লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে হ্যান্ডকাফসহ আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজু নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিয়েছেন স্থানীয় জনতা। 

গতকাল শনিবার (২৪ মে) দুপুরে উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে চরঠিকা গ্রামের রাজুর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজু চরকাদিরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজুকে দুপুর ১২টার দিকে চরকাদিরা ইউনিয়নের চরঠিকা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেন কমলনগর থানার এএসআই প্রদীপ চন্দ্র দাস। এসময় এলাকার সহস্রাধিক নারী-পুরুষ একত্রিত হয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে রাজুকে পুলিশের হাত থেকে হ্যান্ডকাফসহ ছিনিয়ে নেন এবং পুলিশ সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। পরে হ্যান্ডকাফসহ আওয়ামী লীগ নেতা রাজু ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

খবর পেয়ে কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তোহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে যান। সেখানে তিনি উত্তেজিত জনতাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, জেএসডির যুব পরিষদ নেতা ও আওয়ামী লীগ নেতা রাজুর নিকটআত্মীয় খোকন পরবর্তীতে হ্যান্ডকাফটি উদ্ধার করে থানা পুলিশের কাছে জমা দেন।

কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তোহিদুল ইসলাম বলেন, “আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজু ডেভিল হান্টের আসামি। দুপুরে পুলিশ ওই এলাকায় মাদক মামলার এক আসামিকে ধরতে অভিযানে যায়। এসময় পুলিশ সদস্যরা আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ উদ্দিন রাজন রাজুকে দেখতে পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের হাত থেকে রাজনকে হ্যান্ডকাফসহ ছিনিয়ে নেয়।”

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (কমলনগর-রামগতি) মোহাম্মদ রকিবুল হাসান পিপিএম বলেন, “আওয়ামী লীগ নেতা রাজনকে গ্রেপ্তারের পর বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের হাত থেকে হ্যান্ডকাফসহ রাজনকে ছিনিয়ে নেয়। তাকে ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে।” 

তবে পুলিশ কীভাবে হ্যান্ডকাফ উদ্ধার করল এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, স্থানীয়রা হ্যান্ডকাফটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে তিনি কারো নাম পরিচয় জানাননি।

ঢাকা/লিটন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘মব সন্ত্রাস’ নিয়ে বিবৃতি ঢাবির ৭১ শিক্ষকের

‘গত কয়েক মাসে সারাদেশে মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে’ দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ জন শিক্ষক। গতকাল বুধবার ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক’ নামে বিবৃতিটি পাঠানো হয়। তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগপন্থি নীল দলের সঙ্গে যুক্ত। 

 এটি সমন্বয় করেন নীল দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রফিক শাহরিয়ার, নীল দলের সদস্য ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক বাহাউদ্দীন, সাবেক সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল মুহিত, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসান প্রমুখ।

এ বিষয়ে অধ্যাপক রফিক শাহরিয়ার সমকালকে বলেন, ‘প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ নামে আমাদের একটি গ্রুপ আছে। কিছুদিন আগে শিক্ষকরা যখন বিপদে পড়েন, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করি। আমরা গ্রুপে নানা বিষয়ে আলোচনা করি। যাদের নাম উল্লেখ আছে, তাদের প্রত্যেকের সম্মতি নিয়ে বিবৃতিটি দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, তারা নীল দলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেননি। সাধারণ শিক্ষক সমাজের ব্যানারে এটি দিয়েছেন। 

এদিকে বিবৃতিতে নাম থাকা নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার সমকালকে বলেন, ‘দলের তো (নীল দল) এখন অস্তিত্ব নেই। তবুও কয়েকজন উদ্যোগ নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। আমি সম্মতি দিয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের তো দায় রয়েছে।’ 

বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত কয়েক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে মব সন্ত্রাসের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। এতে শুধু মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতিই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। মুক্তবুদ্ধি চর্চার সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের এসব ঘটনায় তারা খুবই উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত। তারা বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ