বাংলাদেশের তৈরি ‘কনভে’তে হবে জি-২০’র সম্মেলন
Published: 1st, June 2025 GMT
বিশ্বের প্রভাবশালী অর্থনৈতিক জোট জি-২০ সহযোগী দেশগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সম্মেলনের জন্য এ বছর ব্যবহৃত হয়েছে বাংলাদেশের তৈরি ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্ম ‘কনভে’। এসব ভার্চুয়াল সভার জন্য সাধারণত জুম, গুগল মিট কিংবা মাইক্রোসফট টিমস ব্যবহার করা হতো।
জানা গেছে, ২৬ ও ২৭ মে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় ‘সাসটেইনেবল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট সিম্পোজিয়াম (সিডসসা)-২০২৫’। এই উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ২৭টি দেশের মন্ত্রী, নীতিনির্ধারক, কূটনীতিক এবং বেসরকারি খাতের শীর্ষ প্রতিনিধি অংশ নেন। আর তাঁদের এই ভার্চুয়াল সংযোগের মাধ্যম হয় বাংলাদেশের কনভে, যা ছিল সম্মেলনের অফিসিয়াল ভিডিও স্ট্রিমিং পার্টনার। এ সম্মেলনে উঠে এসেছে বিভিন্ন দেশের জাতীয় অভিজ্ঞতা ও কৌশল।
অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে ছিল চীন, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি। আলোচনায় এসেছে অবকাঠামোগত ১২ অগ্রাধিকার প্রকল্প, কৌশলগত উদ্যোগের অগ্রগতি, ও নতুন অর্থায়নের বিস্তারিত।
আলোচনার পুরোটা সরাসরি সম্প্রচারে পরিচালনা করে ‘কনভে’। শুধু সম্প্রচারই নয়, ‘কনভে’ এ সম্মেলনে যোগ দেওয়া হাজারো অংশগ্রহণকারীর জন্য রিয়েল টাইম মাল্টিল্যাঙ্গুয়াল ট্রান্সক্রিপশন সুবিধা দেয়, যা একযোগে পাঁচটি ভাষায়—ইংরেজি, বাংলা, ফরাসি, স্প্যানিশ ও পর্তুগিজে—ভাষান্তর সরবরাহ করে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এত বড় পরিসরে এই প্রযুক্তিগত সামর্থ্য প্রদর্শন কেবল একটি সফটওয়্যার পণ্যের সক্ষমতা নয়, বরং একটি দেশের প্রযুক্তিগত পরিপক্কতার পরিচয়।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ‘কনভে’ কেবল ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ অফিস সহযোগিতা প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এতে রয়েছে স্বয়ংক্রিয় মিটিং মিনিটস তৈরি, স্পিকার শনাক্তকরণ, প্রকল্পভিত্তিক দল ব্যবস্থাপনা, রিয়েল টাইম স্ক্রিন শেয়ারিং, ক্লাউড স্টোরেজ ও উন্নত নিরাপত্তাব্যবস্থা। এমনকি, কম ব্যান্ডউইথেও নির্বিঘ্নে সেবা দেওয়ার উপযোগীভাবে তৈরি করা হয়েছে ‘কনভে’।
‘কনভে’র সফটওয়্যার প্রকৌশলী আল আমরু বিল মারুফ বলেন, জুম কিংবা মাইক্রোসফট টিমসের পূর্ণাঙ্গ প্রতিযোগী হয়ে উঠতে যাচ্ছে ‘কনভে’। ইতোমধ্যেই ‘কনভে’ আফ্রিকা, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু মূল উন্নয়ন এখনও বাংলাদেশেই।’
‘কনভে’ উদ্ভাবন করেছে দেশের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিনেসিস আইটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ই-রিটার্ন ও ই-টিআইএন ডিজিটাল সেবা বাস্তবায়নে প্রতিষ্ঠানটি সঙ্গে কাজ করেছে।
সিনেসিস আইটির চিফ বিজনেস অফিসার এএসএম নুরুন নবী বলেন, সিডসসা সম্মেলনে দেখা গেছে, কিভাবে রিয়েল টাইমে বিভিন্ন ভাষায় ট্রান্সক্রিপশন দিয়ে বৈঠককে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করেছে ‘কনভে’। বাংলাদেশের প্রযুক্তি এখন বৈশ্বিক।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লাইটবার খুলে পড়ার আশঙ্কায় টেসলার সাইবারট্রাকের ১০ শতাংশ গাড়ি প্রত্যাহার
আবারও বাজার থেকে সাইবারট্রাক ফিরিয়ে নিচ্ছে টেসলা। এবার এর কারণ সফটওয়্যার নয়, সরাসরি যান্ত্রিক ত্রুটি। যুক্তরাষ্ট্রে ৬ হাজার ১৯৭টি সাইবারট্রাক প্রত্যাহারের বা রিকলের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনএইচটিএসএ) তথ্য অনুযায়ী, এসব গাড়ির সামনের লাইটবার খুলে পড়ে সড়কে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ মডেলের কিছু সাইবারট্রাকে লাইটবার বসানোর সময় ভুল ধরনের ‘সারফেস প্রাইমার’ ব্যবহার করা হয়েছিল। ফলে আঠালো সংযোগ দুর্বল হয়ে পড়েছে। সহজভাবে বললে, টেসলা কিছু গাড়িতে লাইটবার লাগাতে ভুল আঠা ব্যবহার করেছিল। যেসব গাড়িতে এই ত্রুটি রয়েছে, সেগুলোর লাইটবার পরীক্ষা করে দেখা হবে। প্রয়োজনে নতুনভাবে লাইটবার বসানো হবে। সবই গ্রাহকদের জন্য বিনা খরচে। প্রায় ৬ হাজার ২০০টি সাইবারট্রাক প্রত্যাহার মানে টেসলার বিক্রি হওয়া মোট গাড়ির প্রায় ১০ শতাংশই সমস্যাগ্রস্ত।
এর এক সপ্তাহ আগেই আরও একটি বড় ত্রুটির কারণে ৬৩ হাজার ৬১৯টি সাইবারট্রাক প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তখন দেখা যায়, গাড়ির সামনের পার্কিং লাইট অতিরিক্ত উজ্জ্বল হয়ে ওঠায় তা সামনের দিক থেকে আসা গাড়ির চালকদের দৃষ্টিকে ব্যাহত করতে পারে। তবে সেই সমস্যা সফটওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছিল। টেসলার সাইবারট্রাক নিয়ে একের পর এক প্রত্যাহার এখন প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এর অনেক সমস্যাই হার্ডওয়্যার–সংক্রান্ত, যেগুলো দূর থেকে সফটওয়্যার আপডেট দিয়ে সমাধান করা সম্ভব নয়।
সূত্র: ম্যাশেবল