তরুণদের মধ্যে যাঁদের চাকরি বা প্রশিক্ষণে নেই—এমন পাঁচ লাখ যুব নারীসহ মোট ৯ লাখ তরুণকে ২০২৮ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার কাজ শুরু করেছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। এই প্রশিক্ষিত তরুণেরা দেশের অর্থনৈতিক রূপান্তর ও প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবেন।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক জানান, আর্ন প্রকল্প কর্মমুখী, উপযুক্ত ও পরিবেশবান্ধব খাতে যুবদের দক্ষতা বৃদ্ধি, দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং একই সঙ্গে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণসহায়তা প্রদান করবে। এসব কাজের মধ্য দিয়ে বিপুল যুব জনগোষ্ঠীকে বিশেষ করে যুব নারীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করবে।

আর্ন প্রকল্পের লক্ষ্য

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর জানিয়েছে, তরুণদের বিশেষ করে যুব নারীদের বিকল্প শিক্ষা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি করে তাঁদের আত্মকর্মসংস্থানমূলক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা। নিয়োগকর্তা ও শ্রমবাজারের সঙ্গে যুবদের সরাসরি সংযোগ স্থাপন, ইন্টার্নশিপের সুযোগ তৈরি এবং নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য যেকোনো উদ্যোগ শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসহায়তার ব্যবস্থা করা হবে আর্ন প্রকল্পের মাধ্যমে।

প্রকল্প পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন এবং মূল্যায়নে যুব ও তাঁদের পরিবার, নাগরিক এবং অংশীজনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, যা যুবদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং এই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের আওতাধীন সব সংস্থার (যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র), মানবসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র ও উপজেলা অফিসগুলো, বিকেএসপি, ক্রীড়া পরিদপ্তর, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানো হবে।

আর্ন প্রকল্পের উদ্দেশ্য

আর্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যুবগোষ্ঠী, বিশেষ করে গ্রামীণ নারীদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি করা। যুবক ও যুব নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিপূর্বক অধিকতর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা এই প্রকল্পের কাজ। ২০৩০ সালের মধ্যে অগ্রাধিকার খাতে প্রায় ৯ লাখ পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি করে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক রূপান্তর এবং এলডিসি থেকে উত্তরণপ্রক্রিয়ায় সহায়তা করার কাজ করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় পড়বে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৯ লাখ জনগোষ্ঠী, যারা বর্তমানে কোনো প্রকার আনুষ্ঠানিক বা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং উপার্জনমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত নেই। উল্লিখিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ নারী, ২ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং ১ শতাংশ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। এই নিট জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে ছয়টি ক্যাটাগরিতে।

প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মো.

সাইফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রায় ৯ লাখ তরুণ এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি লাভবান হবেন। আমাদের প্রকল্পগুলোতে সুবিধাভোগীরা এতটাই লাভবান হন যে আমাদের প্রশিক্ষণের বিজ্ঞপ্তিও সেভাবে প্রচার করার প্রয়োজন পড়ে না। তাঁরা নিজেরাই নিজেদের উদ্যোগেই খবর নিয়ে আবেদন করেন। এত আবেদন জমা পড়ে যে আমাদের বাছাই করতে বেশ বেগ পোহাতে হয়। তার পরও আমরা খুশি যে আমাদের প্রশিক্ষণ তরুণদের বাস্তব জীবনে খুব কাজে লাগে। এই প্রকল্পতেও আমাদের সেই ধারাবাহিকতা থাকবে।’ ​

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ন প রকল প র এই প রকল প র জনগ ষ ঠ আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ