ঈদুল আজহার ৩ দিনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) মোট ২০ হাজার ৮৮৯ টন কোরবানির বর্জ্য সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

সোমবার (৯ জুন) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে গুলশান নগর ভবনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “এবার কোরবানির সংখ্যা ৪ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি হলেও গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে বর্জ্যের পরিমাণ বেড়েছে। সোমবার ঈদের তৃতীয় দিনে দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট ২০ হাজার ৮৮৯ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে ল্যান্ডফিল্ডে পাঠানো হয়েছে। আমাদের নির্ধারিত ২০ হাজার টনের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

কোরবানির ৮৫ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ হয়েছে: ডিএনসিসি প্রশাসক

দ্রুত বর্জ্য অপসারণে সেবা দেবে ডিএসসিসি: প্রশাসক

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নগরবাসীর সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রশাসক বলেন, “নগরবাসী যথেষ্ট সচেতন ছিল। তাদের সহযোগিতার কারণেই আমরা দ্রুততম সময়ে বর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছি। এজন্য নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

হাটের বর্জ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ঈদের তিন দিন পর থেকে কোরবানির হাটগুলোর বর্জ্য অপসারণ শুরু হবে। তবে সড়কে কোরবানির বর্জ্য দুই দিন পড়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। কখনো কখনো সময়ের কিছুটা তারতম্য হতে পারে, কিন্তু কাজ থেমে থাকবে না।”

প্রশাসক আরো বলেন, “বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কাজ করেছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, কর্মকর্তা এবং স্বেচ্ছাসেবীরা। নাগরিকদের সহযোগিতায় ঢাকা উত্তর এলাকায় পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।”

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০ হ জ র র বর জ য ক রব ন র ড এনস স

এছাড়াও পড়ুন:

মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে

চট্টগ্রামে এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব গত এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে, আর এর সরাসরি ফল ভোগ করছেন নগরবাসী। স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, এবার ডেঙ্গুর চেয়েও চিকুনগুনিয়া ঘরে ঘরে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, যা এক নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। মশা নিধনে কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবই এ রোগের দ্রুত বিস্তারের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চট্টগ্রামে এভাবে জনস্বাস্থ্য ভেঙে পড়ার বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম নগর এডিস মশাবাহিত রোগের জন্য এখন অতি ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগ একই ধরনের জরিপ চালিয়েছিল। এই দুই জরিপের তুলনামূলক চিত্র আমাদের সামনে এক ভয়াবহ বাস্তবতা তুলে ধরে—এডিস মশার প্রজনন ও লার্ভার ঘনত্ব দুটিই আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।

২০২৪ সালে চট্টগ্রামে এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব (ব্রুটো ইনডেক্স) ছিল ৩৬ শতাংশ, যা এবার আইইডিসিআরের গবেষণায় পৌঁছেছে ৭৫ দশমিক ২৯ শতাংশে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মান যেখানে ২০ শতাংশ, সেখানে চট্টগ্রামের এ চিত্র রীতিমতো ভয়াবহ। বাসাবাড়িতেও লার্ভার উপস্থিতি বেড়েছে। গত বছর ৩৭ শতাংশ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া গেলেও এবার তা প্রায় ৪৮ শতাংশে পৌঁছেছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবার ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আবার অনেকের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুটিই হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরেই ৭৬৪ জনের চিকুনগুনিয়া ও ৭৯৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে এবং ডেঙ্গুতে আটজন প্রাণ হারিয়েছেন, যার মধ্যে ছয়জনই মারা গেছেন এই জুলাই মাসে।

সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আইইডিসিআরের সুপারিশগুলো সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম দাবি করছেন যে মশকনিধনে ক্রাশ কর্মসূচি চলছে এবং নতুন জরিপ অনুযায়ী হটস্পট ধরে কাজ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হলো এ উদ্যোগগুলো কি যথেষ্ট? লার্ভার ঘনত্ব যেখানে তিন-চার গুণ বেশি, সেখানে গতানুগতিক কর্মসূচির ওপর নির্ভর করলে চলবে না।

মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করার কোনো বিকল্প নেই। এ কাজে সিটি করপোরেশনকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। বাসাবাড়িতে নানা জায়গায় জমে থাকা স্বচ্ছ পানিও এডিস মশার প্রজননের জন্য যথেষ্ট। ফলে নাগরিকদের সচেতনতা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম শহরকে মশাবাহিত রোগের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে হলে স্থানীয় প্রশাসন, নগর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; নগরবাসীকে দ্রুত তৎপর হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মশা নিধনে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে
  • স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে দ্বিতীয় দিনেও মহাসড়কে প্রতীকী ক্লাস করলেন শিক্ষার্থীরা
  • প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচের পরও ডুবছে চট্টগ্রাম