লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলায় আশরাফ উদ্দিন নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০০ জনকে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কমলনগর থানায় মামলাটি করা হয়। মামলার পর অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এর আগে গতকাল দুপুরে দিকে কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে হ্যান্ডকাপ লাগানো অবস্থায় আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। আশরাফ কমলনগর উপজেলার চর কাদিরীয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

পুলিশ বলছে, আশরাফ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, হত্যাচেষ্টা ও নাশকতা মামলার পলাতক আসামি। তাঁকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলাটি করেছেন কমলনগর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) প্রদীপ চন্দ্র দাস। মামলায় আশরাফ উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, আশরাফ উদ্দিনকে কমলনগর থানার এএসআই প্রদীপ চন্দ্র দাস ও কনস্টেবল আরজু গ্রেপ্তার করেন। পরে তাঁর হাতে হ্যান্ডকাপ লাগানো হয়। আশরাফকে গ্রেপ্তারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কয়েক শ নারী-পুরুষ একত্র হয়ে পুলিশের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা হ্যান্ডকাপসহ আশরাফকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। পরে খবর পেয়ে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে পুলিশের হ্যান্ডকাপটি উদ্ধার করেন।

ওসি তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে অভিযান চালিয়ে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কমলনগর উপজ ল কমলনগর থ ন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ