ঝালকাঠিতে তালগাছ কেটে শতাধিক বাবুই পাখির বাসা ধ্বংস ও ছানা হত্যার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। রোববার দুপুরে থানায় বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী স্থানীয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দুটি করা হয়।

গত শুক্রবার বিকেলে সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটন এলাকার একটি তালগাছ কেটে ফেলা হয়। তালগাছটি মোবারক আলী ফকির নামের এক ব্যক্তির জমির পাশে সড়কের ধারে ছিল। গাছটি অনেক বছর ধরে বাবুই পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও প্রজননকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। গাছটিতে অসংখ্য ঝুলন্ত বাসা, ডিম ও ছানা ছিল। ‎‎মিজানুর রহমান নামের এক ব্যক্তি মোবারক আলীর কাছ থেকে গাছটি কিনে কাটেন। এতে সহযোগিতা করেন ফারুক হোসেন নামের এক ব্যক্তি। গাছ কাটার সময় অসংখ্য বাসা নিচে পড়ে ডিম ভেঙে যায় এবং ছানাগুলো মাটিতে পড়ে মারা যায়।

এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) জায়গায় থাকা তালগাছ কাটার অভিযোগে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেন। পাশাপাশি বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বাবুই পাখির ছানা হত্যা ও ডিম ধ্বংস করার অভিযোগে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী আরেকটি মামলা করা হয়। মামলার বাদী ঝালকাঠি সামাজিক বনায়ন ও নার্সারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আরিফুর রহমান। মামলার পর থেকে অভিযুক্ত তিনজনই পলাতক।

আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাবুই পাখির আবাসস্থল ও পাখি হত্যা করার অপরাধে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী তিনি বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন। আশা করছেন, আদালত ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেবেন।

‎‎সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তালগাছ কেটে আবাসস্থল ধ্বংস ও পাখি হত্যার অপরাধে দুটি মামলা হয়েছে। একটি সদর থানায়, অন্যটি আদালতে। ঘটনাটি তাঁরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছেন। মামলার পর থেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

যুগোপযোগী করা হচ্ছে মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম, আগামী বছরই চালু

মাধ্যমিক স্তরের চলমান শিক্ষাক্রম আরও যুগোপযোগী করে আগামী বছর থেকে নতুনভাবে চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এ শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতালব্ধ, জ্ঞাননির্ভর ও বাস্তবসম্মত পাঠদান হবে। মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রথমে এটি চালু হবে। পরে সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে শিক্ষাক্রম প্রণয়নের কার্যক্রম এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ২৫ জুন এ নিয়ে এনসিটিবিতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। 

এনসিটিবি সূত্র জানায়, শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে– এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে বা কোন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নতুন কারিকুলাম তৈরি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলমান। চলতি মাসে কারিকুলাম বিষয়ে কর্মশালা হওয়ার কথা ছিল। সেটি পিছিয়ে আগামী জুলাইয়ে করা হবে বলেও জানান এনসিটিবি কর্মকর্তারা।

এনসিটিবির সচিব সাহতাব উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম যাচাই-বাছাই করে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকেই। প্রথমে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও পরে ক্রম অনুসারে অন্য শ্রেণিতে তা চালু করা হবে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাতবার শিক্ষাক্রম বা শিক্ষাপদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে সরকার। প্রথম পাঁচবার শিক্ষাক্রমের মূল থিম ঠিক রেখে ৫ থেকে ১০ শতাংশ পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে বড়সড়ো পরিবর্তন আনা হয়। সে বারের শিক্ষাক্রমটি ‘সৃজনশীল পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এ পদ্ধতি প্রণয়নের ৯ বছরের মাথায় ২০২১ সালে আবারও নতুন একটি শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন করা হয়।

সেই রূপরেখা অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তখন বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীদের মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে অভিজ্ঞতা ও কার্যক্রমভিত্তিক শিখনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এ শিক্ষাক্রম। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে হাতে-কলমে শেখানো হবে।

অভিভাবকরা সেই শিক্ষাক্রম স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করতে পারেননি। তাদের অভিযোগ ছিল, এমন শিক্ষাক্রমের কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষাক্রম বাতিলে টানা আন্দোলনও হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতন হলে একই মাসের শেষ দিকে বাতিল করা হয় সেই শিক্ষাক্রম। ফিরিয়ে আনা হয় ২০১২ সালে প্রণীত আলোচিত সৃজনশীল শিক্ষাক্রম।

এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালের শিক্ষাক্রম নিয়ে বিতর্ক থাকলেও কিছু বিষয় ছিল, যা ছিল সময়োপযোগী। নতুন যে শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হবে, সেখানে ২০২৩ ও ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের অনেক বিষয় থাকবে। ২০২৭ সালে চালু হওয়া শিক্ষাক্রম কেমন হবে, তা নির্ভর করবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত রাজনৈতিক সরকারের প্রত্যাশার ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সেজানের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিল শ্বেতা’
  • যুগোপযোগী করা হচ্ছে মাধ্যমিক শিক্ষাক্রম, আগামী বছরই চালু
  • ভেঙে না পড়ে বিকল্প কৌশল খুঁজুন