এই শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই : ডিসি
Published: 30th, July 2025 GMT
‘গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ভ্যান হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সদর উপজেলার আয়োজনে আনুষ্ঠানিক ভাবে দুইটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ভ্যান হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
ভ্যান হস্তান্তর শেষে জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমাদের ‘গ্রীন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ’ কর্মসূচির একটি স্লোগান ছিল ‘নারায়ণগঞ্জ হবে সবুজে ঘেরা, প্র্যাচের ড্যান্ডি হবে বিশ্বসেরা।’ আমরা যদি এই জেলাকে সেরা করতে চাই, তাহলে সব দিক থেকেই সেরা করতে হবে।
আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দিক থেকেও সেরা করতে হবে। পানির ব্যবস্থাপনাও ভালো করতে হবে। রাস্তার যানজট কমাতে হবে। আমরা যদি সত্যিই সব দিক থেকে সেরা করতে চাই, সেই কাজগুলো করতেই হবে। এরই একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে আপনারা দেখেছেন, আমরা দুটি ভ্যান দিয়ে শুরু করছি।
উপজেলা পরিষদের বাইরে যে ময়লাগুলো জমবে, সেগুলো এই ভ্যান দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে রাখা হবে। এটি আমাদের একটি পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ। আমরা দেখব এটি কতটুকু কার্যকরভাবে কাজ করে। সফল হলে পরে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। পরবর্তীতে আমরা এটি সারাজেলা ব্যাপী সম্প্রসারিত করবো।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বর্তমানে দেবযানী কর, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম সেলিম।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে এই শহরকে একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এই শহরের উপরে অনেক চাপ। এত ছোট শহর, কিন্তু এত বেশি জনবসতিপূর্ণ।
আমরা যদি এখনই এই শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখার কার্যক্রম গ্রহণ না করতে পারি, যদি পানি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন না করি, যদি বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা না করি, তাহলে এই শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে।
সেই চিন্তাভাবনা থেকেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘গ্রীন অ্যান্ড ক্লিন’ কর্মসূচির আওতায় পরীক্ষামূলকভাবে আজ থেকেই সিটি কর্পোরেশনের বাইরের এলাকাগুলোতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরকে পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত ও বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করতে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এই কার্যক্রম শুধু পরিচ্ছন্নতাই নিশ্চিত করবে না, বরং পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত নগর গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এতে নাগরিকদের জীবনমান উন্নত হবে এবং নারায়ণগঞ্জ হবে একটি আদর্শ পরিচ্ছন্ন শহর।
ভ্যানগুলো সম্পর্কে সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ এই শহর বর জ য
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।