ঈদের তারিখ নির্ধারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু হয়। বিশেষ করে ঈদের দিনে মুমিনরা পরস্পরের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের সময় কল্যাণকরভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এই শুভেচ্ছার দোয়া হলো: তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম (আল্লাহ আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন)

প্রিয় নবী (সা.

) এই দোয়ার মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময়ের শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিসে উল্লেখ আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর সাহাবিরা ঈদের দিনে একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’।

উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।

ঈদের তাকবির পড়ার নিয়ম

ঈদুল আজহার সময় ৯ জিলহজ ফজর নামাজের পর থেকে ১৩ জিলহজ আসর নামাজ পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবির পড়া সুন্নত। এই তাকবির একবার উচ্চস্বরে এবং তিনবার নিম্নস্বরে পড়তে হয়। তাকবিরটি হলো:

উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।

এর অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ অতি মহান, তিনি ছাড়া কোনো সত্যিকার মাবুদ নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আর সমস্ত প্রশংসা শুধু তাঁরই জন্য।

আরও পড়ুনইসলাম সহজ, কঠিন করবেন না০৫ মে ২০২৫ঈদুল আজহার সময় ৯ জিলহজ ফজর নামাজের পর থেকে ১৩ জিলহজ আসর নামাজ পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবির পড়া সুন্নত। এই তাকবির একবার উচ্চস্বরে এবং তিনবার নিম্নস্বরে পড়তে হয়।

তাকবিরের গুরুত্ব

এই তাকবির আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ও মহত্ত্ব ঘোষণা করে, যা মুসলমানদের ইমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আল্লাহর মহত্ত্বের প্রকৃত গভীরতা কোনো মানুষের পক্ষে পুরোপুরি অনুধাবন করা সম্ভব নয়। তাকবির পড়ার মাধ্যমে মুমিনরা তাঁর মহিমা ও শ্রেষ্ঠত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।

এভাবে ঈদের শুভেচ্ছা ও তাকবিরের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভক্তি প্রকাশ করে এবং পরস্পরের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি বজায় রাখে।

আরও পড়ুনসন্তানকে বদ দোয়া করবেন না২১ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ম জ র পর আল ল হ জ লহজ আকব র

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত

ছোটবেলার কুরবানির ঈদ খুব আনন্দের ছিলো। আমার বেড় ওঠা ঢাকায়। ইকবাল রোডে আমার বাবার বাড়ি। সাড়ে বারো কাঠা জায়গা নিয়ে ছিল আমাদের বাড়িটা। ঘরের সামনে বিরাট উঠান ছিলো। কুরবানির জন্য কেনা গরু ওই উঠানে রাখা হতো। শুধু আমাদের গরু না, মামা, খালাদের কেনা গরুও ওই একই উঠানে রাখা হতো। 

ঈদের আগের দিন বাবা, মামারা সবাই একসঙ্গে গরু কিনতে যেতেন। মামারা গরু কিনতে যাওয়ার আগে আমাদের বাড়িতে আসতেন। মা অনেক রকম খাবার রান্না করতেন। যেমন— খিচুরি, মুরগির মাংস, ডিম ভাজি। সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে গাবতলী হাটে গরু কিনতে যেতেন। বড়দের সঙ্গে আমিও যেতাম।  বিকালের আগে গরু কিনে বাসায় ফিরে আসতাম। রাতে আবার সবাই একসঙ্গে খেতো। এবং পরের দিনের গরু কুরবানির প্ল্যানিং হতো। অবশ্য বিকালের পরে নারীরা অর্থাৎ নানী, খালারা সবাই আসতেন গরু দেখতে। বাড়িটা উৎসবমুখর হয়ে উঠতো। সবমিলিয়ে আমাদের বাড়িতে ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত।

সেই সময় সবাই একসঙ্গে ঈদ করা হতো। বাড়ির উঠানেই গরু কুরবানি করা হতো। মাংস ভাগ করে বিলানো হতো। এরপর মামা, খালারা তাদের ভাগের মাংস নিয়ে বিকালে নিজেদের বাড়িতে চলে যেতেন। এই যে ঈদের আগের দিন গরু কেনা থেকে কুরবানি  এই সময়টুকুতে আত্মীয় স্বজনেরা সবাই মিলে একটি পরিবার হয়ে উঠতো। 

আরো পড়ুন:

চলতি মাসে মুক্তি পাবে আলোচিত পাঁচ সিনেমা

বিয়ে করলেন হিনা খান, ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইটাও চলছে

সবার আলাদা বাসা এবং আলাদা ফ্ল্যাট বাড়ি হওয়ার পর থেকে আর এই সুযোগটুকু রইলো না। সময়ের পরিবর্তনে মানুষজন অনেকে হারিয়ে গেলো, অনেকে বিদেশে চলে গেলো। এভাবে করে ভাঙতে ভাঙতে এখন যার যার ঈদ তার তার।

এখন হয়তো আগের চেয়ে অনেক বড় গরু কুরবানি দেওয়া হয় কিন্তু আগের ঈদের আনন্দটা  এখন আর খুঁজে পাই না। 

অনুলিখন: স্বরলিপি

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ