শরীয়তপুরের নড়িয়া নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ফয়জুল হাসান বাদল মুন্সী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক মনি দেওয়ান, জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্বাস হালদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বোরহান তফাদার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাপা তফাদার, সহসভাপতি মোস্তফা হাওলাদার, জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও ইউপি সদস্য নজু ছৈয়াল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আবুল বাশার খালাসী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক সিয়াম সিকদার, ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ছাত্তার চৌধুরী এবং ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মিন্টু ছৈয়াল।

এ সময় বিএনপির উপজেলা সভাপতি সামসুল আলম দাদন মুন্সী উপস্থিত ছিলেন। তাঁর পাশেই ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক বিএনপি নেতা বলেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার খুনি ফ্যাসিবাদী পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের একটি অঙ্গসংগঠনের প্রথম শ্রেণির নেতাদের নিয়ে বিএনপির উপজেলা সভাপতির বিএনপি কার্যালয় উদ্বোধনের বিষয়টি লজ্জাজনক। পরিতাপের বিষয় আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা স্টেজে অতিথিদের পাশে বসেছিলেন। পতিত হাসিনা সরকারের আমলে তারা বিএনপির নেতাকর্মীকে হয়রানি করেছেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি সামসুল আলম দাদন মুন্সী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোয় বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে দলীয় সাংগঠনিক নির্দেশনা অনুযায়ী এ ঘটনায় দায়ী সব নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা বিএনপি নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন জেলা ও উপজেলার অনেক বিএনপি নেতা। তাদের মতে, বিষয়টি বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বেইমানির শামিল।

নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে সভাপতির বিরুদ্ধে অনেকে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করে থাকেন এবং শনিবারের ঘটনাও সত্য। সভাপতি শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নিয়ে বিএনপির অফিস উদ্বোধন করেছেন, যা তাঁর নজরে পড়েছে। তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে বিষয়টি জেলা বিএনপিকে জানিয়েছেন। তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি সামসুল আলম দাদন মুন্সী বলেন, ‘আমি কোনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে নিয়ে দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করিনি। যদি কেউ আসে, সেটি তারা দেখতে বা আমাদের কথা শুনতে আসতে পারে।’

এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত রয়েছে, আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে নিয়ে কোনো সভা-সমাবেশ করা যাবে না। তিনি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতির সঙ্গে কথা বলবেন। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তবে অবশ্যই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দলের মহাসচিবের সঙ্গে কথা বলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ ন ত কর ম ক ব এনপ র স অন ষ ঠ ন উপস থ ত ন আওয় ম গঠন ক উপজ ল সদস য ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ: এয়ারগানের গুলিতে বিদ্ধসহ আহত ২০

গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্যের জের ধরে গোপালগঞ্জে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে এয়ারগানের গুলিতে বিদ্ধ হয়েছেন ছয় জন। এছাড়া সংঘর্ষে আরো ১৪ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চর শুকতাইল গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এয়ারগানের গুলিতে আহতরা হলেন- নয়ন শেখ (২৫), রায়হান সিকদার (৩৫), পারভেজ মোল্লা (৪৫), রুবেল মোল্লা (২৫), আনোয়ার শেখ (২২) ও মেহেদী হাসান (২৪)। এই ছয়জনসহ মোট ১২ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাবুল মোল্লার লোক আহম্মদ মোল্লা (৫২) ও হাফিজ মোল্লাকে (৫৪) পারভেজ মোল্লার লোকজন মারধর করে। গতকাল রাতে আহতাবস্থায় তাদেরকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার জের ধরে আজ সকালে চর শুকতাইল গ্রামে পারভেজ মোল্লার সাথে একই গ্রামের বাবুল মোল্লার লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়ে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ধরে চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ছয় জন এয়ারগানের গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনিচুর রহমান জানিয়েছেন, পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৪/৫ সামান্য আহত হয়েছে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় এখানো কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, “আমি সকালে ১০ জনের চিকিৎসা দিয়েছি। এরমধ্যে কয়েকজনের শরীর থেকে এয়ারগানের গুলি বের করতে পেরেছি। বাকীদের বের করতে পারিনি। তাদেরকে ভর্তি করা হয়েছে।”

ঢাকা/বাদল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ