ফিজিতে ২৬ বাংলাদেশি শ্রমিকের কষ্টের কথা শুনলেন প্রধানমন্ত্রী, নিলেন ব্যবস্থা
Published: 2nd, May 2025 GMT
ফিজির প্রধানমন্ত্রী সিটিভেনি রাবুকা দেশটির সেন্ট্রাল ডিভিশনের একটি স্থানীয় সুপারমার্কেটে কর্মরত ২৬ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের অভিযোগ সরাসরি শুনেছেন। শ্রমিকেরা আবাসস্থল ও খাবার নিয়ে কষ্টের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে কর্মসংস্থান ও অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রীকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাবুকা।
রাবুকা সম্প্রতি ওই শ্রমিকদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেন। শ্রমিকেরা তখন তাঁর কাছে অভিযোগ করেন, তাঁদের বসবাসের পরিবেশ অনুপযুক্ত, পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবারের সরবরাহ নেই এবং তাঁদের চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে।
রাবুকা বলেন, কোনো শ্রমিকের এমন অবস্থায় থাকা উচিত নয়, যেখানে তাঁদের মর্যাদার সঙ্গে আপস করতে হয়।
ফিজির প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের জন্য যা ন্যায্য, তা করার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ফিজির নাগরিকেরাও বিদেশে কাজ করছেন। আমরা চাই না তাঁরা কোথাও অন্যায় আচরণের শিকার হন বা অবিচারের মুখোমুখি হন। তেমনি ফিজিতে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের প্রতিও আমাদের একই রকম আচরণ করা উচিত।’
অভিযোগকারী কর্মীরা কিছুদিন ধরে ওই সুপারমার্কেটে কর্মরত। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, চলমান পরিস্থিতির কারণে তাঁরা ফিজিতে তাঁদের কাজের অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারছেন না।
জরুরি ভিত্তিতে শ্রমিকদের আবাসনব্যবস্থার উন্নতি এবং তাঁদের মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করার জন্য নিয়োগকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাবুকা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’