নওগাঁয় গণ অধিকার পরিষদের বহিষ্কৃত নেতার এনসিপিতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা
Published: 20th, June 2025 GMT
নওগাঁয় গণ অধিকার পরিষদের জেলা কমিটির আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর গোলাম রাব্বানী জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে নওগাঁ শহরের একটি রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গোলাম রাব্বানী বলেন, তিনি ২০২১ সাল থেকে গণ অধিকার পরিষদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু দলটির অভ্যন্তরীণ অগণতান্ত্রিক আচরণ, চাপ প্রয়োগ ও নেতিবাচক রাজনীতির কারণে তিনি গণ অধিকার পরিষদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়িয়েছেন।
গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘১১ জুন আমি আহ্বায়কের পদ থেকে লিখিত পদত্যাগপত্র জমা দিই। এরপরও গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে গত বুধবার আমার বিরুদ্ধে ভুয়া বহিষ্কারাদেশ জারি করে। সেই আদেশে আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়।’
গোলাম রাব্বানী দাবি করেন, যেহেতু তিনি একজন ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সময় তাঁকে চাপে ফেলে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও অনুদান দিতে বাধ্য করা হতো। তবে তিনি কখনোই আওয়ামী লীগের সদস্য বা দায়িত্বশীল পদে ছিলেন না। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সামাজিকভাবে হেয় ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ক্ষতি করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির প্রতি পূর্ণ আস্থার কথা উল্লেখ করে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘নওগাঁর নেতা-কর্মীরা আমাকে এনসিপির একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাবি প্রোভিসির ফেসবুক স্টোরি, শিক্ষক নিয়োগে জামায়াত নেতার সুপারিশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খানের ফেসবুক স্টোরিতে শিক্ষক নিয়োগে জামায়াতের সাবেক এমপির সুপারিশ করা প্রবেশপত্র দেখা গেছে। স্টোরি ১৫ মিনিট পরেই ডিলিট করে দেন অধ্যাপক ফরিদ। তবে এটুকু সময়ের মধ্যেই সেই স্টোরির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা।
শনিবার (২ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে প্রকাশ করা ওই স্টোরিতে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে প্রভাষক নিয়োগের প্রবেশপত্রে জামায়াত সমর্থিত চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক এমপি মো. লতিফুর রহমান সুপারিশ করেছেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এদিকে ওই প্রার্থীর প্রবেশপত্র ভুলভাবে স্টোরিতে চলে এসেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ফরিদ খান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমার ফেসবুক স্টোরিতে একজন আবেদনকারীর প্রবেশপত্র কীভাবে আপলোড হয়েছে বুঝতে পারিনি। তবে মোবাইল ফোনটি নিয়ে আমার ছেলে বেশ কিছু সময় গেম খেলছিল। তখন হয়তো ভুলবশত স্টোরিতে এসে গেছে।’’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘‘প্রতিদিনই কোনো না কোনো আবেদনকারী বা তাদের পক্ষে বিভিন্ন সূত্রে সাক্ষাৎ করতে এসে সিভি, প্রবেশপত্র দিয়ে যায়, আবার অনেকে ফোন করে আবেদনকারীর প্রবেশপত্র হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করে, কেউ টেক্সট করে সুপারিশ পাঠায়। রুয়ার নির্বাচনের সময় একজন অ্যালামনাস যিনি সাবেক এমপি ছিলেন উনার সাথে পরিচয় হয়। কয়েকদিন আগে উনি ফোন করে উনার এলাকার একজন আবেদনকারীর কথা বলেন এবং তার প্রবেশপত্র সেন্ড করেন।’’
শুধু জামায়াত নেতা নন, বিভিন্ন সূত্রে এমন সুপারিশ করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘পরিচিত অনেকেই এরকম সুপারিশ করেন। তাদের মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক, বন্ধু, সহকর্মী, রাজনীতিক অনেকেই আছেন। এই মুহূর্তে আমার অফিসে এবং মোবাইল ফোনে ডজনখানিক এরকম সুপারিশ আছে। তবে এগুলো কোনোভাবেই লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে না।’’
বিষয়টির জন্য অধ্যাপক ড. ফরিদ পোস্টে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আশাকরি বিষয়টি নিয়ে কেউ ভুল বুঝবেন না।’’
সুপারিশ করার বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান বলেন, ‘‘চাকরিপ্রার্থীর প্রবেশপত্রে সুপারিশ করা হয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে ওই প্রার্থীর বিষয়ে উপ-উপাচার্যকে ফোন করেছিলাম। আমি তাকে বলেছিলাম, ‘বিগত দিনে ভাইবাগুলোতে অনেক বাজে চর্চা হয়েছে। তবে বর্তমান সময়ে আমরা এটা চাই না।’’
প্রবেশপত্রে করা সুপারিশ এবং স্বাক্ষর কার জানতে চাইলে অধ্যাপক ফরিদ খান বলেন, ‘‘যেভাবে স্টোরিতে থাকা ওই প্রবেশপত্র দেখা গেছে, আমার কাছে ওভাবেই এসেছিল। যিনি পাঠিয়েছেন তার লেখা কি না আমি নিশ্চিত নই।’’
রাজশাহী/ফাহিম//