সিদ্ধিরগঞ্জে ঘরে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ ৮ জনের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) দিনগত রাত সোয়া একটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিকশাচালক হান্নান (৪০) ও সকালে সুমাইয়া নামের দেড় বছরের এক শিশু মৃত্যুবরণ করেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা.

শাওন বিন রহমান। 

এ ঘটনায় এখনো চিকিৎসাধীন আছেন নিহত হান্নানের স্ত্রী পোশাক শ্রমিক নুরজাহান আক্তার লাকী (৩০), মেয়ে জান্নাত (৩), মেয়ে সামিয়া (৯), ছেলে সাব্বির (১৬), আরেক পরিবারের পোশাক শ্রমিক সোহাগ (২৩) ও তার স্ত্রী পোশাক শ্রমিক রুপালি (২০)। 

নিহত হান্নান হলেন শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার বাসিন্দা ও সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম ধনকুন্ডা এলাকায় ইব্রাহিম খলিলের টিনসেড বাসায় পরিবারসহ ভাড়া থাকতেন। নিহত শিশু একই বাসার পাশের কক্ষে ভাড়াটিয়া পোশাক শ্রমিক সোহাগের মেয়ে। 

সার্জন ডা. শাওন জানায়, অগ্নিকান্ডে নিহত হান্নান এর ৪৫ শতাংশ এবং শিশু সুমাইয়ার ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিলো। নিহত হান্নানের দুই মেয়ে সামিয়া ও জান্নাত কিছুটা আশঙ্কামুক্ত। তবে লাকি আর সাব্বিরের অবস্থা ভালো না।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার, ৩ মার্চ রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সিদ্ধিরগঞ্জের পশ্চিম ধনকুন্ডা এলাকায় ওই বাসার দু’টি কক্ষে জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পরিবারের নারী ও শিশুসহ আটজন দগ্ধ হন। পরবর্তীতে ৮জনকে উদ্ধার করে ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, দুই কক্ষের সেমিপাকা টিনসেড ঘরের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন গেছে।

সেখান থেকে কোনোভাবে গ্যাস লিকেজ হয় এবং এর থেকে ঘরের ভেতর গ্যাস চেম্বারের সৃষ্টি হয়। যে কোনোভাবে আগুনের স্পার্কের সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে এবং অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়।

 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ জন র ম অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ