খ্যাতিমান চিকিৎসক অধ্যাপক মতিউর রহমান আর নেই
Published: 17th, November 2025 GMT
বাংলাদেশে নেফ্রোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক মতিউর রহমান আর নেই। ১৪ নভেম্বর গভীর রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
অধ্যাপক মতিউর রহমান আইপিজিএমআরে (বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) নেফ্রোলজি বিভাগের প্রথম প্রধান ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ কিডনি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং দেশের প্রথম কিডনি প্রতিস্থাপন কার্যক্রম গড়ে তোলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন।
নাটোরের নাজিরপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া এই চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন এবং যুক্তরাজ্যে নেফ্রোলজিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। ১৯৭৪ সালে পরিবারসহ তিনি দেশে ফিরে আসেন। কারণ, নব্য স্বাধীন বাংলাদেশে মানুষের সেবা করতেই নিজেকে নিবেদিত করতে চেয়েছিলেন।
বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মতিউর রহমান দীর্ঘ সময় ধরে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
অধ্যাপক মতিউর রহমান দুই কন্যা ও তাঁদের জামাতা, দুই পুত্র ও দুই পুত্রবধূ, চার নাতি-নাতনি এবং অসংখ্য সহকর্মী-শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
অধ্যাপক মতিউর রহমানের জানাজা আগামীকাল মঙ্গলবার বাদ জোহর গুলশানের আজাদ মসজিদে (গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদ) অনুষ্ঠিত হবে। শোকসন্তপ্ত পরিবার মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় সবার দোয়া প্রার্থনা করেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত