দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কারের পথনকশা চূড়ান্ত করতে হবে: চরমোনাই পীর
Published: 1st, June 2025 GMT
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে সংস্কারের রোডম্যাপ (পথনকশা) চূড়ান্ত করার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, সংস্কারের নথনকশা ও কাজে কোনো ধরনের জটিলতা থাকলে সেগুলো সমাধানে করণীয় নিয়ে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কার নিয়ে অস্পষ্টতা দূর করতে হবে।
আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন সৈয়দ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, গণ–অভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া রাষ্ট্রসংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামীকাল সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বৈঠক আয়োজন করেছে। এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামী আন্দোলনের আমির আরও বলেন, এই সরকার শুধু নির্বাচন আয়োজনের জন্য অতীতের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো কোনো সরকার না, বরং হাজারো মানুষের রক্তের ওপরে গঠিত একটি সরকার। যাদের প্রধান কাজ রাষ্ট্রের আমূল সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে ভবিতব্য সব স্বৈরাচারের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়া।
চরমোনাই পীর বলেন, সরকার গঠনের প্রায় ১০ মাস হতে চলল। সংস্কার নিয়ে কাজ হয়েছে ঠিক কিন্তু দৃশ্যমান, সুসংহত ও জোরালো কোনো সংস্কার চোখে পড়ছে না। অথচ এই সংস্কারের ওপরেই আগামীর বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। দেশে নির্বাচন নিয়ে কথা উঠছে। অথচ নির্বাচনপদ্ধতি, সংসদীয় আসন সংখ্যা ও সংসদের কক্ষ সংখ্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয়ে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, জুলাইতে ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দ্রুততার সঙ্গে ভিন্নমতও তৈরি হচ্ছে। সামনে আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক কাজে দেরি হলে রাজনৈতিক সংস্কৃতি সংস্কারকে দুরূহ করে তুলতে পারে। সে জন্য আগামীকালের বৈঠকে জাতিকে সংস্কার নিয়ে একটি পরিষ্কার ও দ্বিধামুক্ত দিশা দিতেই হবে।
উল্লেখ্য, আগামীকাল সোমবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিকেলে এ আলোচনার উদ্বোধন করবেন কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। কমিশনের প্রথম দফার আলোচনা শুরু হয় ২০ মার্চ; শেষ হয় ১৯ মে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক ঐকমত য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে