রাউজানে শোয়ার ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল গৃহবধূর লাশ
Published: 24th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে শোয়ার ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল এক গৃহবধূর লাশ। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সন্দ্বীপপাড়া গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত গৃহবধূর নাম রাশেদা বেগম (৪০)। তিনি ওই গ্রামের একসময়ের ওমানপ্রবাসী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের স্ত্রী। রাশেদা সন্দ্বীপ উপজেলার মুসাপুর গ্রামের মোস্তাফা কামালের মেয়ে।
নিহত গৃহবধূর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাশেদার স্বামী ইব্রাহিম একসময় ওমানপ্রবাসী ছিলেন। চার–পাঁচ বছরে আগে স্বামী দেশে চলে আসেন। এরপর তিনি কৃষিকাজ করে সংসার চালাচ্ছিলেন। তাঁদের সংসারে ১৪ বছর ও ৫ বছর বয়সী ২টি ছেলেসন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে পরিবার সূত্রে।
রাশেদার স্বজনদের অভিযোগ, স্বামীর সঙ্গে রাশেদার নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া হতো। দুই-একবার স্ত্রী রাশেদাকে মারধরও করেন স্বামী ইব্রাহিম, যা নিয়ে ইউপি কার্যালয়ে এবং থানায় সালিসবৈঠক হয়।
তবে স্ত্রী রাশেদা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন বলে দাবি করেন তাঁর স্বামী মুহাম্মদ ইব্রাহীম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রীর চার দিন ধরে পেটে ব্যথা হচ্ছিল, বমিও হয়েছে। তখন তিনি স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়ে ওষুধ নেন। পরে ল্যাবে নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করান। এর মধ্যে আজ ভোরে আবারও পেটব্যথা ও বমি শুরু হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এর মধ্যে তিনি মারা যান।
হাসপাতালে কেন নেননি, জানতে চাইলে রাশেদার স্বামী ইব্রাহীম বলেন, তাঁর স্ত্রী হাসপাতালে যেতে রাজি হননি। স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।
জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনা জানার পর আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ঘটনার সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে ওই গৃহবধূর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ হবধ র
এছাড়াও পড়ুন:
লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি-মরদেহে হামলা, নারীসহ আহত ৯
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির সময় চাহিদামতো অর্থ ও মালামাল না পেয়ে সশস্ত্র ডাকাতরা মরদেহের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় ডাকাতের হামলায় নারীসহ ৯ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনদের চোখের সামনে মৃত ব্যক্তির ওপর আঘাতের এই দৃশ্য এলাকাজুড়ে সৃষ্টি করেছে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক। স্থানীয়দের দাবি, এমন জঘন্য ও ঘৃণিত কাজ আগে কখনো দেখেননি তারা।
ডাকাতের হামলায় আহতরা হলেন- গাড়ির চালক মো. ফিরুজ মিয়া, গাড়ির মালিক মো. খলিল মিয়া, নিহতের স্বজন রাসেল মিয়া, ছালেক মিয়া, নাহিদ মিয়া, মো. আলমগীর মিয়া, মো. সালাউদ্দিন, আলেয়া বেগম ও আলী নেওয়াজ মিয়া।
ভুক্তভোগীদের স্বজনদের ভাষ্যমতে, পূর্বভাগ ইউনিয়নের মুকবুলপুর গ্রামের ছবদর আলী নামে এক ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার মিরপুর আহসানিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মারা যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই ঢাকা থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে ফেরার পথে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের তিলপাড়া এলাকায় আসলে সশস্ত্র ডাকাতরা সড়কে গাছ ফেলে পথ রোধ করে গাড়ি আটক করেন। এরপর গাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর করা হয়। মরদেহের সঙ্গে থাকা স্বজনদের কাছ থেকে ৯টি মুঠোফোন ও নগদ অর্ধলাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ডাকাত দল।
ডাকাতদের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ ও মালামাল না পাওয়ায় মরদেহের ওপরও হামলা করা হয় বলে দাবি করেন নিহতের ছেলে মো. আলমগীর মিয়া।
আলমগীর মিয়া বলেন, টাকা পয়সা নিছে সেটা এতোটা কষ্টদায়ক না। কিন্তু আমার বাবা একটি মৃত লাশ। তার ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বাবার লাশ দাফন করে আইনগত পদক্ষেপের দিকে অগ্রসর হব।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মুসলে উদ্দিন বলেন, ভোর সকাল এবং সন্ধ্যায় এই রাস্তাটি ভুতুড়ে জায়গায় পরিণত হয়। এই সড়কে কিছুদিন পরপর ডাকাতি হয়। রাতের চেয়ে বেশি দিনে হয়।
আজহারুল ইসলাম দুর্জয় বলেন, ঢাকা থেকে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারলেও এই সড়কটিতে আসার পর আতঙ্কে সময় কাটে।
স্থানীয় আইনজীবী মো. রেজাউল হক আমজাদ বলেন, এটি কেবল ডাকাতি নয়, লাশবাহী গাড়িতে হামলা। যেখানে মর্যাদার শেষ চিহ্নটুকুও রক্ষা পায়নি। স্বজন হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়া একটি পরিবারের ওপর এমন ডাকাতির হামলা খুবই ন্যক্কারজনক।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, এ এলাকাটি ঝুঁকিপূর্ণ। এর আগেও একাধিকবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা নাসরিন বলেন, লাশবাহী গাড়িতে ডাকাতি খুবই পীড়াদায়ক।