মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ
Published: 17th, November 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এসব গর্তের পাশ দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারী ও যানবাহন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানানো হলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের দুই পাশে জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সড়কের পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার গর্তের গভীরতা এত বেশি যে, ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু, ট্রাকে আগুন
সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও, এর ওপরে নির্মিত পাকা সড়কটি সওজ বিভাগের আওতাধীন। এ সড়কটি ব্যবহার করে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর যানবাহন চলাচল করে।
স্থানীয় অটোরিকশা চালক রোবেল হোসেন বলেন, “নির্মাণের দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই সড়কের দুই পাশে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। একটু অসাবধান হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা।”
মোটরসাইকেল চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “দিনে কোনোভাবে পার হওয়া যায়, কিন্তু রাতের পরিস্থিতি থাকে ভয়ঙ্কর। কারণ, অনেক সময় দূর থেকে গর্ত দেখা যায় না। এই সড়কে খুব ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”
পিকআপ ভ্যানের চালক আব্দুর রহমান বলেন, “কয়েক বছর না যেতেই রাস্তা গর্তে ভরে গেছে। রাতের বেলায় গর্তগুলো বোঝা যায় না, তাই সব সময় আতঙ্ক নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”
কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। এখন গর্তের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা একাধিকবার জানিয়েছি।”
মতলব উত্তর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, “এই বেড়িবাঁধ শুধু মতলব নয়, পুরো অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক। তাই সওজ বিভাগের উদাসীনতা জনজীবনে ঝুঁকি তৈরি করছে। বর্ষার আগেই এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি।”
চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে। আমরা সড়কটি মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি।”
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, মতলব ব্রিজ থেকে বেড়িবাঁধের পূর্ব অংশে সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। পশ্চিম অংশ এখনও ঠিকাদারের দায়িত্বে আছে, তাদেরকেও মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) সেলিম শাহেদ বলেন, “বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও এর ওপরে থাকা পাকা সড়ক সওজ বিভাগের দায়িত্বে। বেড়িবাঁধের যদি কোথাও ক্ষতি হয়, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই; সড়ক সংস্কার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হয়।”
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন দ র ঘটন সওজ ব ভ গ ব যবস থ দ র ঘটন ন বল ন ধ সড়ক সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাবার ইচ্ছা পূরণে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে গেলেন প্রবাসী তরুণ
চাঁদপুরের সৌদিপ্রবাসী মেহেদী হাসানের (২৫) বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলেকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বিয়ে করাতে নিয়ে যাবেন। বাবার সেই ইচ্ছা পূরণ করলেন তিনি।
আজ শুক্রবার বিকেলে স্বজনদের নিয়ে ভাড়া করা হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে কনের বাড়িতে যান মেহেদী হাসান। বিয়ের পর নববধূকে হেলিকপ্টারে নিয়ে ফিরে আসেন নিজ বাড়িতে। এ ঘটনায় উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী।
মেহেদী হাসান মতলব উত্তর উপজেলার এমএম কান্দি গ্রামের আবদুল বারেক দেওয়ানের ছেলে। মেহেদীর নববধূর নাম আবিদা সুলতানা। তিনি একই উপজেলার রুহিতারপাড় গ্রামের মো. আল আমিনের মেয়ে। আজ শুক্রবার বিকেল চারটায় কনের বাড়িতে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক বছর আগে মেহেদী হাসান সৌদি আরবে যান। বিয়ে করার জন্য কিছুদিন আগে বাড়ি ফেরেন। কনে দেখা ও বিয়ের তারিখ ঠিক হয়। আজ শুক্রবার রুহিতারপাড় গ্রামের একটি মাঠে বরপক্ষকে নিয়ে হেলিকপ্টারটি নামলে স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করেন। হেলিকপ্টার থেকে নেমে স্বজনদের নিয়ে মেহেদী হাসান হেঁটে কনের বাড়িতে যান। বিয়ের পর নববধূকে নিয়ে হেলিকপ্টারটি তাঁর গ্রামে পৌঁছালে ভিড় করেন এলাকাবাসী।
মেহেদী হাসান বলেন, তাঁর বাবার এই ইচ্ছা পূরণ করতে পেরে তিনি ও তাঁর পরিবার খুবই আনন্দিত। সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন তিনি।
মেহেদী হাসানের বাবা আবদুল বারেক দেওয়ান বলেন, ইচ্ছা ছিল ছেলে বড় ও প্রতিষ্ঠিত হলে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে তাকে বিয়ে করাবেন। আজ তাঁর সে ইচ্ছা পূরণ হলো। এতে তিনি খুবই আনন্দিত।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, ঘটনা জানার পর হেলিপ্যাড এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।