বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শনে বের হয়েছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। ক্ষতবিক্ষত রাস্তা দেখতে দেখতে যান নগরের ফরিদারপাড়া এলাকায়। সড়ক সংস্কারে প্রকৌশলীদের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। এ সময় পাশের একটি ভবন থেকে পলিথিনভর্তি ময়লা ফেলা হয় নালায়।

এতে ক্ষুব্ধ মেয়র শাহাদাত ফোন করেন স্থানীয় হাউজিং সোসাইটির এক নেতাকে। জানিয়ে দেন, নালায় এভাবে ময়লা ফেললে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করে শাস্তি দেওয়া হবে।

আজ বুধবার বেলা দুইটায় চট্টগ্রাম নগরের ফরিদারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মেয়র নগরের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, ড্রেনেজ কাঠামো পরিদর্শন করেন।

এরপর সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, বাসার ময়লা নালা-খালে ফেললে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে জরিমানা করা হবে। এভাবে ময়লা ফেলার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে এবং পানি জমে সেখানে মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। সেখানে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া, এডিস মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে।

বৃষ্টির সময় নগরের কিছু কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ময়লা ফেলা এবং ড্রেনেজ লাইনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি। নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি নাগরিকদেরও দায়িত্ব আছে। তাঁদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।

বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংস্কারকাজ অব্যাহত থাকবে বলে জানান মেয়র শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে যেসব রাস্তা খানাখন্দ হয়ে গেছে, তা সংস্কার করা হবে। আগামী তিন মাস যাতে সড়ক না কাটে, সে জন্য ওয়াসাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মেয়র শাহাদাত হোসেন ফরিদারপাড়া ছাড়া নগরের চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, নালা-নর্দমা ও খাল পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী রিফাতুল করিম, শাফকাত আমিন প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মা নদীর ভাঙনের ঝুঁকিতে দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাট

পদ্মা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ভাঙন বেড়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাট ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এ ছাড়া ঘাটসংলগ্ন বহু স্থাপনা রয়েছে ভাঙনের ঝুঁকিতে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, দৌলতদিয়ার সাতটি ফেরিঘাটের মধ্যে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট সচল। ৬ নম্বর ঘাট থাকলেও এখনো সচল করা যায়নি। এ ছাড়া কয়েক বছর আগে ১, ২ ও ৫ নম্বর ঘাট নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার তিনটি ফেরিঘাটসহ মধ্যবর্তী এলাকার ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাটে কিছু বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র বলছে, দৌলতদিয়া ঘাটের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় বর্তমানে সচল সব ঘাটই (৩, ৪ ও ৭ নম্বর) ভাঙনের ঝুঁকিতে। এর মধ্যে ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট বেশি ঝুঁকিতে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘ভাঙন দেখা দেওয়ায় ফেরিঘাট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিআইডব্লিউটিএকে ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি। তিনটি ঘাট সচল থাকলেও ভাঙন আরও বৃদ্ধি পেলে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নেপাল চন্দ্র দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ফেরিঘাটের দুই কিলোমিটারজুড়ে ভাঙন দেখা দেয়। ৪ ও ৭ নম্বর ঘাট বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণকাজের অংশ হিসেবে তিন দিনে প্রায় সাত শ বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। তবে ফেরিঘাটের মধ্যবর্তী এলাকায় বস্তা ফেলা হয়নি। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ মিললে বাকি কাজ করা যাবে।

ঘাটসংলগ্ন এলাকায় ভাঙনের ঝুঁকি

ঘাটসংলগ্ন বাহিরচর ছাত্তার মেম্বার পাড়া, মজিদ মাতুব্বর পাড়া, শাহাদত মেম্বার পাড়া, বাজার, মসজিদ, স্কুলসহ একাধিক স্থাপনা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অনেকে স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন। ছাত্তার মেম্বার পাড়ার চারটি পরিবার তাদের ঘর সরিয়ে নিয়েছে।

ছাত্তার মেম্বার পাড়ার নদীর পাড়ের শেষ বসতি আলতাফ মোল্লার পরিবারের। বসতভিটা রক্ষা করতে না পেরে দুটি ঘর অন্যত্র সরিয়ে ফেলছে পরিবারটি। আলতাফ মোল্লার স্ত্রী সূর্য বেগম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘ছয়বার ভাঙনে ভিটামাটি হারায়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এইবার ভাঙলে সাতবার হইবে। এখন কোথায় দাঁড়াব বলতে পারছি না। ঘর, টিনের চাল, জিনিসপত্র ভেঙে পাশে রাখছি। এখন কোথাও জায়গা হলে চলে যাব।’

স্থানীয় আলতাফ মোল্লা, শাহাদৎ প্রামাণিক ও ময়ান সরদার বলেন, ‘কয়েক দিনে যে হারে ভাঙছে, এভাবে ভাঙন চললে ফেরিঘাট, বাহিরচর ছাত্তার মেম্বার পাড়া, মজিদ মাতুব্বর পাড়া, শাহাদত মেম্বার পাড়াসহ অনেক স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ