লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০নং ওয়ার্ডের মটকা মসজিদ এলাকায় ঘরে ঢুকে ছকিনা বেগম (৫০) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। 

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোরে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। তবে ডাকাতি করার সময় বাধা দেওয়া বা পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে কিনা সেটা তদন্ত করছে পুলিশ।

নিহতের স্বজন, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘরের ছাদ দিয়ে মুখোশ পরে ভিতরে প্রবেশ করে এক বা একাধিক দৃর্বৃত্ত। পরে ঘরের ভিতরে ঢুকে প্রথমে ছকিনা বেগমের রুমে যায়। সেসময় ছকিনা বেগম চিৎকার দিলে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায় দৃর্বৃত্তরা। 

পরে অন্যদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ছকিনা বেগমকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেয়। পরে সেখান থেকে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিলো। পথে তার মৃত্যু হয়। 

নিহত ছকিনা বেগমের স্বামী সাফি উল্যাহ বছর তিনেক আগে মারা যান। নিহতের দুই সন্তান বিদেশে থাকেন। তবে ঘর থেকে কোন মালামাল বা টাকা লুটের ঘটনা না ঘটলেও ডাকাতি করার সময় বাধা দেওয়ায় এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।

লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) মো.

রেজাউল হক বলেন, “পূর্ব শত্রুতা বা পরিকল্পিতভাবে ওই নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ডাকাতির বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সেটাও তদন্ত করা হচ্ছে।” 

এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর লক ষ ম প র

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি নাগরিক কোয়ালিশনের

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কারে নাগরিক উদ্যোগ নাগরিক কোয়ালিশন।

আজ শনিবার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে এই দাবি জানায়।

ওসমান হাদির ওপর দুর্বৃত্তের গুলির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতিতে নাগরিক কোয়ালিশন বলেছে, এ ঘটনা পরিকল্পিত এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন প্রক্রিয়ার ওপর সরাসরি আঘাত। ওসমান হাদির ওপর আক্রমণ বাংলাদেশের নাগরিক জীবনে ও রাজনীতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত ভয়ংকর ঘটনা। রাজনৈতিক ও সামাজিক পর্যায়ে প্রভাবশালী শীর্ষ নেতাদের ওপর এ ধরনের ‘অ্যাসাসিনেশন’ প্রচেষ্টা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে যেমন ব্যাহত করে, একই ভাবে দেশের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নাগরিক কোয়ালিশন মনে করে, এই আক্রমণ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে ওসমান হাদির মতো আরও অনেক সামনের সারির তরুণ-তরুণী জুলাই যোদ্ধাদের জীবন কী পরিমাণ ঝুঁকিতে আছে! রাষ্ট্র জুলাই যোদ্ধাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে বলে সংগঠনটি মনে করে না।

এই পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনটি সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি কাঠামো তৈরি করে জুলাই আন্দোলনের নেতাদের বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করতে রাষ্ট্র জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত এক বছরে শতাধিক রাজনৈতিক কর্মী হত্যার ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অধিকাংশ ক্ষেত্রে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। এতে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।

নাগরিক কোয়ালিশন আরও বলেছে, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের আইনি ও প্রশাসনিক সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হবে, তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। নাগরিক সমাজ সরকারকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপদে ভোট প্রদানের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ওসমান হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চিত করার আহবান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ রকম মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে জন্য সরকারসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ