান পূর্বধারণা ও নেতিবাচক ধারণা আরও উসকে দিতে পারে।

আইজিজিওইর সভাপতি উমিত ভুরাল বলেন, ‘রাষ্ট্রস্বীকৃত একটি ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসেবে আমাদের সদস্যদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। তাই ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে, এমন যেকোনো আইন সাংবিধানিক কি না, তা পর্যালোচনা করানোর ক্ষেত্রে আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’

উমিত ভুরাল আরও বলেন, ‘শিশুদের প্রয়োজন সুরক্ষা, শিক্ষা ও সচেতনতা—প্রতীকী রাজনীতি নয়। আমরা জবরদস্তি প্রত্যাখ্যান করি। আমরা স্বাধীনতা রক্ষা করি।’

আরও পড়ুনবোরকা, হিজাবে ছাত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা নয়: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট০৯ আগস্ট ২০২৪আরও পড়ুনকর্ণাটকের স্কুল থেকে হিজাব নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে২২ ডিসেম্বর ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল মব দ ব ষ স ব ধ নত নত ন এ সরক র ইসল ম এ আইন

এছাড়াও পড়ুন:

১৪ বছরের কম বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করল অস্ট্রিয়া, ইসলামবিদ্বেষের অভিযোগ

অস্ট্রিয়া সরকার ১৪ বছরের কম বয়সী স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য হিজাব বা স্কার্ফ পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ সিদ্ধান্তের পর দেশটিতে ইসলামবিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে। নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা।

সরকারের দাবি, নতুন এ আইন নারী–পুরুষের সমতার প্রতি তাদের ‘স্পষ্ট অঙ্গীকার’। তবে এর আগে ২০২০ সালে একই ধরনের একটি আইন মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক বলে অস্ট্রিয়ার সাংবিধানিক আদালত বাতিল করে দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনমুসলিম নারীদের পোশাকেই কেন সরকারি নিয়ন্ত্রণ০৬ অক্টোবর ২০২৩

নতুন আইনটি সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আইন ভেঙে মাথা ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এ মুসলিম পোশাক পরলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে এবং প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ৮০০ ইউরো (প্রায় ৯৪০ ডলার) জরিমানা করা হতে পারে।

ক্ষমতাসীন জোটের শরিক উদারপন্থী নিওস দলের সংসদীয় নেতা ইয়ানিক শেটি দাবি করেন, এ আইন কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। তাঁর ভাষায়, ‘এটি এ দেশের মেয়েদের স্বাধীনতা রক্ষার একটি ব্যবস্থা।’

নতুন আইনটি সরকারি ও বেসরকারি উভয় ধরনের স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আইন ভেঙে মাথা ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এ মুসলিম পোশাক পরলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে এবং প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ৮০০ ইউরো (প্রায় ৯৪০ ডলার) জরিমানা করা হতে পারে।

শেটি আরও বলেন, এ নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রায় ১২ হাজার শিশু প্রভাবিত হবে। তাঁর দাবি, হিজাব মেয়েদের “যৌনভাবে’ উপস্থাপন করে।

এর আগে ২০১৮ সালে অস্ট্রিয়া সরকার সরকারি স্কুলে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য হিজাব নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু ২০২০ সালে সেই আইন বাতিল করে দেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত।

এ আইন কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। এটি এ দেশের ‘মেয়েদের স্বাধীনতা রক্ষার’ একটি ব্যবস্থা।ইয়ানিক শেটি, অস্ট্রিয়ার ক্ষমতাসীন জোটের শরিক নিওস দলের সংসদীয় নেতা

নতুন এই নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনটি এ আইনকে ইসলামবিদ্বেষী ও মুসলিমবিরোধী বর্ণবাদের প্রকাশ বলে আখ্যা দিয়েছে।

নতুন এই নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠনটি এ আইনকে ইসলামবিদ্বেষী ও মুসলিমবিরোধী বর্ণবাদের প্রকাশ বলে আখ্যা দিয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, নতুন আইনটি মুসলিম মেয়েদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বৈষম্য তৈরি করে এবং এটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান পূর্বধারণা ও নেতিবাচক ধারণা আরও উসকে দিতে পারে।

অস্ট্রিয়ায় মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ইসলামিক রিলিজিয়াস কমিউনিটি ইন অস্ট্রিয়া (আইজিজিওই)–ও নতুন এ আইনের নিন্দা জানিয়েছে।

নতুন আইনটি মুসলিম মেয়েদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বৈষম্য তৈরি করে এবং এটি মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান পূর্বধারণা ও নেতিবাচক ধারণা আরও উসকে দিতে পারে।

আইজিজিওইর সভাপতি উমিত ভুরাল বলেন, ‘রাষ্ট্রস্বীকৃত একটি ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসেবে আমাদের সদস্যদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। তাই ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করে, এমন যেকোনো আইন সাংবিধানিক কি না, তা পর্যালোচনা করানোর ক্ষেত্রে আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’

উমিত ভুরাল আরও বলেন, ‘শিশুদের প্রয়োজন সুরক্ষা, শিক্ষা ও সচেতনতা—প্রতীকী রাজনীতি নয়। আমরা জবরদস্তি প্রত্যাখ্যান করি। আমরা স্বাধীনতা রক্ষা করি।’

আরও পড়ুনবোরকা, হিজাবে ছাত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা নয়: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট০৯ আগস্ট ২০২৪আরও পড়ুনকর্ণাটকের স্কুল থেকে হিজাব নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে২২ ডিসেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ