পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনার আজ বেলা তিনটার দিকে আগারগাঁওয়ের নিজেদের কার্যালয়ে এসেছেন। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিএসইসি ভবনে প্রবেশ করেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বেলা তিনটার দিকে নিজের গাড়িতে করে আগারগাঁওয়ের কার্যালয়ে পৌঁছান। এ সময়ে বিএসইসি প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিরাপত্তা দিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যানকে নিজ কক্ষে পৌঁছে দেন। একই সময়ে ভবনে প্রবেশ করেন তিন কমিশনার মো.

মহসীন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ। পরে তাঁরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের কক্ষে চলে যান। সেখানেই তাঁরা অবস্থান করছেন। বিএসইসি কার্যালয়ে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সাংবাদিকদের বলেন, কোনো ধরনের চাপের কাছে কমিশন মাথা নত করবে না। পুঁজিবাজারের অনিয়মসহ যেসব বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং যেসব তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কার্যালয়ে ফিরে তিনটার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

এদিকে আজ সকাল থেকে বিএসইসি চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি পালন করছেন। আজ বৃহস্পতিবার সংস্থাটিতে কাজ হচ্ছে না। পুরো পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করছেন।

সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ সংস্থাটির দ্বিতীয় তলায় মাল্টিপারপাস হলে একত্র হন। নির্বাহী পরিচালকেরাসহ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বিএসইসি ভবনের ষষ্ঠ তলায় সভায় মিলিত হন। সকাল থেকেই ভবনের পঞ্চম তলায় বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের তলায় একদম সুনসান নীরবতা ছিল।

গতকাল বুধবার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির মুখে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে কার্যালয় ছাড়েন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনার। আজ তাঁরা কেউ কার্যালয়ে আসেননি। সে কারণে পঞ্চম তলার কমিশন কার্যালয় একেবারেই ফাঁকা। চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারের কক্ষের সামনের নামফলকগুলো ভাঙা, কারও নাম দেখা যাচ্ছে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব এসইস

এছাড়াও পড়ুন:

বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে: বিএসইসি

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগে বিশেষ কর ছাড় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

‘বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বিএসইসির তাৎক্ষণিক কর্মপরিকল্পনা’ শিরোনামে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আস্থা বাড়াতে  ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সূচক পতনের কারণ খুঁজতে যেসব শেয়ারদরের ওঠা-নাম সূচকে বেশি প্রভাব ফেলছে, সেগুলোর লেনদেনে নজদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। 

এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত, বহুজাতিক, বস্ত্র ও ওষুধ খাতের লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়েছে বিএসইসি। পাশাপাশি অতালিকাভুক্ত কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আসতে উৎসাহ দিতে কর ছাড়, ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সীমিত করা এবং শেয়ারবাজারকে বিকল্প অর্থায়নের উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর বাইরে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে বিএসইসির সমন্বয় বাড়ানো, আসন্ন বাজেটে লভ্যাংশ ও বিনিয়োগের ওপর কর ছাড় সুবিধা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে বিএসইসি। 

শেয়ারবাজার বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে টকশো এবং বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা, ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যবহার করে বার্তা দেওয়া হবে।

কমিশন আশা করছে, এসব পদক্ষেপ এবং কর্মপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে এবং বাজারে স্থিতিশীল হবে।

এদিন রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিএসইসি কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ, যুগ্ম সচিব ড. দেলোয়ার হোসেন, শেয়ারবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধি এবং বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকদের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

চলতি এপ্রিলে লাগাতার দরপতনের পরও বিএসইসির নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে কিছু বিনিয়োগকারী রাজধানীর মতিঝিলে বিক্ষোভ করছেন। তারা সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এ পদে ‘অযোগ্য’ এমন অভিযোগ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন।

সরকারি একটি সংস্থার চাপে বিএসইসির চেয়ারম্যান পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন- এমন গুজবে রোববার পতনের ধারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শেয়ারবাজার। পতন করছেন না- এমন খবরে ফের দরপতন শুরু হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও এফআইডির সচিব বিএসইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। 

বিএসইসি সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বৈঠক হয়। বৈঠকের পরই বিএসইসির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কিছু জরুরি কর্মপরিকল্পনা জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে করসুবিধা দেবে সরকার
  • কর্মীদের নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানালেন রাশেদ মাকসুদ
  • নির্বাচনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২ প্রস্তাব
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
  • ২১ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে বিএসইসির আদেশ জারি
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করল বিএসইসি
  • বাজেটে লভ্যাংশ আয় ও বিনিয়োগে কর ছাড় থাকবে: বিএসইসি
  • ডিবির অভিযানে আ.লীগের সাবেক এমপিসহ গ্রেপ্তার ৭
  • পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা ব
  • সাবেক আইজিপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আবার বাড়ল