বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন হবিগঞ্জ জেলা শাখার সদস্যসচিব আহমদ রেজা হাসান মাহদীসহ চার জন নেতাকর্মীর ওপর হামলার মামলায় প্রধান আসামি সংগঠনের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সাকিবকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। রোববার (৬ জুলাই) রাত ৯টার দিকে হবিগঞ্জ শহরের কিবরিয়া ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

জানা যায়, গত ৯ মে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে পুরাতন হাসপাতাল সংলগ্ন নার্সিং ইনস্টিটিউটের সামনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একদল সন্ত্রাসী মাহদী ও তার সঙ্গীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে মাহদীসহ চারজন গুরুতর আহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১ মে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় এনামুল হক সাকিবকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন আহমদ রেজা হাসান মাহদী। এরপর থেকেই সাকিব পলাতক ছিলেন। মামলার ভিত্তিতে সাকিবের অন্যতম দুই সহযোগী এবং একই মামলার আসামি নুর আলম চৌধুরী এবং রেজাউল হাসান রাজু নামে দুই জনকে আটক করে হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। গতকাল রোববার রাতে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি এনামুল হক সাকিবকে গ্রেপ্তার করে। 

এর আগে, গত ৬ মে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড, সহিংসতা ও মামলা বাণিজ্যের অভিযোগ এনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন হবিগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক সাকিবকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলন হবিগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক আরিফ তালুকদার ও সদস্যসচিব মাহদীর যৌথ নির্দেশে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ তথ্য জেলা মুখপাত্র রাশেদা বেগম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আটকের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হবিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ,কে,এম সাহাবুদ্দিন শাহীন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত এনামুল হক সাকিব বর্তমানে থানায় রয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মাদ্রাসা তালাবদ্ধ করে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে মাদ্রাসা তালাবদ্ধ রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থীর পথসভায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে সীমান্তবর্তী কলাগাঁও জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয়ভাবে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বাদাঘাট বাজারে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী পথসভা ও গণসংযোগ ছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান। তিনি জামায়াতের জেলা আমিরও। এই সভা সফল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা আসেন। বেলা ১১টার দিকে কলাগাঁও জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশস্থলে আসেন। 

অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসার চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে, মাদ্রাসা তালাবদ্ধ রেখে সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী বাদাঘাট বাজারের জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী পথসভায় অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে, এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের কেউ কেউ প্রতিবাদ জানান। ওইদিন মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির বাংলা, অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান এবং দশম শ্রেণির আরবি পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল বলে দাবি করেন প্রতিবাদকারীরা।

কলাগাঁও গ্রামের আজহার ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা ছিল। মাদ্রাসার সুপার শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা না নিয়ে নির্বাচনী পথসভায় অংশ নেন। এ সময় মাদ্রাসার দরজা তালাবদ্ধ রেখে যান তিনি। পরে কয়েকজন পরীক্ষার্থী তাদের বিষয়টি জানালে, গ্রামবাসীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা মাদ্রাসায় গিয়ে এর সত্যতা পান।

জঙ্গলবাড়ীর মোর্শেদ আলম সাদ্দাম বলেন, এই মাদ্রাসার একজন শিক্ষক জামায়াতের স্থানীয় আমির। তিনি হয়তোবা তাঁর দলের কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে গেছেন। 
মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার মাদ্রাসায় কোনো বিষয়ে পরীক্ষা ছিল না। মাদ্রাসা বন্ধ ছিল কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান তিনি। 

এ বিষয়ে জেলা জামায়াতের জেলা আমির ও সুনামগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী তোফায়েল আহমদ খান বললেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। বাদাঘাটের সমাবেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের হাজারো কর্মী-সমর্থক, সুধী ও শুভাকাঙ্ক্ষী এসেছেন। তারা নিজ নিজ উদ্যোগে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। কে কীভাবে এসেছেন বিষয়টি জানেন না তিনি।  

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বললেন, মাদ্রাসা বোর্ড আলাদা। বিষয়টি দেখভাল করে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি। এখানে তাদের কিছুই বলার থাকে না।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মোহাম্মদ আবুল হাসেম বললেন, খোঁজ নিয়ে যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নপ্রত্যাশী সাতজন। তারা আলাদা-আলাদা সভা সমাবেশ ও শোডাউন করছেন। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমিরকে এ আসনে তাঁর সংগঠন ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি দলের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সালাহউদ্দিন আহমদকে তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে: ইসলামী আন্দোলন
  • যারা পিআর পদ্ধতির কথা বলে, তাদের ভোট নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাইছে চরের দল: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • দেশে এখন রাজনৈতিক দলের অভাব নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে বৃষ্টি, সড়কে ভোগান্তি
  • মাদ্রাসায় তালা দিয়ে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় শিক্ষকরা
  • মসজিদের মোতাওয়াল্লি নিয়োগ নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৫০
  • মাদ্রাসা তালাবদ্ধ করে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
  • দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি