মাত্র ১৫ ম্যাচের টুর্নামেন্ট। ফাইনাল খেললে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সর্বোচ্চ ম্যাচ পাওয়া যায় ৫টি। ক্রিকেটারদের পরিসংখ্যানে তাই খুব বড় ওলট–পালট হচ্ছে না এ টুর্নামেন্টে। কেউ নিয়েছেন ১০ উইকেট, তো কেউ ৮টি। ব্যাটসম্যানদের রানসংখ্যা এখনো ৩০০–ও হয়নি।

টুর্নামেন্টসেরা হওয়ার দৌড়ে ফেবারিট কে, ফাইনালের আগে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া তাই মুশকিল। আর সব সমীকরণ ঘুরে যেতে পারে ফাইনালে দুর্দান্ত একটি ইনিংস কিংবা অবিশ্বাস্য কোনো স্পেলে।

তাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেরা খেলোয়াড় হবেন কে—এ প্রশ্নের চেয়ে কারা এ পুরস্কার পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন, সেটা বলাই নিরাপদ। আজ দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালের আগে দেখে নেওয়া যাক, টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে ফেবারিট কারা?

বিরাট কোহলি (ভারত)

ম্যাচ ৪, রান ২১৭, সর্বোচ্চ ১০০, গড় ৭২.

৩৩, ক্যাচ ৭টি

ছন্দে ছিলেন না। কোহলি আর নেই সেই কোহলি! চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে আলোচনাটা এমনই ছিল। সব বদলে যায় পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাঁর সেঞ্চুরির পর। এরপর সেমিফাইনালেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোহলি খেললেন ৮৪ রানের ইনিংস। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই ইনিংস খেলে কোহলি এখন আছেন টুর্নামেন্টসেরার দৌড়েও।

৭৬৫২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে কোহলির রান

ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ এক ইনিংস খেললে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার সম্ভাবনা তাঁরই বেশি থাকবে। আজ ৪৬ রান করলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসেও সর্বোচ্চ রান হয়ে যাবে ২০২৩ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় কোহলির। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ক্রিস গেইলের। ১৭ ম্যাচে ১৭ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে করেছেন ৭৯১ রান। কোহলি ১৭ ম্যাচে ১৬ ইনিংসে ৭৪৬ রান নিয়ে দুইয়ে।

রাচিন রবীন্দ্র (নিউজিল্যান্ড)

ম্যাচ ৩, রান ২২৬, উইকেট ২, সর্বোচ্চ ১১২, ক্যাচ ৪টি

রাচিন রবীন্দ্র তো আইসিসি টুর্নামেন্টে সেঞ্চুরি করতেই আসেন! আইসিসি টুর্নামেন্টে মাত্র ১৩ ম্যাচ খেলেই ৫টি সেঞ্চুরি করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এর দুটি এসেছে এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে, তা–ও মাত্র ৩ ম্যাচ খেলে।

সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরির আগে বাংলাদেশের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করেন রবীন্দ্র। সঙ্গে উইকেটও আছে ২টি। এমন পারফরম্যান্সের পর দলও ফাইনালে। টুর্নামেন্টসেরার দৌড়ে তো থাকবেনই! দেখা যাক ফাইনালে কেমন করেন।

আরও পড়ুনঅজুহাত দেওয়া বন্ধ করলে একদিন না একদিন সফল হবেনই২ ঘণ্টা আগেম্যাট হেনরি (নিউজিল্যান্ড)

ম্যাচ ৪, উইকেট ১০, গড় ১৬.৭০, সেরা বোলিং ফিগার ৫/৪২

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। সবচেয়ে ‘ইমপ্যাক্টফুল’ বোলার বললেও বাড়িয়ে বলা হয়তো হবে না। নতুন বলে ও পুরোনো বলে প্রতি ম্যাচেই পারফর্ম করে চলেছেন ম্যাট হেনরি। তাই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে তাঁর থাকাটাও নিশ্চিত। দরকার শুধু ফাইনালে দারুণ কিছু!

কেইন উইলিয়ামসন

ম্যাচ ৪, রান ১৮৯, গড় ৪৭. ২৫, সর্বোচ্চ ১০২, ক্যাচ ৭টি

কেইন উইলিয়ামসনকে বাদ রাখা তো সম্ভব নয়। ২০১৯ বিশ্বকাপে আলোচনার বাইরে থেকেই টুর্নামেন্টসেরা হয়েছিলেন। ফাইনালে যদি অবিশ্বাস্য কিছু করে ফেলেন!
সংখ্যায় পিছিয়ে আছেন, আবার আলোচনায় আছেন—এমন ক্রিকেটারও আছে। এই যেমন শ্রেয়াস আইয়ার। ৪ ম্যাচে রান করেছেন মাত্র ১০৫।

গ্লেন ফিলিপস ও স্যান্টনার আছেন আলোচনায়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ন ম ন টস র রব ন দ র ফ ইন ল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ