‘মার্চ ফর ড. ইউনুস’ আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
Published: 18th, April 2025 GMT
‘মাচ ফর ড. ইউনুস’ আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন, এই দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে শহরের চাষাড়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এ কর্মসুচি পালন করা হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, ১৭ বছর মানুষ নির্বাচনে ভোট দিতে পারে নাই কিন্ত এখন দেশের অধিকাংশ মানুষই নির্বাচন চায় না। তারা চায় আগে সংবিধান ঠিক হোক। আপনারা জনগণের মতামত নেন একটা গণপরিষদ নির্বাচন করে দেখেন অধিকাংশ মানুষই এবার ভোটের বিপক্ষে।
আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে সর্বপ্রথম আওয়াজ উঠিয়েছি। এখন এই আওয়াজ বাকি ৬৩ জেলায় গিয়ে জড়ো হবে। খুনি হাসিনার বিচার আর দেশ সংস্কার এর আগে কোন নির্বাচন হবে না।
বক্তারা আরও বলেন, আপনারা যারা নির্বাচন রোড ম্যাপ চাচ্ছেন, সংস্কার চাচ্ছেন না। তাদের বলছি, আমরাও নির্বাচন চাই তবে তার আগে জুলাই হত্যার বিচার, সংবিধান সংস্কার, বিচার ব্যবস্থা সংস্কার, শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার, ব্যাংকিং খাত সংস্কার, আইন শৃঙ্খলা সংস্কার, দেশের বাণিজ্য সংস্কার, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, সরকারি নিয়োগ ব্যবস্থা সংস্কার, সামাজিক ব্যবস্থা সংস্কার, পার্বত্য বিশৃঙ্খলা সংস্কার, ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট সংস্কার, রাজনৈতিক নেতাদের সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, তারপর আপনারা নির্বাচন করুন আমাদের দেশের জনগণের কোনো আপত্তি নাই।
বক্তারা বলেন, আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। খুনি হাসিনাই আমাদের ভয় দেখাতে পারেনি এখন যদি কেউ আবারও আওয়ামীলীগ হওয়ার চেষ্টা করে তাদের উচিত ২৪ থেকে শিক্ষা নেয়া।
পৃথিবীতে সাদা কালো, ধনী গরিব, দেশি বিদেশি এগুলা কোনো বিষয় নয়, বিষয় হচ্ছে পৃথিবীতে দুই ধরনের লোক থাকে উইনার এন্ড লুজার। ড.
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, মো. আলিফ দেওয়ান, রবিউল ইসলাম রবিন, আল আমিন বিন আরশাদ আলী, ফাহিম খন্দকার অনিক ও রাব্বী ইসলাম নিলয়সহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, একই দাবিতে গত ১৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে বরখাস্তের দাবি
আন্দোলনকারী ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের আপত্তিকর মন্তব্যের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। পরে ওই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশকরেনিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ওই শিক্ষক।
ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক নাছির উদ্দীনমিঝির। তিনি আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষক সংগঠন গ্রিন ফোরামের সদস্য।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফেসবুকে আবদুল্লাহ বিন আসাদ নামের এক আইডি থেকে ৪ মিনিট ৭ সেকেন্ডের ওই অডিও প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গতকাল বুধবার সকালে বিষয়টিকে ‘স্লিপ অব টাং (মুখ ফসকে বলা) ’দাবি করেন নাছির উদ্দীন।
ফাঁস হওয়া অডিওটিতে নাছির উদ্দীনকে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর হত্যার বিচার দাবিতে আন্দোলনকারী এক ছাত্রীকে শাসাতে শোনা যায়। এ ছাড়া সাজিদ ও আন্দোলনকারী নারী শিক্ষার্থীদের নিয়েওআপত্তিকর মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে অডিও ফাঁসের পর গতকাল সকালে নাছির উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন,‘আমি আল-কোরআন বিভাগের সভাপতি হিসেবে শহীদ সাজিদ আবদুল্লাহর জন্য বিভাগের ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে বিচার চেয়ে আন্দোলন করেছি।আমার অফিসে বসেই মামলা এন্ট্রি করেছি। প্রশাসনিকভাবে বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, ইবি থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু এরপরও বিভাগের অন্য শিক্ষকসহ আমার আরেকজন ছাত্রের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অসাবধানতাবশত কিছু শব্দচয়নে ভুল হয়েছে বলে আমি মনে করি। এ জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভঅডিওটি প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকে ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাছির উদ্দীনের এমন আপত্তিকর মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতি দিয়ে ওই শিক্ষকের বিচারের দাবি জানায় শাখা ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়ন। এ ছাড়া গতকাল বেলা ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনের শেষে ওই শিক্ষকের বরখাস্তসহ পাঁচ দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো সাজিদ আবদুল্লাহ হত্যার খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য প্রতিবাদ ও আন্দোলনে বাধা প্রদানকারীদের উদ্দেশ্য যাচাইয়ের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শিক্ষার্থীদের মতপ্রকাশের অধিকার ও আন্দোলনের সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষিত রাখা।
স্মারকলিপি নেওয়ার পর উপাচার্য অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক যেন এ ধরনের বক্তব্য না দেন, তোমাদের এ ব্যাপারে নিশ্চিত করছি। আর লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেব।’