পরিবহন প্রশাসক পদ থেকে ইবি উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি
Published: 26th, February 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীকে পরিবহন প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসন ভবন চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ। এ সময় বিশ্বিবদ্যালয়ের পরিবহন পুল ও খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক সংস্কারের দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, সহ সভাপতি উদয় দেবনাথ, সাদিয়া মাহমুদ মীম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বিভীষিকাময় দিন ছিলল। এদিন বাসচালকের গাফিলতির কারণে বৃত্তিপাড়ায় বাস দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ পরিস্থিতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী। ক্যাম্পাস পরিবহনের এ অবস্থার দ্বায় স্বীকার করে উপ-উপাচার্যকে পরিবহন প্রশাসকের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে এবং যোগ্য ও দায়িত্বপরায়ণ একজন শিক্ষককে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে ফিটনেসবিহীন ও অদক্ষ বাসচালকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চলাচলের ব্যবস্থা করে রেখেছে। অনতিবিলম্বে ইবির পরিবহন পুল থেকে ফিটনেসবিহীন সব বাস অপসারণ করতে হবে এবং অযোগ্য, অপ্রশিক্ষিত ও উদ্ভট মস্তিষ্কের চালকদের বাদ দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চালকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলে নতুন বাস যুক্ত করতে হবে। এছাড়া খুলনা -কুষ্টিয়া মহাসড়কে বৃত্তিপাড়া থেকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত রাস্তার মর্মান্তিক অবস্থা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত এ মহাসড়ক সংস্কার করতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “আপনারা শত শত শহীদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছেন। আপনারা আর টালবাহানা করে পরিবহন সেক্টরকে ধ্বংস করবেন না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাড়ায় চালিত বাস আর দেখতে চাই না। আশা করি আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে বাস ক্রয় করে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেবেন।”
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর পরিবহন প্রশাসক পদ থেকে পদত্যাগ করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড.
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া শহর থেকে ইবিগামী বাস মাঝপথে ওভারটেইক করতে গিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ২৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় রাত সাড়ে ৯টার দিকেপরিবহন দপ্তরের সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ উপ চ র য র পর বহন প পদত য গ পদ থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।