নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই রাজধানীতে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) সভাপতি ও জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পরপরই ঢাকা–৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করা হলো। তাহলে নিরাপত্তাটা কোথায়? এই পরিস্থিতিতে প্রার্থীরা কীভাবে নির্বাচন করবেন, কী করে নির্বাচনে অংশ নেবেন?’

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন রেখে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন দেশে ‘ইতিহাসের সেরা’ নির্বাচন হবে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

তফসিল ঘোষণার পরদিনই রাজধানীর সড়কে প্রকাশ্যে ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি এখন সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পতিত আওয়ামী লীগ ও ভারত বিরোধিতায় সরব ওসমান হাদির ওপর হামলার নিন্দা জানাচ্ছেন অভ্যুত্থানে সক্রিয় তরুণেরা। তাঁরা বলছেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ জুলাই আন্দোলনের নেতাদের হত্যার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছে।

ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষোভ–বিক্ষোভ চলার মধ্যে রাজধানীর গুলশানে একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ১৮টি দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন জোট এনডিএফের প্রধান আনিসুল ইসলাম।

সামগ্রিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘এটাই যদি উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। মব, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস চলছে। জুলাই আন্দোলনের পরও আগের মতো নির্বাচন হলে মর্মটা নষ্ট হয়ে যাবে।’

নির্বাচনটি সুষ্ঠু করার জন্য সবার সমান সুযোগ ও প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জোর দিয়ে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘এই দুটি বিষয়ে সরকারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তফসিল ঘোষণা করা হলেও এখনো দেশে নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি। সুরক্ষিত নয় প্রার্থীদের জীবন।’

তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় বাড়ানোর সুপারিশ জানান এনডিএফের প্রধান। সবাইকে নিয়ে ‘ইনক্লুসিভ’ (অংশগ্রহণমূলক) নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।

প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করার তাগিদ দিয়ে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসন আজ ভাগাভাগির প্রশাসন। জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষতা চাই, সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এখনো কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের সময় আছে। যদি না হয়, তাহলে ইতিহাসে তাদের মূল্যায়ন ভালো হবে না। এই অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।’

যুক্তরাজ্যে দেড় যুগ নির্বাসিত জীবনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান সাহেব দেশে ফিরবেন। আমরা বিশ্বাস করি, দেশে ফিরে তিনি দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে এনডিএফের মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির এই অংশের মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সারা দেশে একটা সংশয় বিরাজ করছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সারা দেশে ১ হাজার ৯৩১ জন খুন হয়েছেন। দেশের সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সব শ্রেণি–পেশার মানুষ আজ সন্ত্রাসের বলি হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম ও এনডিএফের প্রধান সমন্বয়কারী গোলাম সরোয়ার মিলন উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওসম ন হ দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মেসিদের বিদায় দিতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক আয়োজকপ্রধান

লিওনেল মেসির সফরকে কেন্দ্র করে তুলকালাম হয়েছে কলকাতায়। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুসারে যুব ভারতী স্টেডিয়ামে ল্যাপ অব অনার নেওয়ার কথা ছিল মেসির। কিন্তু তা না হওয়ায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় স্টেডিয়ামে। মেসিকে ঠিকমতো দেখতে না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ ভক্তরা গ্যালারিতে ভাঙচুর চালিয়েছেন, মাঠেও ঢুকে পড়েন অনেকে। এমন অবস্থায় মেসিও দ্রুত মাঠ ছেড়ে চলে যান। বাতিল করা হয় প্রদর্শনী ম্যাচও। এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশ আটক করেছে আয়োজকের প্রধান শতদ্রু দত্তকে।

যুব ভারতীতে কথা বলছেন আয়োজকদের প্রধান শতদ্রু দত্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ