রাজবাড়ীতে বই পড়া প্রতিযোগিতা, 'বইয়ের পাতায় জীবন'
Published: 26th, May 2025 GMT
শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বই পড়া প্রতিযোগিতা ‘বইয়ের পাতায় জীবন’। রাবেয়া কাদের স্মৃতি পাঠাগারের সহযোগিতায় শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘জ্ঞানালোকে প্রদীপ্ত হোক প্রজন্মের মেধা’ শীর্ষক এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত আসরের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উছেন মে। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমকালের সহকারী সম্পাদক সাইফুর রহমান তপন, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরেশ চন্দ্র বিশ্বাস, রাবেয়া কাদের স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম ও সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক মো.
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। উদ্বোধন পর্বে বক্তৃতা করেন প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অ্যাডভেকেট দেবাহুতি চক্রবর্তী, রাজবাড়ীর সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজা খানম, রাজবাড়ী সুহৃদ উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক আহসান হাবীব প্রমুখ। এ পর্ব সঞ্চালনা করেন রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের সাধারণ সম্পাদক রবিউল রবি।
প্রতিযোগিতা শেষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী পূজা দাস, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সাহিত্য পোদ্দার, শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী আয়শা সিদ্দিকা, আরএসকে ইনস্টিটিউশনের ছাত্রী গ্রেস স্তুতি হালদার, অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র হাসিবুল হাসান সূর্য।
শিক্ষকরা কীভাবে শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, এ বিষয়ে শিক্ষকরা বলেন, বই জ্ঞানের প্রদীপ। বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। এখন থেকে তারা শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাবেন। এ পর্বে বক্তব্য দেন অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক গোলাম সারওয়ার, আরএসকে ইনস্টিটিউশনের সহকারী প্রধান শিক্ষক চায়না রানী সাহা, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওলিউল আজম তৈমুর, শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক তপন কুমার পাল ও রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহেদ আলী।
রাজবাড়ী সুহৃদ উপদেষ্টা ও সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যে যত বেশি বই পড়বে সে তত আলোকিত হবে। এভাবেই বইয়ের পাতায় জীবন ফুটে উঠবে।
প্রধান অতিথি রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উছেন মে বলেন, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পায়নি তারা মন খারাপ করবে না। রাজবাড়ী জেলায় এ রকম একটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য সুহৃদ সমাবেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নিঃসন্দেহে এমন প্রতিযোগিতা মেধা ও মননের ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল কাজে যাতে মনোনিবেশ করে সে দিকে সবারই লক্ষ্য রাখা উচিত।
সাইফুর রহমান তপন বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মঞ্চে এসে যে বক্তৃতা দিয়েছে তা আমাদের খুবই আশান্বিত করেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে খুবই অবাক হয়েছি। এত চমৎকার করে তারা উপস্থাপন করেছে, যুক্তি উপস্থাপন করেছে। স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে কথা ডেলিভারি দিয়েছে যা সত্যিই অবাক করার মতে। একটা কথা চালু আছে, এখনকার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে না। কিন্তু এসব ছেলেমেয়েকে দেখে মনে হয়েছে তারা যুক্তির চর্চাও করে। সমকাল মানুষকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছে। যত সংকটই থাকুক সমকাল এ কাজগুলো করে যাবে। সবকিছু মিলিয়ে প্রাণবন্ত পরিবেশ লক্ষ্য করলাম। এই প্রাণবন্ত পরিবেশকে ধরে রাখতে হবে। আমাদের আশাবাদী হওয়ার মতো অনেক কিছুই রয়েছে।
জেলার পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে তিনজন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়, আটজনকে বিশেষ পুরস্কার এবং অংশগ্রহণকারী সবাইকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সমকালের রাজবাড়ী প্রতিনিধি সৌমিত্র শীল চন্দন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ প রস ক র অন ষ ঠ সরক র সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী
অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।
পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।
ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।