দশ জনের বার্সার বিপক্ষে হারল বেনফিকা
Published: 6th, March 2025 GMT
চলমান মৌসুমেই একবার মোনাকোর বিপক্ষে একটি লাল কার্ড দেখায় ম্যাচ হারতে হয়েছিল বার্সেলোনাকে। বুধবার (৫ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে একই শঙ্কায় পড়েছিল কাতালান জায়ান্টরা। পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার বিপক্ষে যে ম্যাচের শুরুর দিকেই ১০ জনে পরিণত হয় হান্সি ফ্লিকের দল। তবে এই জার্মান ম্যানেজারের অধীনে এ যে এক বদলে যাওয়া দল। এক জন ফুটবলার কম নিয়েই তাই উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে জয় পেল বার্সা।
বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে বেনফিকাকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে বার্সেলোনা। দর্শনীয় এক গোল করে ম্যাচের ব্যবধান গড়েন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনিয়া।
ঘরের মাঠ স্তাদিও দা লুজে প্রতিপক্ষের ১০ জনের বিপক্ষেও জয় ছিনিয়ে নিতে পারল না বেনফিকা। যদিও এই ম্যাচে বেনফিকা মূলত বার্সা গোলরক্ষক বয়েচেক শেজনির বিপক্ষে হেরেছে। চলমান মৌসুমের রবিন রাউন্ডে এই ঘরের মাঠেই এই দুদল এক মহারণ উপহার দিয়েছিল ফুটবল বিশ্বকে। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছিল কাতালানরা। সেই ম্যাচের যেন বার্সার আত্মবিশ্বাসের কারণ ছিল গত রাতের ম্যাচে।
আরো পড়ুন:
পয়েন্টে শীর্ষে বার্সা, গোলে লেভানডোফস্কি
রিয়ালের ‘ব্ল্যাঙ্ক চেক’ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন নেইমার
ম্যাচের ২২তম মিনিটেই ধাক্কা খায় অতিথী দল। বেনফিকার গ্রীক ফরোয়ার্ড ভাঞ্জেলিস পাভদিলিসের আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন বার্সা ডিফেন্ডার পাউ কুবারসি। ফলশ্রুতিতে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় কুবারসিকে। তবে এরপরও রক্ষণে বাস পার্ক করায় কোনো বিপদ হয়নি স্প্যানিশ জায়ান্টদের।
শেজনির ম্যাচের ২০ সেকেন্ডের মাথায় আক্তুরকোগলুর ক্রস শট দুর্দান্তভাবে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান। বাঁচান নিশ্চিত একটি গোল। পরে কুবারসি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর, বারেইরোর আরেকটি শটও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন শেজনি। বিরতির ঠিক আগে, অবিশ্বাস্য প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আক্তুরকোগলুর একেবারে কাছ থেকে করা হেডও প্রতিহত করেন।
বিরতির পরও, দক্ষতা দেখিয়ে যান। বিশেষ করে, ম্যাচ শেষের দিকে বক্সের সীমানা থেকে রেনাতোর নেওয়া জোরালো শট ঠেকিয়ে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন। বেনফিকার হতাশা তখন চরমে পৌঁছে যায়। শেজনির মোট ৭টি দুর্দান্ত সেভে ম্যাচের চিত্র বদলে দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনায় লামিনের জায়গায় ফেরানকে নামান ফ্লিক এবং কৌশল সফল হয়। আন্তোনিও সিলভার ভুল পাস রাফিনিয়া ছিনিয়ে নিয়ে অসাধারণ শটে ৬১তম মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন, যা শেষ পর্যন্ত জয়সূচক গোলে পরিণত হয়।
আগামী ১১ মার্চ ফিরতি লেগে এগিয়ে থেকেই ঘরের মাঠে বেনফিকাকে আতিথিয়তা দিবে বার্সা।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ শ জন র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?