নাটোরে বিএনপির মতবিনিময় সভা ঘিরে সংঘর্ষ-গুলি, মামলা করেনি কোনো পক্ষ
Published: 11th, May 2025 GMT
নাটোরের গুরুদাসপুরে বিএনপির মতবিনিময় সভা ঘিরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চাঁচকৈড় শিক্ষা সংঘ পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত কোনো পক্ষ মামলা করেনি।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল থেকে শিক্ষা সংঘের মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপি কমিটির কার্যক্রমে গতিশীলতা ও দলকে সংগঠিত করার লক্ষ্য স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে জেলা বিএনপি নেতাদের মতবিনিময় সভা চলছিল। সভায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আজিজ নেতা–কমীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা বিগত দুর্দিনে দুঃসময়ে আন্দোলন–সংগ্রামে কাউকেই খুঁজে পাইনি।’ এ সময় প্রতিবাদ জানান পৌর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি নাজমুল করিম। একপর্যায়ে আবদুল আজিজের লোকজন নাজমুলকে ঘিরে ধরেন।
এ ঘটনার জের ধরে সভা মঞ্চের বাইরে থাকা জেলা বিএনপির সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামালের সমর্থকদের সঙ্গে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আজিজের সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি শুরু হয়। এরই একপর্যায়ে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষসহ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুফি মো.
ওই সংঘর্ষের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান খান (বাবুল চৌধুরী) দুই পক্ষের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ান এবং তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান খান (বাবুল চৌধুরী) বলেন, ‘জেলা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে স্থানীয় নেতা–কর্মীদের মতবিনিময় সভা ঘিরে গুরুদাসপুরে যা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের মৌখিকভাবে সতর্ক করেছি। পরে দলের হাইকমান্ডের সঙ্গে আলোচনা করে হয়তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।’
গুরুদাসপুর থানা–পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসমাউল হক বলেন, ‘বিএনপির মতবিনিময় সভায় নিজেদের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সেখানে শটগানের দুটি গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুজন আহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
সাদাপাথর লুটে মদদদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন
সিলেটে সাদাপাথর লুটের পেছনে দায়ী ও মদদদাতা রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘হাওর ও নদী রক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এতে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার লোকজন অংশ নেন।
বক্তারা জানান, নিরীহ শ্রমিকদের হয়রানি না করে প্রকৃত লুটেরাদের ধরতে হবে। এই সম্পদ রক্ষায় যাঁদের অবহেলা আছে, তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
দেশের অন্যতম দর্শনীয় একটি স্থান থেকে প্রকাশ্যে পাথর লুটের ঘটনায় মানুষ বিস্মিত জানিয়ে বক্তারা বলেন, লুটেরাদের সঙ্গে প্রশাসনের যোগসাজশ ছিল। রাজনৈতিকভাবে এখন যাঁদের বিরুদ্ধে লোকদেখানো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে চুনোপুঁটি। রাঘববোয়ালদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সেখানে রাজনৈতিক সমঝোতা আছে, দায়িত্বশীলদের যোগসাজশ আছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর সেটি লোকজন দেখতে পেয়েছেন।
এ ছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ টাঙ্গুয়ার হাওর এখন অভিভাবকহীন। সেখানেও প্রকাশ্যে মাছ আহরণ ও গাছ কাটা হয়। সেখানেও পরিবেশ, প্রকৃতি ও মানুষের জীবন–জীবিকা সংকটের মুখে। এই হাওর রক্ষায় মুখে মুখে বড় কথা না বলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল হকের সভাপতিত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ রাজু আহমেদ। এতে বক্তব্য দেন সামাজিক সংগঠন ‘জনউদ্যোগ’–এর আহ্বায়ক রমেন্দ্র কুমার দে, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হাসান আতাহের, জেলা উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আইনজীবী দীপঙ্কর বনিক, মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।