নাটোরের গুরুদাসপুরে মতবিনিময় সভায় বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।  

শনিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে দিকে উপজেলার চাঁচকৈড় শিক্ষা সংঘ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে শটগানের গুলিতে পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুফি মো.

আবু সাঈদ ও বিএনপি কর্মী আফতাব হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। 

স্থানীয়রা জানান, বিকেলে শিক্ষা সংঘের মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কার্যক্রমে গতিশীলতা ও দলকে সংগঠিত করতে মতবিনিময় সভা শুরু হয়। সভার শেষ পর্যায়ে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে জেলা বিএনপির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল গ্রুপের নাজমুল করিম নজু প্রতিবাদ জানান। এ সময় উভয়পক্ষই উত্তিজিত হয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। একপর্যায়ে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।

গুরুদাসপুর পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু বলেন, ‘আমাদের দু’জন গুলিবৃদ্ধ হয়েছেন। পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকারের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার। তিনি বলেন, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ বিএনপি নেতাদের নাম উল্লেখ্য করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বক্তেব্যের শেষ দিকে প্রতিবাদ জানান নাজমুল করিম নজু। তখন উত্তেজিত হয়ে তাদের লোকজন আমাদের লোকজনের ওপরে হামলা করেন। তবে গুলি করার অভিযোগ সত্য নয়।’

জেলা বিএনপির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক মতবিনিময় সভার শেষ দিকে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। আমার কোনো সমর্থক গুলিবর্ষণের সঙ্গে জড়িত নয়।’

জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ বলেন, ‘হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়েন নাজমুল করিম নজু। এ সময় আমার সমর্থকরা প্রতিবাদ জানায়। তারপর কি হয়েছে আমার জানা নেই। কারণ আমি সভাস্থলে ছিলাম, বাইরে কি হয়েছিল, তা বলা সম্ভব নয়।’

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, বিএনপির মতবিনিময় সভায় নিজেদের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখান থেকে পুলিশ দুই রাউন্ড শটগানের খোসা উদ্ধার করেছে। বর্তমানে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ র ব এনপ র স প র ব এনপ র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে

প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্যেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।

সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জা​দুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।

আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ঘিরে এমন উপস্থাপনের প্রভাব নারীদের ওপরও পড়বে।

মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে জাতিসংঘের অনেকগুলো দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। তিনি বলেন, বুঝুক আর না বুঝুক বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনকে তড়িঘড়ি করে সমর্থন করে। কিন্তু এই কনভেনশনকে সমর্থন করেনি। সরকার বুঝেশুনেই সমর্থন করেনি। আগের সরকার বলেছে, বাংলাদেশে আদিবাসী নেই, এই সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না।

একটাই ধর্ম ও জাতিসত্তা থাকবে, এমন মনোভাব কাম্য নয় উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘কিসের ভয়ে আমরা দেশে ভিন্ন ধর্ম, চিন্তা ও জাতিসত্তার মানুষকে থাকতে দেব না? কে অধিকার দিয়েছে যে একটি মাত্র মতবাদ, চিন্তা, ভাষা জাতি ও ধর্ম থাকবে? রাষ্ট্রের জন্য এটা কাম্য হতে পারে না।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সমতল ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে খুশী কবির বলেন, অভ্যুত্থানের পরে আর নারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নারী কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কমিশনের কোনো কিছু গ্রহণ করা হয়নি। এর অর্থ সরকার নারীদের ভয় পায়। এই অবস্থা টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাই অধিকার আদায়ে নারীদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। এখনই উত্তম সময়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির ছবি: প্রথম আলো হেডিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ