সর্বশেষ সংস্করণের সব কম্পিউটার, ল্যাপটপ, আর অন্যান্য যন্ত্রসহ নিত্যনতুন অনুমোদিত প্রযুক্তিপণ্য প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে আয়োজিত রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে ‘সিটিআইটি মেগা ফেয়ার ২০২৫’ আজ শনিবার শেষ হচ্ছে। মেলায় গতকাল শুক্রবার শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজন করা হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। ৮ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল এই মেলা।

মেলার কারণে সাধারণ সময়ের তুলনায় ল্যাপটপ, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিপণ্যের বিক্রি বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কম্পিউটার সিটির বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের বিক্রেতারা। তাঁরা বলেন, এবার ল্যাপটপ তুলনামূলক বেশি বিক্রি হয়েছে কম্পিউটারের তুলনায়। তার অন্যতম কারণ র‍্যাম ও এসএসডির দাম বৃদ্ধি। ছোট প্রতিষ্ঠানের বিক্রেতারা বলেন, ‘আমরা আশানুরূপ বিক্রি করতে পারিনি এবং মেলা উপলক্ষে যে পরিমাণ ক্রেতাসমাগম হবে মনে করেছিলাম তাও হয়নি।’ তা ছাড়া শুক্রবারে মেট্রোরেল বন্ধ ছিল এবং ঢাকায় একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। সে জন্য শুক্রবারেও মেলায় ক্রেতাসমাগম কম হয়েছে। আজ শনিবার মেলার শেষ দিন হওয়ায় ক্রেতাসমাগম ও বিক্রির পরিমাণ বাড়বে বলে আশা করছেন তাঁরা।

বিসিএস কম্পিউটার সিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মসিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আমাদের মেলার যে লক্ষ্য ছিল তা সম্পন্ন পূরণ করতে পারিনি, কিন্তু আমরা সফল মনে করছি এই মেলাকে। কারণ, ক্রেতাসমাগম ও বিক্রি বেড়েছে মেলার সময়। আমরা শুক্রবারে আরও বেশি ক্রেতাসমাগম ও বিক্রি আশা করেছিলাম। কিন্তু কাল মেট্রোরেল বন্ধ থাকার কারণে ক্রেতাসমাগম কম হয়েছে, সেই সঙ্গে বিক্রিও কম হয়েছে। যেহেতু বিশ্বব্যাপী সব পণ্যের দাম বেড়েছে, সেটিও একটি কারণ বিক্রি কিছুটা কম হওয়ার পেছনে।’

মেলায় আগত ক্রেতা কলেজ শিক্ষার্থী কাজী ওয়াসি উদ্দিন বলেন, ‘আরও এক মাস পর ল্যাপটপ কেনার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু জানতে পারলাম এখানে মেলা হচ্ছে, তাই এখন কিনেছি এবং মোটামুটি কম দামে ল্যাপটপ কিনতে পেরে আমি খুশি।’ আরেকজন ক্রেতা মুন বলেন, ‘আমি জানতাম না মেলা হচ্ছে, এসে জানি মেলার কথা এবং মেলা উপলক্ষে বিক্রেতারা অনলাইনে যে দাম দিয়েছে তার থেকে কম রাখছে। তা ছাড়া বিভিন্ন রকমের উপহার দিচ্ছে এবং লটারির কুপন দিচ্ছে, সবকিছু মিলিয়ে ভালোই লাগছে আমার।’

বিসিএস কম্পিউটার সিটির মেলায় গতকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের সঙ্গে অতিথিরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক রব র ল য পটপ

এছাড়াও পড়ুন:

২২টি যুদ্ধের পর শত্রুমুক্ত হয় কুষ্টিয়া

আজ ১১ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া মুক্তদিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম, ২২টি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ আর অসংখ্য নীরব ত্যাগের মধ্যদিয়ে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের কুষ্টিয়া থেকে বিতাড়িত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। কালেক্টরেট চত্বরে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। 

মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকেই কুষ্টিয়া ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিলের প্রথম দিকে এখানে ইপিআর, পুলিশ এবং সাধারণ মানুষ মিলে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইল শত্রুমুক্ত হয় ১১ ডিসেম্বর

৩৬ ঘণ্টার যুদ্ধে শত্রুমুক্ত হয় মাদারীপুর

কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, পেশাজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই প্রতিরোধে যোগ দেন, যা পরবর্তীতে সুসংগঠিত মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীতে রূপ নেয়। মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাস জুড়ে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে গেরিলা হামলা, সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয় চূড়ান্ত মুক্তির পথ।

ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, ১৬ এপ্রিল থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ২২টি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও সংঘর্ষ সংঘটিত হয়। মিরপুর, ভেড়ামারা, দৌলতপুর, খোকসা, কুমারখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুর সুসজ্জিত ঘাঁটির বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই চালান। পাকবাহিনীর ক্যাম্প, ব্রিজ, সড়ক ও রসদ সরবরাহ লাইনে ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়ে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়া হয়। প্রতিটি যুদ্ধে বহু মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ শহীদ হন। পাকিস্তানি বাহিনীরও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ঘটে। তারা কুষ্টিয়ায় অবস্থান টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয়।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের প্রবেশমুখ, গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনার আশপাশে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী পাক সেনাদের সঙ্গে চূড়ান্ত লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। ভোর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গোলাগুলি, মর্টার শেল ও ভারী অস্ত্রের প্রচণ্ড গর্জনে পুরো শহর কেঁপে ওঠে। কৌশলগত স্থানে অবস্থান নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর প্রতিরক্ষা ভেঙে দেন। এক পর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছু হটতে ও আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। তাদের অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যায়। ১১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে কুষ্টিয়া শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয় এবং দিনটিকেই ‘কুষ্টিয়া মুক্ত দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

১১ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত কুষ্টিয়া শহরের কালেক্টরেট চত্বরে তৎকালীন রাজনৈতিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় প্রাদেশিক পরিষদের জোনাল চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত থেকে শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানান। এই পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই প্রতীকীভাবে স্বাধীন কুষ্টিয়ার জন্ম এবং মুক্তাঞ্চল হিসেবে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালুর সূচনা ঘটে। ।

প্রতি বছরের মতো এবারো কুষ্টিয়া মুক্তদিবস উপলক্ষে কালেক্টরেট চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত, র‌্যালি পরবর্তী শহীদ স্মৃতিস্মম্ভ চত্বরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিবসটি উপলক্ষে পৃথক কর্মসূচি পালন করছে। শহীদ পরিবার ও জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের স্মৃতিচারণের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সামনে যুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরছেন। 

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভেনেজুয়েলা ছাড়তে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে: মাচাদো
  • ‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণ
  • মওলানা ভাসানী মজলুমদের পক্ষে ছিলেন, কখনো আপোষ করেননি: টুকু 
  • বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি
  • আজ মওলানা ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী
  • অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে যথাযথ প্রচারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
  • ২২টি যুদ্ধের পর শত্রুমুক্ত হয় কুষ্টিয়া
  • বিজয় দিবসে উপলক্ষে তিন দিনের নাট্যোৎসব আয়োজন করছে ডাকসু
  • টোকেন মূল্যে বৈষম্যের অভিযোগ ইবি ছাত্রদলের