কার্যালয়ে গেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেছেন, চাপে মাথা নত করবেন না
Published: 6th, March 2025 GMT
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনার আজ বেলা তিনটার দিকে আগারগাঁওয়ের নিজেদের কার্যালয়ে এসেছেন। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিএসইসি ভবনে প্রবেশ করেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বেলা তিনটার দিকে নিজের গাড়িতে করে আগারগাঁওয়ের কার্যালয়ে পৌঁছান। এ সময়ে বিএসইসি প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিরাপত্তা দিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যানকে নিজ কক্ষে পৌঁছে দেন। একই সময়ে ভবনে প্রবেশ করেন তিন কমিশনার মো.
বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সাংবাদিকদের বলেন, কোনো ধরনের চাপের কাছে কমিশন মাথা নত করবে না। পুঁজিবাজারের অনিয়মসহ যেসব বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং যেসব তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কার্যালয়ে ফিরে তিনটার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে আজ সকাল থেকে বিএসইসি চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি পালন করছেন। আজ বৃহস্পতিবার সংস্থাটিতে কাজ হচ্ছে না। পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করছেন।
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ সংস্থাটির দ্বিতীয় তলায় মাল্টিপারপাস হলে একত্র হন। নির্বাহী পরিচালকেরাসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিএসইসি ভবনের ষষ্ঠ তলায় সভায় মিলিত হন। সকাল থেকেই ভবনের পঞ্চম তলায় বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের তলায় একদম সুনসান নীরবতা ছিল।
গতকাল বুধবার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির মুখে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে কার্যালয় ছাড়েন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনার। আজ তাঁরা কেউ কার্যালয়ে আসেননি। সে কারণে পঞ্চম তলার কমিশন কার্যালয় একেবারেই ফাঁকা। চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের কক্ষের সামনের নামফলকগুলো ভাঙা, কারও নাম দেখা যাচ্ছে না।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেবে বিএসইসি
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির চার পরিচালক, সচিব, প্রধান অর্থ কর্মকর্তাসহ ১৫ ব্যক্তি এবং ৭ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিবেদন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, একমি পেস্টিসাইডসের ইস্যু ম্যানেজার শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের (এসইএমএল) নিবন্ধন সনদ বাতিল এবং দুই নিরীক্ষকের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশন ও ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) অভিযোগ দাখিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, বেড়েছে লেনদেন
পূবালী ব্যাংক পারপেচুয়াল বন্ডের ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের ওপর অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শাহানা শাহীন (চেয়ারম্যান), রেজা-উর-রহমান (ব্যবস্থাপনা পরিচালক), আহসান হাবীব সিনহা (পরিচালক), কে এম হেলুয়াার (পরিচালক), সবুজ কুমার ঘোষ (কোম্পানি সচিব), সেলিম রেজা (চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার) এবং প্রতিবেদনে উল্লেখিত ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান প্লেসমেন্টহোল্ডাররা (মো. আফজাল হোসেন, এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মো. মতিউর রহমান, বিক্রমপুর পটেটো ফ্লেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, তফাজ্জল হোসেন ফরহাদ, জাভেদ এ মতিন, বেঙ্গল অ্যাসেটস হোল্ডিংস লিমিটেড, চিটাগাং পেস্টিসাইডস অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড, হেরিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, আঞ্জোমান আরা বেগম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সারোয়ার, এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (এমডিএ), তৌহিদা আক্তার, মো. রুহুল আজাদ এবং রানু ইসলাম) যারা শেয়ারের বিপরীতে কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতিবেদনটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের ইস্যু ম্যানেজার শাহজালাল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (এসইএমএল) প্রসপেক্টাসে মিথ্যা বা অসঙ্গত তথ্য দাখিলের মাধ্যমে এর ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে ব্যর্থ হওয়ার কারণে এর নিবন্ধন সনদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রি-আইপিওকালে কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানির বাস্তব আর্থিক অবস্থা দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে নিরীক্ষক সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় এনফোর্সমেন্ট প্রক্রিয়া শুরুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার-সংক্রান্ত বিষয়ে কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে যথাযথ তথ্য সন্নিবিশিত না থাকায়, নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/রফিক