শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো বই পড়া প্রতিযোগিতা ‘বইয়ের পাতায় জীবন’। রাবেয়া কাদের স্মৃতি পাঠাগারের সহযোগিতায় শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘জ্ঞানালোকে প্রদীপ্ত হোক প্রজন্মের মেধা’ শীর্ষক এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত আসরের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উছেন মে। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমকালের সহকারী সম্পাদক সাইফুর রহমান তপন, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরেশ চন্দ্র বিশ্বাস, রাবেয়া কাদের স্মৃতি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম ও সুহৃদ সমাবেশের বিভাগীয় সম্পাদক মো.

আসাদুজ্জামান। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রতিযোগিতা প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রব সুমন। 

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। উদ্বোধন পর্বে বক্তৃতা করেন প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অ্যাডভেকেট দেবাহুতি চক্রবর্তী, রাজবাড়ীর সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজা খানম, রাজবাড়ী সুহৃদ উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক আহসান হাবীব প্রমুখ। এ পর্ব সঞ্চালনা করেন রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের সাধারণ সম্পাদক রবিউল রবি। 

প্রতিযোগিতা শেষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী পূজা দাস, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সাহিত্য পোদ্দার, শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী আয়শা সিদ্দিকা, আরএসকে ইনস্টিটিউশনের ছাত্রী গ্রেস স্তুতি হালদার, অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র হাসিবুল হাসান সূর্য। 

শিক্ষকরা কীভাবে শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে পারেন, এ বিষয়ে শিক্ষকরা বলেন, বই জ্ঞানের প্রদীপ। বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। এখন থেকে তারা শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাবেন। এ পর্বে বক্তব্য দেন অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক গোলাম সারওয়ার, আরএসকে ইনস্টিটিউশনের সহকারী প্রধান শিক্ষক চায়না রানী সাহা, রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওলিউল আজম তৈমুর, শেরেবাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক তপন কুমার পাল ও রাজবাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহেদ আলী। 

রাজবাড়ী সুহৃদ উপদেষ্টা ও সাবেক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যে যত বেশি বই পড়বে সে তত আলোকিত হবে। এভাবেই বইয়ের পাতায় জীবন ফুটে উঠবে। 
প্রধান অতিথি রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উছেন মে বলেন, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাটাই বড় কথা। যারা পুরস্কার পায়নি তারা মন খারাপ করবে না। রাজবাড়ী জেলায় এ রকম একটি প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য সুহৃদ সমাবেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নিঃসন্দেহে এমন প্রতিযোগিতা মেধা ও মননের ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল কাজে যাতে মনোনিবেশ করে সে দিকে সবারই লক্ষ্য রাখা উচিত। 

সাইফুর রহমান তপন বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মঞ্চে এসে যে বক্তৃতা দিয়েছে তা আমাদের খুবই আশান্বিত করেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনে খুবই অবাক হয়েছি। এত চমৎকার করে তারা উপস্থাপন করেছে, যুক্তি উপস্থাপন করেছে। স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে কথা ডেলিভারি দিয়েছে যা সত্যিই অবাক করার মতে। একটা কথা চালু আছে, এখনকার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে না। কিন্তু এসব ছেলেমেয়েকে দেখে মনে হয়েছে তারা যুক্তির চর্চাও করে। সমকাল মানুষকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছে। যত সংকটই থাকুক সমকাল এ কাজগুলো করে যাবে। সবকিছু মিলিয়ে প্রাণবন্ত পরিবেশ লক্ষ্য করলাম। এই প্রাণবন্ত পরিবেশকে ধরে রাখতে হবে। আমাদের আশাবাদী হওয়ার মতো অনেক কিছুই রয়েছে। 

জেলার পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতাধিক শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে তিনজন প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়, আটজনকে বিশেষ পুরস্কার এবং অংশগ্রহণকারী সবাইকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সমকালের রাজবাড়ী প্রতিনিধি সৌমিত্র শীল চন্দন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ প রস ক র অন ষ ঠ সরক র সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

দুবাই থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ৫৭ মামলার আসামি

চট্টগ্রামে বাড়ি। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৫৭টি মামলা। তবে তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন দুবাইয়ে। গ্রেপ্তার এড়াতে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে ফিরছিলেন। এরপরও তাঁর রক্ষা হয়নি তাঁর। সিলেটে বিমানবন্দর থেকেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন পলাতক এই আসামি।

গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে গ্রেপ্তার হওয়া এই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রুহুল আমিন (৫৫)। বিমানবন্দরে নিয়োজিত ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আজ রোববার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বাড়ি পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পাইরোল গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুস সালাম। চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাইয়ে ফিশারিঘাটে মাছের আড়ত ছিল রুহুল আমিনের।

পুলিশ জানায়, মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর বেশির ভাগই চেক প্রতারণার অভিযোগে করা। এর মধ্যে ১০টি মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে। বাকি মামলা বিচারাধীন। বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরোয়ানাভুক্ত এই আসামি সাজা ও গ্রেপ্তার এড়াতে দুবাইয়ে পালিয়ে যান। পাঁচ বছর পর সেখান থেকে গোপনে সিলেট হয়ে দেশে ফিরছিলেন তিনি।

পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, পটিয়া থানার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার রুহুল আমিনকে গতকাল রাতেই সিলেট থেকে পটিয়ায় নিয়ে আসা হয়। এরপর আজ সকালে পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ