দেশপ্রেম জন্মগত নয়, এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠে: বাঁধন
Published: 26th, May 2025 GMT
অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এজেন্ট বলে আখ্যা দিয়েছে একটি পক্ষ। পরে বিষয়টি পরিস্কার করেছেন অভিনেত্রী নিজেই। বাঁধানের দাবি, তাকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’সহ বিভিন্ন সংস্থার এজেন্ট বলে ট্রল করা হচ্ছে। একদিন পরে আজ দেশপ্রেম নিয়ে কথা বললেন তিনি।
সোমবার সামাজিক মাধ্যমে ‘আমার স্বীকারোক্তি’ শিরোনামে একটি পোস্ট করেন বাঁধন। বলেন, দেশপ্রেম জন্মগত নয়, এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠে। তিনি শুধু বাংলাদেশের এজেন্ট।
বাঁধন লিখেছেন, ‘এক প্রভাবশালী ব্যক্তি একবার আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তুমি কবে থেকে এত দেশপ্রেমিক হয়ে উঠলে?’ কারণ, আমি তখন প্রায়ই দেশের কথা বলছিলাম। সবসময় দেশের সমস্যা নিয়ে তাকে কথা বলতাম। আর তিনি বুঝতে পারছিলেন—এই বিষয়গুলো আমার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কতটা গভীর প্রভাব ফেলছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, “আমার দেশপ্রেমের শিকড় অনেক গভীরে। দেশপ্রেমের সবচেয়ে বড় উৎস আমার বাবা। তিনি আমার অনুপ্রেরণার মানুষ ছিলেন। বাবা একেবারেই দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তবে পড়াশোনায় ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ভর্তি হন। বাবার জন্য এ বিরল সাফল্য।’
‘তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে নেদারল্যান্ডসে মাস্টার্স করতে যান। সেখানে ভালো বেতনের চাকরির সুযোগ ছিল। স্থায়ীভাবে থেকে যাওয়ারও সুযোগ ছিল। তবু তিনি দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। মা তখন কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। মা আমাদের জন্য একটু আরামদায়ক জীবন চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবা সবসময় একটি কথা বলতেন, ‘আমি এই দেশের অর্থে পড়াশোনা করেছি। এখন সময় এসেছে ঋণ শোধ করার। যদি শুধু ডাল-ভাত খেয়ে থাকতে হয়, তবুও আমি এই দেশেই থাকব।” যা অভিনেত্রী বাঁধনের জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়।’
এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই এই কথা শুনে এসেছি। আর এ কথাগুলোই আমাকে গড়ে তুলেছে। বাবা অনেক বছর ধরে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের সেবা করেছেন। তার জীবনযাপন ও মূল্যবোধ দেখে আমার মনেও এর প্রভাব পড়েছে।’
সবশেষে অভিনেত্রী লিখেছেন, “দেশপ্রেম জন্মগত নয়, এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ওঠে। আর সেই সময়ের মধ্য দিয়েই আমি আমার দেশকে গভীরভাবে ভালোবেসে ফেলেছি। এই যাত্রায় আমার পিতা ছিলেন আমার প্রধান পথপ্রদর্শক। পাশাপাশি আমি আরও অনেক দেশপ্রেমিক মানুষের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি, যারা নিঃস্বার্থভাবে তাদের দেশকে ভালোবাসেন।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল