চুরির অভিযোগে ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা
Published: 15th, June 2025 GMT
গাজীপুরে চুরির অভিযোগে যুবককে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার সকালে মহানগরের চাপুলিয়া এলাকায় রেললাইনে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। এদিকে শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে দুই যুবককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
গাজীপুরে নিহত শাহরিয়ার রহমান হ্যাভেন (৩৩) মহানগরের চাপুলিয়া এলাকার হুমায়ুন কবিরের ছেলে। তাঁর স্বজনের অভিযোগ, প্রতিবেশী এক পরিবারের সঙ্গে তাদের জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। চুরির অপবাদ দিয়ে তারা হ্যাভেনকে শনিবার সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাঁর হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যার পর রেললাইনের পাশে লাশ ফেলে রাখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর ভাষ্য, হ্যাভেন চুরি ও মাদক কারবারে জড়িত ছিল। এলাকায় বখাটে হিসেবেও পরিচিত ছিল। তবে ওই প্রতিবেশীর বাড়িতে সে চুরি করেছে কিনা, সেটা তাদের জানা নেই। তারা বলছেন, অপরাধ করে থাকলে হ্যাভেনকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া যেত। কিন্তু চুরির অপবাদ দিয়ে এভাবে হত্যা করে আইন হাতে তুলে নেওয়া হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরের সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, হ্যাভেনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাদক ও চুরিসহ বিভিন্ন ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, নাকি অন্য কোনো ঘটনা আছে– তা জানতে তদন্ত চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। স্বজনরা মামলা করছেন।
এদিকে শনিবার বিকেলে সোনারগাঁয়ের মসলেন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুই যুবককে নির্যাতন করা হয়। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তাদের ওপর নির্যাতনে জড়িত ছিলেন বারদী ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ওমর ফারুক।
নির্যাতনের শিকার আল আমিন ও পারভেজ একই গ্রামের বাসিন্দা। জানা গেছে, এই এলাকার এভারগ্রিন কিন্ডারগার্টেন থেকে গত সোমবার রাতে ৯টি ফ্যান ও বৈদ্যুতিক মোটর চুরি যায়। পাশের আড়াইহাজার উপজেলার জাঙ্গালিয়ায় শনিবার দুপুরে ফ্যান ও মোটর বিক্রি করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়ে আল আমিন ও পারভেজ। এ সময় তাদের পিটুনি দেয় স্থানীয় লোকজন। বিকেলে তাদের নিয়ে সালিশ বসে মসলন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সালিশে ইউপি সদস্য ওমর ফারুক ও তাঁর সহযোগী নুর মোহাম্মদ প্লাস্টিকের পানির পাইপ দিয়ে দু’জনকে অর্ধশতাধিক আঘাত করেন। এক পর্যায়ে ওমর ফারুক তাদের গলা পা দিয়ে চেপে ধরেন।
ইউপি সদস্য ওমর ফারুকের দাবি, তাদের বিচার করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। ওই চোরেরা তাঁর আত্মীয় হওয়ায় এভাবে শাসন করেছেন। পুলিশে কেন দেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেননি।
এ ঘটনায় একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সোনারগাঁ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো.
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য চ র র অপব দ দ য় ওমর ফ র ক স ন রগ য বকক সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল