জিয়াউর রহমানকে শুধু কোনো একক দলের ভাবা উচিত নয়: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
Published: 30th, May 2025 GMT
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে শুধু কোনো একক দলের ভাবা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে ভুল করেছে, আশা করি বিএনপি সেই ভুল করবে না।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামে (টিআইসি) শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। জিয়া স্মৃতি জাদুঘর-চট্টগ্রাম এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ওপর অনুষ্ঠানে তাই শুধু বিএনপির লোকজন কথা বলবে, এই রকম সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে ভিন্ন দল ও মতের মানুষকে জিয়াউর রহমানের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে জানতে দিতে হবে।’
উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, ‘আমরা সীমিত পরিসরে কিছুক্ষেত্রে পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। তাই আমরা সংস্কৃতিকে পরিবর্তনের জন্য জিয়াউর রহমানের জীবনীর ওপর গুরুত্বারোপ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নববর্ষে শুধু বাঙালি না চাকমা, মারমা, গারো, সাঁওতাল সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে পালন করার চেষ্টা করেছি। চাঁদরাতে ঈদ উৎসব পালন করেছি, যেটি দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে হয়নি। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে ঢাকাসহ আরও পাঁচ জেলায় সাংস্কৃতিক উৎসব পালন করা হয়েছে। এটি সামনের দিনেও বিদ্যমান থাকবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা সংকীর্ণমনতা থেকে বের হতে পারছি না, যেটি ৭০-৮০’র দশকের রাজনীতিবিদরা অনুধাবন করেছিলেন। জিয়াউর রহমান যদি আর ৩-৪ বছর বেঁচে থাকতেন তাহলে দেশে সাংস্কৃতিক অন্তর্ভুক্তি হতো।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.
আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, স্বাস্থ্য এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা, বিডি জবস.কম এর প্রধান নির্বাহী একেএম ফাহিম মাশরুর, রাজনীতিবিদ সরোয়ার তুষার, কবি ও চিন্তক রেজাউল করিম রনি প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ য় উর রহম ন উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়
হাতে মোমবাতি, ঠোঁটে প্রার্থনার সুর—এভাবেই দুই কিলোমিটারেরও বেশি আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ পাড়ি দিলেন হাজারো ভক্ত। গন্তব্য ছিল মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত স্থান শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এখানে শুরু হয়েছে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসব’।
দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব আজ শুক্রবার শেষ হচ্ছে। শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন এই উৎসবে। আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়।
গতকাল বিকেল চারটায় পবিত্র খ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তীর্থোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর রাত সাড়ে আটটার দিকে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য আলোক শোভাযাত্রা। রাত ১১টায় মা মারিয়ার মূর্তিকে সামনে রেখে বিশাল প্যান্ডেলে অনুষ্ঠিত হয় আরাধনা, আর রাত ১২টায় নিরাময় অনুষ্ঠান ও নিশিজাগরণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের ধর্মীয় কার্যক্রম।
আজ শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের তীর্থোৎসব। এ বছরের উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র্যান্ডেল। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব।
এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।
খাগড়াছড়ি থেকে আসা তীর্থযাত্রী জুয়েল ত্রিপুরা বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো এখানে এসেছি। এসে খুব ভালো লাগছে। এর পর থেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে প্রার্থনায় আসব।’
মুক্তাগাছা থেকে আসা কারিশমা চাম্বুগং বলেন, ‘মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।’
তীর্থোৎসবে মা মারিয়ার মূতি নিয়ে মোমবাতি প্রজ্বালন করে আলোক শোভাযাত্রা বের করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুরের নালিতাবাড়ীর বারোমারি সাধুলিও ধর্মপল্লি থেকে