যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা ম্যাক্স বুগেন। আঁকাআঁকিতে অনন্য এক প্রতিভার অধিকারী পিটার্সফিল্ডের এই কিশোর। নিজের ওই প্রতিভার জোরে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের নাম লিখিয়েছে সে।

ম্যাক্সের বয়স ১৭ বছর। তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করে সে একটি ‘ফ্লিপ বুক’ তৈরি করেছে। তার ফ্লিপ বুকটি কত পাতার জানেন, ১ হাজার ৩০০ পাতার! ম্যাক্স এখন সবচেয়ে বেশি পাতার ফ্লিপ বুক তৈরি করার রেকর্ডের মালিক।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখাতেই ফ্লিপ বুকটি আঁকতে শুরু করে ম্যাক্স। ফ্লিপ বুক তৈরি করতে প্রথমে একটি গল্প বেছে নিতে হয়। তারপর সেটি আঁকতে হয় এবং পরের পাতাগুলোতে সেই গল্পের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চরিত্রগুলো এঁকে যেতে হয়। ফ্লিপ বুকের পাতা দ্রুত ওলটানো হলে গল্পের চরিত্রগুলো যেন চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠে।

ম্যাক্স বলেছে, ‘আমি আমার পড়ার টেবিলে, স্কুলে, ট্রেনে শুধু এঁকে গেছি।’

কাজটি মোটেও সহজ ছিল না বলেও জানায় এই কিশোর। সে বলেছে, ‘ফ্লিপ বুক সাধারণত ছোট, চটকদার ও আকর্ষণীয় বর্ণনামূলক হয়। এ বই তৈরি করতে গিয়ে ৫০০ পাতা পার হওয়ার পর আমার বিরক্ত লাগতে শুরু করেছিল। আমি গল্প গাঁথতে নতুন কিছু খুঁজেও পাচ্ছিলাম না। তবু আমি বারবার নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিতাম, বিশ্ব রেকর্ড গড়া সহজ কাজ নয়। এভাবে আমি অধ্যবসায়ের সঙ্গে সামনে এগিয়ে যেতে থাকি।’

ম্যাক্স বলেছে, সে এর আগে কখনো ৩০০ পাতার বেশি ফ্লিপ বুক তৈরি করেনি। সে বলে, ‘এক হাজারতম পাতায় পৌঁছাতে পারা আমার জন্য সত্যিই অবিশ্বাস্য ছিল। কারণ, আমি কখনো ভাবিনি আমি এত দূর যেতে পারব।’

ম্যাক্সের ফ্লিপ বুকের নাম থান্ডার স্ট্রাইক বা বজ্রপাত।

কিশোরদের প্রতি উপদেশ দিতে গিয়ে ম্যাক্স আরও বলেছে, ‘যদি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই তুমি কোনো রেকর্ড গড়তে চাও, তবে তোমাকে অবশ্যই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে। প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন এমন কিছু সামনে আসে। এ ছাড়া মজা করার ক্ষমতাও এ কাজে আমাকে কিছুটা হলেও সহায়তা করেছে বলে আমার মনে হয়। বিশেষ করে সবকিছু যখন ভয়ংকর খারাপ অবস্থায় থাকে, তখনো তার মধ্যে ভালো কিছু খুঁজে নিতে পারা।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ