এস আলমের আরও ১৮০ কোটি টাকা মূল্যের জমি ক্রোকের আদেশ
Published: 17th, June 2025 GMT
এবার এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা আরও ১৮০ কোটি টাকা দামের জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৮০ কোটি টাকা দলিল মূল্যে ২০০ একর জমি জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক করার আবেদন করে দুদক। শুনানি নিয়ে আদালত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা এসব জমি ক্রোকের আদেশ দেন।
এর আগে গত ২৭ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা আরও ৫৫৯ কোটি টাকা মূল্যের জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। তার আগে গত ২৩ এপ্রিল এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা আরও জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আরও ৬৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। এসব ব্যাংক হিসেবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৬১ লাখ ৭ হাজার ২২১ টাকা।
দুদক আদালতে বলেছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। এভাবে তাঁরা দেশে–বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। দুদক অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তি এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁদের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।
এর আগে গত ১০ মার্চ এস আলম গ্রুপের আরও স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এস আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা ৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। তিন দফায় সাইফুল আলম ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যক্তির নামে থাকা ১৬ হাজার কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।
গত ১৪ জানুয়ারি মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা রাজধানীর গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন জায়গায় থাকা জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, ভবনসহ ২০০ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করারও আদেশ দেন আদালত।
এ ছাড়া গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১২৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেন আদালত। দুদকের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়েছিল, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক।
গত বছরের ৭ অক্টোবর মোহাম্মদ সাইফুল আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ ১৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এস আলম গ র প র এস আলম ও ত
এছাড়াও পড়ুন:
দুবাই থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ৫৭ মামলার আসামি
চট্টগ্রামে বাড়ি। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৫৭টি মামলা। তবে তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন দুবাইয়ে। গ্রেপ্তার এড়াতে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে ফিরছিলেন। এরপরও তাঁর রক্ষা হয়নি তাঁর। সিলেটে বিমানবন্দর থেকেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন পলাতক এই আসামি।
গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে গ্রেপ্তার হওয়া এই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রুহুল আমিন (৫৫)। বিমানবন্দরে নিয়োজিত ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আজ রোববার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বাড়ি পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পাইরোল গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুস সালাম। চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাইয়ে ফিশারিঘাটে মাছের আড়ত ছিল রুহুল আমিনের।
পুলিশ জানায়, মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর বেশির ভাগই চেক প্রতারণার অভিযোগে করা। এর মধ্যে ১০টি মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে। বাকি মামলা বিচারাধীন। বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরোয়ানাভুক্ত এই আসামি সাজা ও গ্রেপ্তার এড়াতে দুবাইয়ে পালিয়ে যান। পাঁচ বছর পর সেখান থেকে গোপনে সিলেট হয়ে দেশে ফিরছিলেন তিনি।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, পটিয়া থানার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার রুহুল আমিনকে গতকাল রাতেই সিলেট থেকে পটিয়ায় নিয়ে আসা হয়। এরপর আজ সকালে পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।