কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যের বাড়ির ছাদে রোদে শুকানো হচ্ছিল গাঁজা। খবর পেয়ে সেখানে আচমকা উপস্থিত হন পুলিশের সদস্যরা। পরে তাৎক্ষণিকভাবে জব্দ করা হয় প্রায় ১০০ কেজি গাঁজা। এ সময় ছাদ থেকে লাফিয়ে পালিয়ে যান ওই ইউপি সদস্য। তবে তাঁর এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর শশীদল এলাকায় শশীদল ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম কাউছার আলম (৩০)। তিনি একই এলাকার প্রয়াত আবদুল হাকিমের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে নুরুল ইসলামের বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ে তল্লাশি চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে কাউছারকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নুরুল ইসলামের বাড়ির একতলা ছাদে শুকানোর জন্য রাখা আরও ৬০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার পর থেকেই নুরুল ইসলামের মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাঁজা জব্দের পর থেকেই তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। এ জন্য তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল রাতে ব্রাহ্মণপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) টমাস বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। এতে কাউছার ও ইউপি সদস্য নুরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। কাউছারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। নুরুলকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল ইসল ম র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

স্তন ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা

স্তন ক্যানসার বিশ্বব্যাপী নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হওয়া ও অন্যতম প্রাণঘাতী ক্যানসার। এই ক্যানসারে স্তনের কোষ অস্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়ে টিউমারে পরিণত হয়। পুরুষদেরও স্তন ক্যানসার হতে পারে, তবে নারীদের মধ্যে এর হার অনেক বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ২০ লাখ নতুন স্তন ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয়। উন্নত দেশগুলোতে নিয়মিত স্ক্রিনিং, উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা ও জনসচেতনতার কারণে তুলনামূলকভাবে বেঁচে থাকার হার বেশি। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশ, যেমন বাংলাদেশে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হওয়ার হার কম। এ কারণে মৃত্যুর হারও বেশি।

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর ১৩ থেকে ১৫ হাজার নারীর স্তন ক্যানসার শনাক্ত হয়। বাংলাদেশে নারী ক্যানসার রোগীর প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বেশি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত।

ঝুঁকি

বয়স বৃদ্ধি (৪০ বছরের পর ঝুঁকি বেশি)।

পরিবারে স্তন/ জরায়ু/ ডিম্বাশয় ক্যানসারের ইতিহাস।

হরমোনজনিত বা দীর্ঘ সময় হরমোন থেরাপি।

সন্তান না হওয়া বা দেরিতে সন্তান জন্মদান।

সন্তানকে বুকের দুধ পান না করানো।

স্থূলতা ও কায়িক শ্রমের অভাব।

ধূমপান ও মদ্যপান।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।

লক্ষণ

স্তনে বা বগলের নিচে শক্ত গুটি অনুভব হওয়া।

স্তনের আকার বা আকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন।

স্তনের ত্বক মোটা, ভাঁজযুক্ত বা লালচে হওয়া।

স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা অন্য তরল নিঃসরণ।

স্তনবৃন্ত ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া।

স্তনে বা বগলে অস্বাভাবিক ব্যথা বা অস্বস্তি।

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

স্তন ক্যানসার পুরোপুরি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়। প্রতি মাসে নিজে নিজের স্তন পরীক্ষা করতে পারেন। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা। বয়স ৪০ পার হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর নিয়মিত ম্যামোগ্রাফি করাতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ওজন। ধূমপান ও মদ্যপান করা যাবে না। সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।

স্তন ক্যানসাররের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগ কোন পর্যায়ে শনাক্ত হয়েছে তার ওপর। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। চিকিৎসাপদ্ধতি রোগীভেদে ভিন্ন হতে পারে। চিকিৎসা নির্ভর করে ক্যানসারের ধরন, পর্যায়, রোগীর শারীরিক সক্ষমতা ও বয়সের ওপর।

ডা. শাহিদা আলম, সহযোগী অধ্যাপক, রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

সম্পর্কিত নিবন্ধ