২০৩১ সাল পর্যন্ত বার্সায় ইয়ামাল, হলেন সর্বোচ্চ বেতনভুক্ত খেলোয়াড়
Published: 28th, May 2025 GMT
বার্সেলোনার হৃদয় যেন আজ নতুন করে আলোয় ভরে উঠেছে। যিনি আলো জ্বালিয়েছেন, তিনি ১৭ বছরের বিস্ময়বালক লামিনে ইয়ামাল। কাতালান ক্লাবটি তাদের এই উঠতি রত্নকে ২০৩১ সালের জুন পর্যন্ত বাঁধা পড়িয়েছে এক নবায়িত চুক্তির সুতোয়। এ যেন শুধু একটি স্বাক্ষর নয়, বার্সেলোনার ভবিষ্যৎ স্বপ্নে আঁকা এক উজ্জ্বল রূপরেখা।
মাত্র সাত বছর বয়সে লা মাসিয়ার ঘরদুয়ার পেরিয়েছিলেন ইয়ামাল। চোখেমুখে ছিল স্বপ্ন, আর পায়ে ছিল জাদু। সেই শিশুটি আজ বিশ্বের ফুটবল মানচিত্রে নিজের নাম লিখিয়েছেন সাহসে, দক্ষতায় আর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে। ২০২৩ সালের এক উজ্জ্বল এপ্রিল সন্ধ্যায়, ১৫ বছর বয়সে প্রথমবার সিনিয়র দলে পা রাখেন তিনি। এরপর থেকে আর থেমে থাকেনি তার উত্থানের স্রোত।
এ পর্যন্ত ১০৬ ম্যাচে ২৫টি গোল আর ৩৪টি অ্যাসিস্ট— এই সংখ্যাগুলোই বলে দেয় ইয়ামাল শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবতার নাম। ২০২৪-২৫ মৌসুমে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বার্সেলোনার বিজয়ের অন্যতম কারিগর। ৫৫ ম্যাচে ১৮ গোল এবং ২৫ অ্যাসিস্টে যেভাবে তিনি মাঠে ঝড় তুলেছেন, তা কোচ থেকে সমর্থক, সবাইকে বিস্মিত করেছে।
আরো পড়ুন:
বিদায়ী রাতে নতুন যুগের ইঙ্গিত রিয়ালের
এল ক্লাসিকো: প্রথমার্ধেই ৬ গোল
এই অসাধারণ ফর্মের পুরস্কারও মিলেছে যথাযোগ্যভাবে। চুক্তি নবায়নের পাশাপাশি তিনি হয়েছেন ক্লাবের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড়দের একজন। তার বার্ষিক আয় এখন ২৬ মিলিয়ন ইউরো! অর্থের থেকেও বড় কথা, ক্লাবের আস্থা, ভবিষ্যতের রাশ তার হাতে তুলে দেওয়ার স্পষ্ট বার্তা।
বার্সেলোনার সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা এবং ক্রীড়া পরিচালক ডেকো একবাক্যে বলছেন, ‘‘এই চুক্তি আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি, ইয়ামাল আমাদের আগামী দিনের প্রতীক।’’
আজকের এই চুক্তি শুধু একটি ফর্মাল আনুষ্ঠানিকতা নয়, এ এক বিশ্বাসের বন্ধন। বার্সা জানিয়ে দিলো ইয়ামাল কেবল তাদের বর্তমান নয়, তিনিই কাতালুনিয়ার ফুটবল ভবিষ্যতের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প য ন শ ফ টবল ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।