আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসিকে ঠিকভাবে দেখতে না পারাকে কেন্দ্র করে কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ক্ষুব্ধ দর্শকেরা গ্যালারিতে ভাঙচুর চালিয়েছেন। মাঠে ভাঙা চেয়ার ও বোতল ছুড়েছেন। একপর্যায়ে বেষ্টনী টপকে মাঠেও ঢুকেও পড়েন হাজার দুয়েক দর্শক।

এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির শুরুর দিকেই মাঠ ছেড়ে যান মেসি। তিন দিনের ভারত সফরে আজই তিনি কলকাতায় পা রেখেছিলেন। ইন্টার মায়ামি সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো দি পলকে নিয়ে মেসির ভারতের আরও তিনটি শহরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুসারে যুব ভারতীতে প্রবেশ করে গ্যালারির চারপাশে ঘুরে ল্যাপ অব অনার নেওয়ার কথা ছিল মেসির। পরে মাঠে আসার কথা ছিল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বলিউড তারকা শাহরুখ খানেরও। এ ছাড়া একটি প্রদর্শনী ম্যাচও হওয়ার কথা, যেখানে মেসির অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জেরে সবই পণ্ড হয়ে গেছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় সাড়ে ১১টায় মেসির গাড়ি সল্ট লেক স্টেডিয়ামে প্রবেশ করে। তিনি গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই বেশ কিছু মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরেন। গ্যালারির দর্শক বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও তাঁকে ঠিকমতো দেখতে না পেয়ে ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। এ সময় মেসিকে দেখা যাচ্ছিল শুধু স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে। কিন্তু ৭০-৮০ জনের মতো মানুষ মেসির চার পাশে ঘিরে থাকায় সেখানেও ভালোভাবে দেখা যাচ্ছিল না।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ট্যুর আয়োজক শতদ্রু দত্ত মাইক্রোফোনে ভিড় কমাতে অনুরোধ করেন। তবে পরিস্থিতি তাতে স্বাভাবিক হয়নি। কেউ কেউ মেসির গা ঘেঁষে হাঁটতে থাকেন, কেউ পাশে ও সামনে এগিয়ে সেলফি ও ভিডিও নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন। এ দিকে মেসিকে দেখতে না পেয়ে গ্যালারির দর্শক হইচই শুরু করেন। কেউ কেউ বোতলও ছুড়তে শুরু করেন। একপর্যায়ে মেসি বিরক্ত হয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান।

মেসিকে ঠিকঠাক দেখতে না পাওয়া এবং তাঁর চলে যাওয়ার পর দর্শক আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। অনেকে চেয়ার ভেঙে মাঠে ছুড়তে শুরু করেন। ব্যানারও ছিঁড়ে ফেলেন। বিশৃঙ্খলার একপর্যায়ে বেষ্টনী ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন দর্শক। পুরো মাঠ চলে যায় ক্ষুব্ধ দর্শকের দখলে। পরিস্থিতি এ সময় পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

মেসির আগমন কেন্দ্র করে যত ধরনের আয়োজন ছিল, পণ্ড হয়ে যায় সবই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, গ্যালারিতে হাজির হওয়া অনেক দর্শককে চড়া দামে টিকিট কেটে ঢুকতে হয়েছিল। সর্বনিম্ন ৩৮০০ থেকে সর্বোচ্চ ১১৮০০ রুপি খরচ করেও মেসিকে দেখতে না পেয়ে তাঁরা প্রকাশ করেছেন।

মেসি কলকাতা থেকে আজই হায়দরাবাদে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকে মুম্বাই হয়ে দিল্লি সফর দিয়ে শেষ হবে ‘দ্য গোট ট্যুর ইন্ডিয়া’।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি সোনা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা উদ্ধার করেছে মুন্সিগঞ্জ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) উপপরিদর্শক আক্তারুজ্জামান মুন্সি, মাই টিভির প্রতিনিধি মো. রমজান, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি রমজান আলী, মাইক্রোবাসচালক জাকির হোসেন ও মিরপুরের জুয়েলারি ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীবাহী বাসে করে সোনা নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ভাই। বাসটি গজারিয়া এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের পোশাক পরা তিনজনসহ পাঁচজনের একটি দল ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাদক মামলার অজুহাত দেখিয়ে বাস থেকে নামিয়ে নেন। একপর্যায়ে তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে একটি ‍মাইক্রোবাসে তোলা হয়। পরে তাদের চোখ বেঁধে মারধর করে ১৪৫ ভরি স্বর্ণালংকার, টাকা, মুঠোফোন, এটিএম কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই দুই ব্যবসায়ীকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি এলাকায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়।

খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জ ডিবি পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান শুরু করে। ৯ ডিসেম্বর সকাল থেকে রাজধানীর কাফরুল, মিরপুর ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব এলাকা থেকে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়।

একপর্যায়ে তাঁদের কাছ থেকে ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা, সোনা বিক্রির ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, ২ জোড়া হাতকড়া, ২টি ওয়াকিটকি, পুলিশের ৩ সেট ইউনিফর্ম ও ৭টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।

মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলমের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় গজারিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অবশিষ্ট সোনা ও পলাতক এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষককে হেনস্তা করলেন ডাকসু নেতা
  • ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি সোনা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫