মানিকগঞ্জে স্কুলবাসে আগুনে দগ্ধ চালক মারা গেছেন
Published: 17th, November 2025 GMT
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় স্কুলবাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দগ্ধ চালক পারভেজ খান (৪৫) মারা গেছেন। আজ সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত চালকের ছেলে সুমন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিবালয় থানা-পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জ শহরে দি হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের বাসে করে স্কুলে আনা-নেওয়া করা হতো। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহাসড়কের পাশে উপজেলার ফলসাটিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পদচারী–সেতুর নিচে বাসটি পার্কিং করা হয়। পাহারার জন্য চালক পারভেজ বাসের ভেতরে ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত দেড়টার দিকে দুর্বৃত্তরা হঠাৎ বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাসের ভেতরে থাকা চালক পারভেজ গুরুতর দগ্ধ হন। খবর পেয়ে বরঙ্গাইল হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং তাঁকে উদ্ধার করে জেলা সদরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। পরে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। উন্নত চিকিৎসার জন্য চালককে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বাসের মালিক আশরাফুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুনমানিকগঞ্জে স্কুলবাসে অগ্নিসংযোগ, ঘুমন্ত চালক দগ্ধ১৪ নভেম্বর ২০২৫আজ বেলা ১১টার দিকে বাসচালকের ছেলে সুমন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর বাবাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। দুই দিন তাঁর সিসিইউতে চিকিৎসা চলে। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। আজ সকাল পৌনে ৯টার দিকে সেখানে বাবার মৃত্যু হয়।’
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘দগ্ধ বাসচালক মারা গেছেন বলে জেনেছি। এর আগে এ ঘটনায় ছাত্রলীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত