হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৩ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ
Published: 1st, March 2025 GMT
হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বাড়ানোর খবরে মহাসড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন লালমনিরহাটের আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে লালমনিরহাট-পাটগ্রাম-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের মহেন্দ্র নগর বাজারের খান মার্কেট এলাকায় মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় ওই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী সব ধরনের যানবাহন মহেন্দ্র নগর খান মার্কেট এলাকার দুই পাশে আটকা পড়ে।
খবর পেয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ চৌধুরী ও লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা আন্দোলনরত আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানান, বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল রোববার দুপুরে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে হিমাগার মালিক সমিতি, আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রশাসনের মতবিনিময় সভা হবে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার আশ্বাস দেওয়া হলে মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন আন্দোলনকারীরা। তিন ঘণ্টা পর ওই মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
লালমনিরহাট সদরের মহেন্দ্র নগরের মনোরম গ্রামের আলুচাষি শাহিনুর রহমান, আবু আসাদসহ কয়েকজন আলুচাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর হিমাগারের মালিকেরা প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণের ভাড়া চার টাকা নিয়েছিলেন। আলু হিমাগার থেকে বের করার সময় বস্তা ওজন করে ভাড়ার মূল্য আদায় করা হয়ে থাকে। বস্তায় থাকা পচা আলুও ওজন করা হয়। পচা আলু বাদ দেওয়ার পর আলু সংরক্ষণের ভাড়া এমনিতেই বেশি পড়ে। এ বছর হিমাগারের মালিকেরা ভাড়া দ্বিগুণ বৃদ্ধি করে আট টাকা করবেন বা করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া দ্বিগুণ বৃদ্ধি কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। আলোচনা করে সমঝোতা না হলে আবারও মানববন্ধনসহ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
লালমনিরহাট জেলা হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি মো.
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ চৌধুরী ও লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নুরনবী জানিয়েছেন, আন্দোলনরত আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের বোঝানো হয়েছে। সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিমাগার মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলে দাবির সুরাহার চেষ্টা করা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ও ব যবস য় দ র আল চ ষ
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”
তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”
বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।