বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও টানা বৃষ্টির প্রভাবে বাগেরহাটের নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বুধবার (২৮ মে) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনব্যাপী ভারি বৃষ্টিপাত ও জোয়ারে বাগেরহাট পৌরসভার রাহাতের মোড়, পুরাতন বাজার, কাঁচাবাজার এলাকা, মোরেলগঞ্জ পৌরসভার প্রধান বাজার ও মোংলা শহরের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে দরাটানা নদীর পানি বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপরে, বলেশ্বর নদী বিপদসীমা ছুঁয়েছে এবং পশুর নদীর পানি ১ দশমিক ১৫ মিটার উপরে রেকর্ড করা হয়েছে। জোয়ারের সময় পানি স্বাভাবিকের তুলনায় দুই থেকে আড়াই ফুট পর্যন্ত বেশি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মো.

আল বিরুনী জানান, নদ-নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টি, মেঘনায় পানি বৃদ্ধি  

ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে বরগুনার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত 

মোংলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে, যার প্রভাবে বাগেরহাট জেলায় হালকা থেকে মাঝারি এবং কিছু এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটি আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি থাকলেও মোংলা বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান। তিনি জানান, আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। ফলে পণ্য খালাস ও পরিবহনসহ বন্দরের সব কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে। 

ঢাকা/শহিদুল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব গ রহ ট নদ র প ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ