হাদির ওপর হামলা গণতন্ত্রের ওপর আঘাত: বিএনপি
Published: 13th, December 2025 GMT
শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, “এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। যার লক্ষ্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা।”
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: সালাহউদ্দিন
জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, “হাদির ওপর আক্রমণ মানেই গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ। আমরা কখনোই কোনো প্রার্থীর ওপর হামলা করিনি—এর রেকর্ড নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এমন ঘটনার নজির রয়েছে। একটি অপশক্তি সব সময় ফলাফল থেকে ফায়দা লুটে নিতে চায়।”
তিনি আরো বলেন, “আমি চাই এই ঘটনার আসল সত্য মানুষের সামনে আসুক। প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা চিহ্নিত হোক, রাজনৈতিক মুখোশ খুলে যাক। জনগণ সত্য জানার অধিকার রাখে।”
হাদিকে নির্বাচনি মাঠে দেখতে চান উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “শরিফ ওসমান হাদি দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ভাষায় কথা বলেছে। সে শুধু একজন প্রার্থী নয়—রাজপথে আমার মতোই একজন লড়াকু সৈনিক। আমি তাকে প্রতিদ্বন্দ্বি মনে করি না, সে আমার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা।”
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের সঙ্গে তুলনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, “৭১ সালে শত্রু ছিল একটাই। আর আজ বাংলাদেশ বহুমুখী শত্রুর আক্রমণে জর্জরিত। আমরা তখন যেমন লড়াই করেছি, আজও তেমনি এই দেশকে রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “আজ যারা ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন, তাদের সাবধান হয়ে যাওয়া উচিত। নইলে এ দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।”
হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এর আগেও চট্টগ্রামে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এটি একটি বৃহত্তর চক্রান্ত। ইনশাল্লাহ, এই চক্রান্তের পর্দা একদিন উন্মোচিত হবে।”
প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “নির্বাচনের মাঠে ভয়ভীতি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে জনগণের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু বিএনপি কখনোই সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি।”
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা-১০ আসনে বিএনপি প্রার্থী শেখ রবিউল আলম রবি, ঢাকা-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন, ঢাকা-৪ আসনের বিএনপি প্রার্থী তানভীর আহমেদ রবিন। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, নিরপেক্ষ তদন্ত ও রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান।
সমাবেশ ঘিরে নয়াপল্টন এলাকায় জনতার ঢল নামে। বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন। “হাদির ওপর হামলা গণতন্ত্রের ওপর হামলা”, “সন্ত্রাস নয়, নির্বাচন চাই”—এমন নানা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
বক্তারা বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে রাজনৈতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় গণতন্ত্র আরো গভীর সংকটে পড়বে বলে তারা সতর্ক করেন।
ঢাকা/আলী/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ গণতন ত র র ওপর ষড়যন ত র র জন ত ক ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: সালাহউদ্দিন
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, “আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতেই পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে।”
আরো পড়ুন:
জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাতের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান
বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “১০ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই একজন সম্ভাব্য জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থীর ওপর হামলা হলো। হামলার ধরন দেখে স্পষ্ট—এটি পেশাদার শ্যুটারের কাজ। আমরা এটিকে কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছি না।”
দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণার প্রেক্ষাপটে হাদির ওপর হামলার ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “সব রাজনৈতিক নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। “তারেক রহমানসহ সব রাজনৈতিক নেতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সরকারকে আহ্বান জানিয়েছি। এটি আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
তিনি আরো বলেন, “কোনো আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তবে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, যৌথ বাহিনী এবং জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ ধরনের সহিংসতা বন্ধ করা সম্ভব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, “জনগণের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষাকে আমরা সর্বোচ্চ স্থানে রাখবো। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রাখা আমাদের অঙ্গীকার—এখানে কোনো আপস নেই।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “পতিত ফ্যাসিবাদকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই—এই ধরনের হামলা করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। জনগণের ঐক্যের কাছে সব ষড়যন্ত্র পরাজিত হবে।”
ঢাকা/আলী/সাইফ