ঈদ উৎসবে পরিবারের সবাই একত্র হয়ে আনন্দ করা আমাদের ঐতিহ্য। ঈদ উপলক্ষে অনেকেই বিদেশ থেকে দেশে আসেন, শহর থেকে গ্রামে যান। দীর্ঘদিন পর সন্তানের দেখা পান বয়স্ক ব্যক্তিরা। তাঁদের জন্য এ এক আনন্দের উপলক্ষ। তবে উৎসব পালনের সময় তাঁদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা উচিত। প্রায়ই বয়স্করা ঈদের ছুটিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তাঁদের নিয়ে হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে হয়। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত।

যাঁরা বিভিন্ন রোগে ভুগছেন

বয়স হলে শরীরে বাসা বাঁধে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, কিডনি রোগের মতো নানা অসুখ। তাই বয়স্কদের অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। প্রথমেই খাওয়াদাওয়া। ঈদ উপলক্ষে ঐতিহ্যগতভাবেই বেশ ক্যালরিযুক্ত খাবারদাবারের আয়োজন করা হয়। কোরবানির ঈদে মাংসের পদ তো থাকবেই। কিন্তু বয়স্ক সদস্যের কথা মাথায় রেখে ঈদ উৎসবেও সবজি, মাছ ও কম তেল-মসলার পদ রাখা উচিত। কারণ, আর সবার মতো শুধু এই সব মাংসের পদ খেলে তাদেঁর কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া এবং হার্ট, লিভার ও কিডনির ক্ষতি হতে পারে। তাই বলে যে একেবারেই খাবেন না, তা নয়। একবেলায় দুই টুকরা মাঝারি আকারের চর্বিবিহীন মাংসের টুকো খাওয়া যাবে। যাঁদের দাঁতের সমস্যা, তাঁদের জন্য কাবাব বা ছেঁচা মাংস করে দিলে উপকার হয়।

এ ছাড়া ঈদের ছুটির আগেই খেয়াল করতে হবে যে বয়স্ক সদস্যটির নিয়মিত ওষুধপত্র, ইনসুলিন, সিরিঞ্জ, ইনহেলার ইত্যাদি পর্যাপ্ত আছে কি না। অনেক সময় ছুটিতে ওষুধ ফুরিয়ে যায়, যা খেয়াল করা হয় না। ঈদের ছুটিতেও ফাঁকে ফাঁকে বাড়িতে রক্তচাপ ও রক্তের শর্করা পরিমাপ করা উচিত। কারণ, এ সময় একটু অনিয়ম হয় বলে এগুলো এলোমেলো হয়ে যেতে পারে।

শৃঙ্খলা বজায় রাখুন

বেশির ভাগ বয়স্ক মানুষ একটা শৃঙ্খলার মধ্যে থাকেন। যেমন সময়মতো খাদ্য গ্রহণ, ঘুমাতে যাওয়া, ওষুধ সেবন, টয়লেট ব্যবহার ইত্যাদি। উৎসবের সময় সবারই একটু শৃঙ্খলা নষ্ট হয়, সময়ের হিসাব থাকে না। কোরবানির কাজের চাপে অনেকেই সময়মতো নাশতা খেতে পারেন না, গোসল বা বিশ্রামে অনিয়ম হয়ে যায়। রাত জাগা হয়। কিন্তু চেষ্টা করতে হবে, বয়স্ক সদস্যের যেন এই অনিয়ম খুব বেশি মাত্রায় না হয়। তাঁদের খাবার ও ঘুমের সময় ঠিকঠাক রাখা জরুরি। ওষুধগুলো ঠিক সময়ে ঠিকমতো খাওয়া হচ্ছে কি না, খেয়াল রাখতে হবে। নাহলে তাঁরা অসুস্থ বোধ করতে পারেন।

আরও পড়ুনতোকমাদানা কি চিয়া সিডের চেয়ে উপকারী১৪ মার্চ ২০২৫উপসর্গে অবহেলা নয়

ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে কেউ কেউ অসুস্থ বোধ করতে পারেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বদহজম, পেটে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্যজাতীয় সমস্যা দেখা দেয়। এ রকম সমস্যা হলে কী ওষুধ বা প্রতিকার, তা আগেই জেনে নিন ও মজুত রাখুন। তবে হঠাৎ বুকে ব্যথা, প্রচণ্ড পেটব্যথা, ঘাম, বমি, বারবার ডায়রিয়া হলে হাসপাতালে যাওয়াই ভালো। ঈদেও সব হাসপাতালের জরুরি বিভাগ খোলা থাকে। তাই দেরি বা অবহেলা না করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

মনের যত্ন নিন

অনেক সময় উৎসবে বয়স্করা অবহেলিত ও একাকী বোধ করেন। আজকাল ঈদের ছুটিতে অনেকেই বিদেশে বা রিসোর্টে ঘুরতে চলে যান। আবার নানা কাজ ও অতিথির চাপে বয়স্কদের ঠিকঠাক মূল্যায়ন করা হয় না অনেক পরিবারে। প্রতিটি আনন্দে–উচ্ছ্বাসে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে ভালো। সেটা না পারলে তাঁদের সঠিক যত্ন ও দেখাশোনার বিষয়টি নিশ্চিত করে যেতে হবে।

লেখক: ডা.

এ বি এম আবদুল্লাহ, ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ‍্যালয়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঈদ র ছ ট

এছাড়াও পড়ুন:

শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ৭৭টি পূজামণ্ডপে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সিঙ্গাইর পৌর এলাকার আঙ্গারিয়ায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এ সহায়তা তুলে দেন বাংলাদেশে বেলারুশের অনারারি কনসাল ও লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২৫ বছর ধরে মা শ্রীমতী গীতা রায়ের নামে দুর্গোৎসবে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছেন অনিরুদ্ধ কুমার রায়।

সহায়তা পাওয়ার পর তারেবপুর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সভাপতি মহানন্দ কীর্তনীয়া বলেন, পূজায় মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনাকাটায় বেশ খরচ হয়। এই সহায়তা পূজায় কাজে আসবে।

সিঙ্গাইর পৌর এলাকার আঙ্গারিয়া এলাকায় বাসিন্দা ও জয়মণ্টপ ইউনিয়নের বানিয়ারা পঞ্চায়েত দুর্গামন্দিরের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র সরকার (৬০) বলেন, ‘আর ১০ দিন পরই দুর্গোৎসব। মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। তবে এখনো মা দুর্গাসহ অন্যান্য প্রতিমা সাজানো হয়নি। রংতুলির কাজ হয়নি। এই আর্থিক সহায়তা মা দুর্গার গয়না ও শাড়ি কিনতে সহায়তা করবে।’

অনিরুদ্ধ কুমার রায় বলেন, মা দুর্গা যেমন মহাশক্তির প্রতীক, সব অশুভশক্তি ও শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার প্রতীক; তেমনি পৃথিবীর প্রত্যেক মা বুক দিয়ে তাঁর সন্তানদের আগলে রাখেন। সন্তানেরও কর্তব্য মাকে ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সেবা করা। সেই সঙ্গে মায়ের অপূরণীয় ঋণের কিছুটা হলেও পরিশোধের চেষ্টা করা। মায়ের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধার জায়গা থেকেই তিনি এই সহায়তা দিয়ে আসছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রথীন্দ্রনাথ দত্তের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা। এ ছাড়া বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সত্যেনকান্ত পণ্ডিত ভজন, সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইতি রানী সাহা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে পুলিশ: আইজিপি
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ
  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫